নওগাঁয় অপহরণের নাটক সাজিয়ে পিতার নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা
সালমান ফার্সী (সজল) নওগাঁ : নওগাঁয় মিথ্যা অপহরনের নাটক সাজিয়ে পিতার নিকট থেকে দু’লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করার ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপহৃত পুত্রসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহষ্পতিবার (১৩ মে) দুপুরে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল মান্নান মিয়া তাঁর অফিসের মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে এ তথ্য দিয়েছেন।
মামলার সূত্র ধরে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বদলগাছি উপজেলার গোয়ালভিটা গ্রামের জনৈক মোঃ সিদ্দিক রহমানের বড় ছেলে রাসেল রানা গত ৯ মে রবিবার সকাল ১০টায় বেতর উত্তোলনের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় এবং আর ফিরে আনেসন না। ১১ মে পর্যন্ত তাঁর কোন খোঁজ না পেয়ে অবশেষে বদলগাছি থানায় একটি সাধারন ডায়েরী লিপিবদ্ধ করেন তার পিতা মোঃ সিদ্দিক রহমান যার নম্বর ৪১৪। এরই মধ্যে উক্ত রাসেল রানার মোবাইল ফোন থেকে তার ছোট ভাইয়ের মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে জানানো হয় বিকাশের মাধ্যমে দুই লক্ষ টাকা না পাঠালে তাকে মেরে ফেলা হবে। এ ভাবে টাকা চেয়ে বার বার মোবাইল করতে থাকে। পরবর্তীতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে বদলগাছি এবং জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যপক অভিযান এবং তল্লাশী শুরু করে। এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৩ মে রাত প্রায় ১টায় অপহৃত রাসেল রানাকে বদলগাছি উপজেলার ঐতিহাসিক পাহাড়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছন থেকে উদ্ধার করা হয়। তারপর তাকে নিয়ে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে জয়পুরহাট জেলা সদর থেকে ঘটনার মুল হোতা একই উপজেলার রনাহার গ্রামের সাইফুল ইসলামের পুত্র ফয়সাল আহম্মেদ ফাহিমকে আটক করা হয়।
আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অপহরন নাটকের মুল তথ্য বেরিয়ে আসে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে এটি অপহরনের একটি সাজানো নাটক। কথিত অপহৃত রাসেল রানা মাদকাসক্ত এবং একজন চিহ্নিত জুয়ারী। এসব অপকর্মের ফলে বিপুল পরিমানে ঋনগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এসব ঋন পরিশোধের কোন উপায় ছিলনা তার। ফলে পাওনাদারদের নিকট অপদস্থ হতে থাকে। তাই বাধ্য হয়ে পিতার নিকট থেকে মুক্তিপণ হিসেবে ২ লক্ষ টাকা আদায়ের জন্য তার বন্ধু রামপুর গ্রামের নাজমুল হোসেনে বাড়িতে অন্য বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করে এ ব্যপারে একটি পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তথাকথিত অপহৃত রাসেল রানা ৯ মে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের কথা বলে বেরিয়ে যায় আর ফিরে আসে না। স্বেচ্ছায় অন্তরালে চলে গিয়ে তার বন্ধুদের দিয়ে অপহরণের দায়ে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে মোবাইল ফোনে।
উক্ত রাসেল রানার পিতা কর্ত্তৃক দায়েরকৃত এজাহারটি পরবর্তীতে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়।পুলিশ সুপার জানিয়েছেন অন্য আসামীদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।