মহাদেবপুরে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর মহাদেবপুরে হত্যা চেষ্টা মামলা থেকে রেহাই পেতে ও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মো. আলী হোসেন (২৩) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সকালে ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতিবাদে ও সঠিক তদন্তের দাবিতে উপজেলা সদরের একটি রেস্টুরেন্টে ওই যুবকের পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আলী হোসেনের বাবা। হত্যা চেষ্টা মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা শহরের বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় গত বছরের ২৪ মার্চ উপজেলা সদরের স্কুলপাড়া গ্রামের মেহেদী হাসান সোনার ছেলে আলী হোসেনকে হত্যার উদ্দেশ্যে উপজেলার ভালাইন গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে এনামুল হক, উপজেলা সদরের দুলালপাড়া মহল্লার ওয়াহেদ আলীর ছেলে ওয়াদুদ হোসেন দিপু ও তার ভাই রবিউল ইসলাম রিপু পূর্ব শক্রতার জের ধরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আলী হোসেনকে মাথা, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এসময় গুরুত্বর আহতাবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তার গলায় ২২টি সেলাই ও মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়। এ ঘটনায় গত বছরের ২ এপ্রিল আলী হোসেনের পিতা বাদী হয়ে মহাদেবপুর থানায় ৩ জনকে আসামী করে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। সংবাদ সম্মেলনে আলী হোসেনের পিতা মেহেদী হাসান সোনা অভিযোগ করে বলেন, “তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে এনামুল হক (৪৮), ওয়াদুদ হোসেন দিপু (২২) ও তার ভাই রবিউল ইসলাম রিপু (১৯) দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করায় বিবাদী পক্ষ আপোষ-মিমাংসার চেষ্টা চালায়। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তারা একাধিকবার হুমকিও দেয়। এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের ১ জুন আমি বাদী হয়ে থানায় সাধারন ডায়েরী করি। পরবর্তীতে মামলা তুলে না নেয়ায় ও সাধারন ডায়েরী করায় ওয়াদুদ হোসেন দিপু ও রবিউল ইসলাম রিপুর মা দেলোয়ারা বেগম আসামীদের বাঁচাতে এবং আমাদেরকে ঘায়েল করতেই গত বছরের ১৭ জুলায় আদালতে একটি মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়ের করেন। হত্যা চেষ্টা মামলা থেকে ছেলেদের রক্ষা করতেই দেলোয়ারা বেগম আমার ছেলেকে ধর্ষণ মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে। আদালতের নির্দেশে তদন্ত সাপেক্ষে মহাদেবপুর থানা পুলিশ কোন সত্যতা না পওয়ায় ওই ধর্ষণ মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। এতে দেলোয়ারা বেগম নারাজী দিলে আদালত বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন।”এ মামলা সুষ্ঠু সদন্ত ও হত্যা চেষ্টা মামলার সঠিক বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেন আলী হোসেনের পরিবার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আলী হোসেনের মা শাহানাজ পারভীন, ভাই শাহিনুর ইসলাম। ধর্ষণ মামলার বাদীর সাথে এ ব্যাপারে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি কিছু বলতে রাজী হননি। এ বিষয়ে হত্যা চেষ্টা ও ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন বলেন, ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্ট ও বিশ^স্ত সোর্স নিয়োগের মাধ্যমে ওই ধর্ষণ মামলার বিষয়ে গোপনে এবং প্রকাশ্যে তদন্ত করে সত্যতা না পাওয়ায় আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। বাদীনির দুই পুত্রসহ আত্মীয় মো. এনামুল হক আলী হোসেনকে ধারালো ছোরা দ্বারা মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করলে বিবাদী আলী হোসেনর পিতা বাদী হয়ে অত্র মামলার বাদীনির দুই পুত্র ও আত্মীয় মো. এনামুল হকসহ অজ্ঞাত ৩ থেকে ৪ জনকে আসামী করে গত বছরের ২ এপ্রিল মহাদেবপুর থানায় মামলা (০৪) দায়ের করেন। উক্ত হত্যা চেষ্টা মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় দেলোয়ারা বেগম তার দু’ছেলে ও আত্মীয়কে বাঁচাতে এবং মামলার ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার নিমিত্তে আলী হোসেনর বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।#