নওগাঁর ধামুইরহাটে নিম্নমানের ইট দিয়ে চলছে রাস্তা নির্মাণে কাজ
আব্দুল মান্নান: নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলার বেলঘরিয়া এলাকায় একটি রাস্তা নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট। ধামুইরহাট এলজিইডি অফিসের সহায়তায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজে অনিয়ম করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
জানাগেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ধামুইরহাট উপজেলায় রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প দরপত্র আহ্বান করে স্থানীয় সরকার উপ-প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। বর্তমানে একটি প্যাকেজের আওতায় ৪টি রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে এ উপজেলায়। রাস্তার নির্মান কাজের দরপত্র প্রকল্পের কাজটি পায় জেলার সুনামধন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইথেন এন্টার প্রাইজ। এই প্যাকেজের আওতায় উপজেলার বেলঘরিয়া হতে চকিরাম পর্যন্ত ২১৪২ মিটার রাস্তার কাজটি ইথেন এন্টার প্রাইজের হয়ে কাজ করছেন নওগাঁর অপর এক ঠিকাদার সাদেকুল ইসলাম। এই রাস্তাটি নির্মান কাজের ব্যায় ধরা হয়েছে ১৩ লাখ টাকা।
এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানাগেছে, বহুল প্রতিক্ষিত এই রাস্তাটি পাকাকরন ছিল এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি গ্রামের লোকজন প্রতিনিয়ত চলাচল করে এ রাস্তা দিয়ে। রাস্তাটি পাকাকরন না হওয়াতে একসময় চরম ভোগান্তি পোহাতে হত এলাকাবাসীর। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নি¤œমানের ইট বালি দিয়ে শুরু হয় এ রাস্তাটি পাকা করনের কাজ। রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়ম হওয়াতে হতাশা এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এলাকাবাসীর মধ্যে। রাস্তা নির্মাণে এই নিম্নমানের ইট, বালি ও খোঁয়া ব্যবহার না করতে ঠিকাদার ও তার লোকজনকে একাধিকবার মৌখিকভাবে বাঁধা দেয় এলাকাবাসী। কিন্তু ঠিকাদার সাদেকুল ইসলাম তাতে কোনো সাড়া না দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ অব্যাহত রাখেন। এলজিইডির লোকজনকে জানালেও তারা নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে জানাগেছে। বেলঘরিয়া গ্রামের এনামুল হক বলেন, এ রাস্তাটি পাকাকরন হওয়া দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা ছিল আমাদের। কিন্তু রাস্তার কাজ দেখে আমরা চরম হতাশায় ভুগছি রাস্তাটি নির্মানে যে সমস্ত ইট ব্যবহার করা হচ্ছে সব ইট দুই নাম্বার তিন নাম্বার।
বেলঘরিয়া (কয়রাপাড়া) গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, এই এলাকার ৩০-৩৫টি গ্রামের প্রায় দেড় দুই লাখ মানুষের নিয়মিত চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ রাস্তাটি। আমরা মৌখিক ভাবে ঠিকাদারের লোকজন ও তার ম্যানেজারকে বলেছি খারাপ ইট, বালি ব্যাবহার না করতে কিন্তু তারা আমাদের কোন কথা কর্নপাত না করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ৬মাস যেতে না যেতেই আবার রাস্তাটি নষ্ট হয়ে যাবে।
খোয়া ভাঙ্গার কাজে নিয়োজি এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, এখানে যে সব ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে তার বেশির ভাগ ইট ডাইশ করা দুই নাম্বার ইট, তবে এক নাম্বার ইটও রয়েছে।
ঠিকাদার সাদেকুল ইসলামের ম্যানেজার নাসিব হোসেন বলেন, ভাই এই দুনিয়ায় কেও এক নম্বর না একটা কাজ করতে গেলে একটু এদিক সেদিক হবেই। তবে নিয়মিত এলজিইডির লোকজন আমাদের কাজ পরিদর্শন করছে যদি আমরা একেবারে খারাপ কাজ করতাম তাহলে তো ইঞ্জিনিয়াররা বাধা দিত সঠিক নিয়মেই আমরা কাজ করছি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার সাদেকুল ইসলাম এর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন যা বলার আমাকে বলেন তার সাথে দেখা করা বা ফোন নং দেয়া যাবেনা।
ধামুইরহাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আলী হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তাটি নির্মাণ কাজে যে সবি দুই নাম্বার বা তিন নাম্বার ইট ব্যাবহার করা হচ্ছে তা না । কিছু কিছু খারাপ ইট আসছিল বিষয়টি আমার কানে আসার সাথে সাথে আমরা সে ইট গুলো সরিয়ে দিয়েছি।