মোঃ
সাইফুল ইসলাম, বাগমারাঃ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার
সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে এবার ননদ ও ভাবির ভোটযুদ্ধে ভাবিই বিজয়ী
হয়েছেন। পৌরসভার সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডের (১, ২ ও ৩) থেকে নির্বাচিত হলেন
ভাবি রোনা বিবি। এ নিয়ে টানা দুবার তিনি নির্বাচিত হলেন। তবে ননদ নারগিস
বিবি মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে পারেননি।
গতকাল
শনিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফায় পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফলে বেসরকারিভাবে
সংরক্ষিত ১ নম্বর আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন রোনা বিবি। তিনি অটোরিকশা
প্রতীকে পেয়েছেন ৯৬৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পলিনা খাতুন পেয়েছেন
৯৬৪ ভোট। আর ননদ নারগিস বিবি জবা ফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৫৯ ভোট।
স্থানীয়
লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কসবা গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে নারগিস
বিবির সঙ্গে আবদুল হামিদ নামের এক ব্যক্তির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে
জামাই-মেয়ে আবুল কালামের বাড়িতেই থাকেন। ২০১০ সালের নির্বাচনে কসবা গ্রামের
আবদুল হামিদের স্ত্রী নারগিস বিবি সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর
নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওই বছর তাঁর ভাবি প্রার্থী ছিলেন না।
২০১৫
সালের নির্বাচনে নারগিস বিবির সঙ্গে অন্য তিন প্রার্থীর সঙ্গে
প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন বড় ভাই মাহাবুর রহমানের স্ত্রী রোনা বিবি। ওই
বছরের নির্বাচনে ভাবির কাছে হেরে যান ননদ নারগিস বিবি। ভাবি নির্বাচিত হয়ে
দীর্ঘ পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তবে হাল ছাড়েননি ননদও। তিনি পাঁচ বছর
এলাকার লোকজনের পাশে থেকেছেন বিভিন্নভাবে। নিজের মাঠ গুছিয়ে নেওয়ার
পাশাপাশি অতীতের ভুল শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এবারের
নির্বাচনেও সংরক্ষিত ওয়ার্ড (১, ২ ও ৩) থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন ননদ-ভাবি।
তাঁরাসহ ওই ওয়ার্ডে মোট পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে সব আলোচনার
শীর্ষে ছিলেন ননদ-ভাবি। ননদ জবা ফুল ও ভাবি অটোরিকশা প্রতীকে নির্বাচন
করেন। প্রতীক নিয়ে তাঁরা দুজনেই প্রচারণা চালিয়েছেন সমানতালে। সকাল হলেই
একই বাড়ি থেকে দুই প্রার্থী প্রচারণায় নেমে পড়েন। তাঁদের সঙ্গে প্রচারণায়
যোগ দেন কর্মী, সমর্থক ও দুজনের স্বামী। ওয়ার্ডের আলাদা আলাদা এলাকায়
প্রচারণা শেষে একই বাড়ি ফেরেন। কখনো মুখোমুখি হলেও তাঁদের মধ্যে কোনো বিরোধ
দেখা দেয়নি। পরস্পরের বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচারে লিপ্ত হননি তাঁরা। এভাবে
তাঁদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন বলে প্রার্থী ও ভোটারদের বক্তব্য।
রোনা
বিবির স্বামী মাহাবুর রহমান বলেন, বোন তাঁর মতো নির্বাচন করছেন এবং তিনি
স্ত্রীকে নিয়ে নিজের মতো কাজ করেছেন। ভোটাররা দ্বিতীয়বারের মতো তাঁর
স্ত্রীকে বেছে নিয়েছেন।
জয়ী রোনা বিবি বলেন, কারও প্রতি তাঁর কোনো রাগ নেই। তিনি আগের মতোই লোকজনের পাশে থেকে সেবা করতে চান।