সন্দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
মিলাদ মুদাছ্ছির সন্দ্বীপ : কিছু কিছু কেন্দ্র ছাড়া প্রায় সব কেন্দ্রেই সকাল থেকে ব্যাপক ভোটার উপস্থতির মধ্য দিয়ে শুরু হয় ভোট। কিছু কিছু কেন্দ্রে বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কথা জানা যায়। সরেজমিনে মুছাপুর ৯নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি। পুরুষ ভোটারের চেয়ে মহিলা ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটারের ভিড় বাড়তে থাকে। মুছাপুর ৯নং ওয়ার্ডের পুরুষ বুথ গুলোর প্রধান প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ছিল উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা জনাব আজিম উদ্দিন। পুরুষ বুথ গুলোর পুলিং এজেন্টদের সাথে কথা বলে জানা যায় পুরুষ বুথ গুলোতে সুষ্ঠ ভোট হচ্ছে। অন্য দিকে মহিলা বুথ গুলোর প্রধান প্রিসাইডিং ছিলেন উত্তর সন্দ্বীপ কলেজের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু প্রার্থী নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কোন প্রার্থীর এজেন্ট কার্ড ছাড়াই কয়েকজন যুবক সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার পাশে দাড়িয়ে রয়েছে।
হারামিয়া ৭নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় সুন্দর উৎসবমুখর নির্বাচন হচ্ছে। মেম্বার প্রার্থী আহসানের ইসলামের নির্বাচন সমন্বয়ক জাল ভোট হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললে ও তার এজেন্টরা কোন জাল ভোট সনাক্ত করতে পারেনি।
হারামিয়া ৫ নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় ভোটার উপস্থিতি একদম কম। হারামিয়া ৫ নং ওয়ার্ডের ভিতরে গেলে মেম্বার প্রার্থী মুহাম্মদ করিম (সাবেক মেম্বার) এর পুলিং এজেন্ট জানায় সকালে ভয় ভীতি দেখিয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রায় এক ঘন্টা তাদেরকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়নি।
হারামিয়া ৮ নং ওয়ার্ডে বেলা ১২ টা বাজে গিয়ে দেখা যায় ভোটারেরা শৃংখলা বজায় রেখে ভোট দিচ্ছে।
হারামিয়া ৮ নং ওয়ার্ডের প্রিসাইডং কর্মকর্তা ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা জনাব মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি সুন্দর ও সুস্থ নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
হারামিয়া ৪ নং ওয়ার্ডে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজক দেখা গেলেও ভিতরের পরিস্থতি অত্যন্ত ঢিলে ঢালা ছিল।
বেলা ১২.৩০টা পর্যন্ত হারামিয়া ৬ নং ওয়ার্ডে সুষ্ঠ নির্বাচনের চিত্র দেখা গেলে ও তার পরে জোরপূর্বক জালভোট গ্রহণের কথা জানা যায়।
উল্লেখ্য, হারামিয়া ৬ নং ওয়ার্ডে ২ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ছিল আপন ২ভাই।
অন্যন্য ইউনিয়নের বেশ কিছু ওয়ার্ডে বিচ্ছিন্নভাবে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সহ বিভিন্ন অনাকাংখিত ঘটনার কথা জানা যায়। বিশেষ করে আমান উল্লাহ ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী তার প্রতদ্বন্দ্বী সত্বন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেছেন।
বেলা ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল আসতে শুরু করে। ফলাফল: গাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোঃ আবু হেনা নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৪৪২ ভোট। নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী মফিজুর রহমান পেয়েছেন ৮৮০ ভোট। রহমতপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ ফরিদুল মাওলা (কিশোর) পেয়েছেন ২৬৩১ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান বেলাল পেয়েছেন ৬৭৫ ভোট।
আজিমপুর ইউনিয়ন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ রকি আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৬৬৯ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামীলীগের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল আজিজ পেয়েছেন ৪০২ ভোট। মাকসুদূর রহমান পেয়েছেন চশমা প্রতীকে ২৮৭ ভোট। মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ মিজানুর রহমান পেয়েছেন ৮৪০৯ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসমাঈল হোসেন মনি পেয়েছেন ৩৪৪ ভোট।
মুছাপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের আওয়ামীলীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল খায়ের (নাদিম) সাড়ে চার হাজার ভোটের ব্যবধানে নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ ইদ্রিস আলমকে পরাজিত করেন বলে জানান আবুল খায়ের নাদিমের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আরিফুল ইসলাম আরজু। হরিশপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের আবুল কাশেম মোল্যা নৌকা প্রতীকে ২০২৮ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহিম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৩৭ ভোট।
আমানউল্যা ইউনিয়ন থেকে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল ইসলাম আনারস প্রতীকে ১৮৪০ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মাহবুবুল আলম নওশাদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩২৭ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান শাহাদাত চৌধুরী পেয়েছেন ২১৫ ভোট। সন্তোষপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন(জাফর) নৌকা প্রতীকে জয় লাভ করেছেন। তিনি পেয়েছেন ৩৯৫৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফজলুল করিম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৮৩৪ ভোট। এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বী নির্বাচিত হয়েছেন বাউরিয়া ইউনিয়ন থেকে সাবেক এমপি দ্বীপবন্ধু আলহাজ্ব মুস্তাফিজুর রহমান এর ছেলে ও বর্তমান সাংসদ মাহফুজুর রহমান মিতার ছোট ভাই মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, সারিকাইত ইউনিয়ন থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম (পনির), মগধরা ইউনিয়ন থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম আনোয়ার হোসেন ও হারামিয়া ইউনিয়ন থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন।