ইমাম বিমান, রিপোর্ট: দেশের
বৃহত্তম সাংবাদিক বান্ধব সংগঠন " বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম "
বিএমএসএফ এর পক্ষ থেকে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় কর্মরত ও নারী
সাংবাদিক কেন্দ্রের নির্বাহী সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে
সচিবালয়ে আটক করে অবরুদ্ধ রেখে মারধর, লাঞ্ছিত,আহত ও হেনস্থা করা এবং প্রায়
সাড়ে ৫ঘন্টা আটকে রাখার পরে অনুসন্ধানী এই নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা
দিয়ে থানা পুলিশে সোপর্দ করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ।
এ
বিষয়ে " বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম " বিএমএসএফ সভাপতি শহীদুল ইসলাম
পাইলট ও সাধারন সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর এক বিবৃতিতে বলেন, দেশের চতুর্থ
স্তম্ভে থেকেও গনমাধ্যম কর্মী তথা সাংবাদিক আজও অবহেলিত থাকায় প্রতিদিনই
দেশের কোথাও না কোথাও বিভিন্ন ভাবে দেশের সাংবাদিকরা নির্যাতন, হামলা ও
মামলার শিকার হচ্ছে। আর সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নির্যাতন, হামলা ও মামলার
কারনেই দেশের সাংবাদিকরা আজ বিভিন্ন স্থানে সত্য প্রকাশ করায় রাজনৈতিক,
সরকারি দপ্তর সহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক প্রতিষ্ঠান
মামলা, হামলার শিকার হয়, কখনও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অবিলম্বে সাংবাদিক
রোজিনাকে মুক্তির দাবি করে অবরুদ্ধ, হেনস্থা ও শ্লীলতাহানী ঘটনার সাথে
জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে সরকারের কাছে দাবি করা হয়েছে, একই সাথে ঐ নথির
সাথে সম্পৃক্ত প্রকল্পটির দূর্ণীতি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের
দাবি জানিয়েছে সাংবাদিক বান্ধব সংগঠন বিএএসএফ নেতৃবৃন্দ।
আজ
একজন নারী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে কোন আইনে, কেন অফিসের মধ্যে আটকে রাখা
হলো ? আটকাবস্থায় অসুস্থ্য হয়ে পড়লেও কেন তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়নি ? আমরা
যতদূর জেনেছি রোজিনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি সমুদ্র ডাকাতিসম দূর্ণীতির
তথ্যের খবর জানতে সেখানে গিয়েছিলেন। তাহলে কি দূর্ণীতির সাথে জড়িতরা সেখানে
তাকে হয়তোবা সাগর-রুনির মত হত্যাযঞ্জের মিশন হাতে নিতে চেয়েছিল ?
অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম ইতিপূর্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে
বিশেষ অবদান যারা রেখেছেন তাদেরকে সরকারের দেয়া সোনার ক্রেস্ট তৈরী করতে
গিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের বড় ধরনের দূর্ণীতি- অনিয়ম ফাঁস করে বিপুল
আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। ঐ প্রতিবেদনটিতে রোজিনা আন্তর্জাতিক ভাবেও
পুরুস্কৃত হয়েছিলেন। মূলত: তিনি সচিবালয় বিটের সাংবাদিকতা করতে গিয়ে অফিসে
এবং সচিবালয়ে বিস্তর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেন।
প্রসংঙ্গত
গত ১৭ মে সোমবার দুপুরে প্রথম আলো পত্রিকায় কর্মরত নারী সাংবাদিক রোজিনা
ইসলাম পেশাগত কাজে সচিবালয়ে যান। সেখানে স্বাস্থ্য সচিবের অফিসের কর্মকর্তা
কর্মচারীরা তাকে আটকে রাখেন। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৫ ঘন্টা আটকে রেখে তাকে
হেনস্থা করা পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ তাকে
শাহবাগ থানায় নিয়ে গেছেন। তার বিরুদ্ধে গোপনে সরকারী নথির ছবি করার অভিযোগ
তোলা হয়েছে। অভিযোগর ভিত্তিতে আজ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আদালতে হাজির করে
রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত তা না-মঞ্জুর করেন কারাগারে পাঠান।
কী
কারনে তাকে আটকে রাখা হয়েছে ? সে ব্যাপারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি
ফরিদা ইয়াসমিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তার ব্যক্তিগত আইডিতে ঘটনার
দিন দিবাগত রাত আনুমানিক ৮টার দিকে দেয়া তথ্য হুবহু তুলে ধরা হলো, ''প্রথম
আলোর রিপোর্টার রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে আটকে রেখে
হেনস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও
তথ্যমন্ত্রীর এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের সংগে কথা বলেছি।
তারা বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। যতটুকু জেনেছি রোজিনা অসুস্থ হয়ে
পড়েছে কিন্তু এখনও আটকে রাখা হয়েছে, হাসপাতালে নিতে দিচ্ছে না। আমি তাকে
দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি। নতুবা উদ্ভুত
পরিস্থিতির জন্য দায় দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে।