প্রতিনিধি, নওগাঁ: হাজার
বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করলো নওগাঁ সদর
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার। সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক
উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক হাজিরা সিস্টেম (ডিজিটাল হাজিরা
মেশিন) চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়। এরই
ধারাবাহিকতায় নওগাঁ সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ডিজিটাল হাজিরা
মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়।
সম্প্রতি
সদর উপজেলার ১৩৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৩০টি বিদ্যালয়ে
সফলতার সঙ্গে স্থাপন করা হয়েছে ডিজিটাল শিক্ষক/কমর্চারী মনিটরিং ডিভাইস।
শিক্ষার গুণগত মানে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসার ক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকা
অপরিসীম। সকল শিক্ষকদের হাজিরাসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা
কিভাবে তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করেন তা অনলাইনে এখন থেকে এক
ক্লিকেই মনিটরিং করা যাবে।
মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই কার্যক্রম
নওগাঁ সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে এটি একটি অনন্য দৃষ্টান্তর
স্থাপন করেছে। সার্ভার বেকআপ সম্বলিত সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ওয়াইফাই,
ডিজিটাল হাজিরা মেশিন, হোমোজেনাস সফটওয়্যার, ইনস্টলেশন এবং মেইনটেনেন্স
সবগুলো বিষয় মাথায় রেখে প্যাকেজটি সাজানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে করে
আরেক ধাপ এগিয়ে গেল নওগাঁ সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনার
কার্যক্রম।
ডিজিটাল
এই পদ্ধতিতে প্রবেশ করে কোন বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক কখন স্কুলে প্রবেশ
করেন, কখন স্কুল থেকে বেরিয়ে যান এবং তার দৈনিক, সাপ্তাহিক পাক্ষিক কিংবা
মাসিক কর্মতৎপরতার রিভিউ দেখা সম্ভব। সফটওয়্যার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এবং
লোকাল ইনস্টলেশন প্রোভাইডার তাসনুভা কম্পিউটারের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে
যে, বাজার যাচাই-বাছাই করে বেস্ট সফটওয়্যার এবং বেস্ট প্যাকেজ নির্বাচন করা
হয়েছে যাতে এটি সাসটেইনেবল হয়।
অভিভাবকসহ
শিক্ষানুরাগীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এই ডিজিটাল হাজিরা ডিভাইস স্থাপনে
সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
শিক্ষকদের বেতনভাতা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু এক শ্রেণীর চিহ্নিত কতিপয়
শিক্ষকদের পাঠদানে ফাঁকি দেওয়াসহ সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে না যাওয়া এবং ছুটির
আগে বাড়িতে ফেরাসহ নানা অনিয়ম যেন রেওয়াজে পরিণত করেছেন। ডিজিটাল হাজিরা
শিক্ষক ও কর্মচারীদের যথাসময় স্কুলে উপস্থিত হওয়া এবং স্কুল ছুটির পরে
বাড়িতে ফেরার নিশ্চয়তা বিধানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।
প্রজন্মের
আলো পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান রিজভী বলেন, ডিজিটাল হাজিরা
পদ্ধতি, নতুন সময়সূচি প্রবর্তন ছাড়াও ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে
বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতা
অভিযান শুরু করা হয়েছে। এছাড়া সুপেয় পানি, সেনিটেশন, বিদ্যালয়ের
বহিরাঙ্গনের পরিচ্ছনতার দিকেও সকলের নজর দেয়া দরকার।
সদর
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আপাতত সকল প্রাথমিক
বিদ্যালয়ে এই ডিজিটাল ডিভাইসগুলো ইন্সটলেশন করা শেষ হয়েছে। এটি পুরোপুরি
চালু হলে নওগাঁ সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা আরো জোরদার হবে এবং
শিক্ষকরা তাদের বেস্ট আউটপুট দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো মানসম্মত ও
কার্যকর করে তুলবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত
বার্ষিকী উপলক্ষে চলছে ক্ষণ গননা। আর এই মহান ব্যক্তির জন্মশত বার্ষিকীতে
ডিজিটাল এই পদ্ধতিতে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রবেশ করাতে পেরে আমি
আনন্দিত ও গর্বিত। আশা রাখি প্রতিটি বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষরা এই সিস্টেম ও
প্রদান করা যন্ত্রটিকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করবেন আর আগামী প্রজন্মের মাঝে
ডিজিটাল যুগের বার্তাকে সঠিক ভাবে পৌছে দিবেন।
এভাবেই
পর্যায়ক্রমিক ভাবে দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল হাজিরাসহ
অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষা বিভাগের সকলক্ষেত্রে
শৃঙ্খলা ফিরে আসুক ও গুণগত শিক্ষা প্রবর্তনে ডিজিটাল হয়ে উঠুক দেশের সকল
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনটিই সকলের প্রত্যাশা ও কামনা বর্তমান শিক্ষানুরাগী
সরকারের কাছে।#