এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদে দীর্ঘ ৮বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন
সালমান ফার্সী (সজল): নওগাঁর আত্রাই ও রাণীনগর এই দুই উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত নওগাঁ-৬ আসন। বিগত চারদলীয় সরকারের শাসনামলে প্রথমে সূচনা ঘটে সর্বহারা নামক সন্ত্রাসী বাহিনীর। বেশ কয়েক বছর ধরে চলে এই সন্ত্রাসী বাহিনীর অবর্ননীয় নারকীয় তান্ডব। প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে মানুষ জবাই করা ছিলো এই বাহিনীর প্রধান হাতিয়ার।
এই বাহিনীর সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মম ভাবে জবাই করা হয় বর্তমান সাংসদ আনোয়ার হোসেন হেলালের ছোট ভাই ও তৎকালীন সময়ে রাণীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলামকে। এছাড়াও সর্বহারাদের হাতে দুই উপজেলার অনেক মানুষ জবাই হয়। এরপর সর্বহারাদের নিধন করতে চারদলীয় সরকার জেএমবি নামক বাংলা ভাইয়ের আরেক সন্ত্রাসী দলের আর্বিভাব ঘটান। সেই সময় এই অঞ্চলের মানুষরা সন্ধ্যার পর বাড়ির বাহিরে বের হতে পারতেন না। অনেক স্ত্রী তার স্বামীকে হারিয়েছে, অনেক ছেলে-মেয়ে তাদের বাবাকে হারিয়েছে, অনেক মা-বাবা তাদের সন্তানকে হারিয়েছে। সেই সময় থেকে সারা দেশসহ বিশ্বের কাছে এই আসনটি রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে পরিচিতি পায়।
পরবর্তি সময়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদে বইতে শুরু করে শান্তির সুবাতাস। মানুষের মৌলিক অধিকার পূরন করা থেকে শুরু করে অবহেলিত এই জনপদে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করে। বর্তমানে এই অঞ্চলের মানুষ গ্রামে শহরের সকল সুবিধা পাচ্ছেন। গত বছরের ১৭অক্টোবরের উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষ শান্তির সুবাতাসের নতুন বাহক হিসেবে নির্বাচন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান থেকে উঠে আসা রাণীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: আনোয়ার হোসেন হেলালকে।
দীর্ঘ প্রায় ৮বছর পর ২৫ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। এই সম্মেলনকে ঘিরে অনেকেই তদবির,লবিং ও গ্রুপিং শুরু করছেন। ডেলিগেড ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন বিভিন্ন পদ প্রত্যাশীরা। বিভিন্ন ভাবে প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে। তবে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দাবী একটি গ্রহনযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন কমিটি। যে কমিটি আগামীতে পথচলায় সাহস, শক্তি ও অনুপ্রেরণা যোগাবে এবং তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করবেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আবুল হাসনাত খাঁন হাসান বলেন সর্বশেষ ২০১৪সালে উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এরপর আর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। আগামী ২৫ফেব্রুয়ারী রাণীনগর উপজেলা ও ২৮ফেব্রুয়ারী আত্রাই উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমার রক্তে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মিশে আছে। যার কারণে শত বাধা উপেক্ষা করে আমি ছাত্রলীগ থেকে যুবলীগ এরপর গত সম্মেলনে দলের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হই।
আমি আশাবাদি এই সম্মেলনের মাধ্যমে রক্তাক্ত জনপদের নতুন শান্তির বাহক ও দলের নীতিনির্ধারকরা একটি বলিষ্ঠ ও কমর্ঠ্য কমিটি উপহার দিবেন। বিগত সময়ে অনেকেই পদ পাওয়ার যোগ্যতা রাখলেও তাদেরকে দলের মাঝে ঠাঁই দেওয়া হয়নি। তাই দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ হিসেবে যারা কাজ করে আসছেন তাদের যথাযোগ্য মূল্যায়ন করলে আগামীতে দলের বিভিন্ন কর্মকান্ডে আরো গতিশীলতা ফিরে আসবে বলে আমি মনে করি।
তিনি আরো বলেন রাজনীতি করতে এসে আনোয়ার হোসেন হেলাল অনেক অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে এই অঞ্চলের অভিভাবক। এই অঞ্চলের সকল কিছুই তার জানা আছে। তার মাধ্যমে অবশ্যই দলের অবহেলিত, নির্যাতিত, বঞ্চিত ও যোগ্য প্রার্থীরা মূলায়িত হবেন। আমি আশা রাখবো দলের সবাই একটি স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন ও নির্ভরযোগ্য উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করতে সাংসদকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন এবং দলের উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারক ব্যক্তিদের ও আনোয়ার হোসেন হেলালের উপহার দেওয়া কমিটিকে সমর্থন করে আগামীর দিনগুলোতে দলের হয়ে কাজ করবেন।