Latest Post
92 অন্যান্য 51 অর্থনীতি 24 আইন ও আদালত 76 আন্তর্জাতিক 588 এক ঝলক 3 কক্সবাজার 1 কবিতা 22 কিশোরগঞ্জ 4 কুড়িগ্রাম 6 কুমিল্লা 1 কুষ্টিয়া 3 কৃষি 107 কৃষি ও প্রকৃতি 10 ক্রিকেট 1 খাগড়াছড়ি 73 খেলাধুলা 45 গণমাধ্যম 12 গাইবান্ধা 1 গাজীপুর 17 চট্টগ্রাম 5 চাঁদপুর 5 চাঁপাইনবাবগঞ্জ 2 চুয়াডাঙ্গা 14 জয়পুরহাট 1 জাতীয় 3 জামালপুর 1 জোকস 6 ঝনিাইদহ 246 ঝালকাঠি 12 ঝিনাইদহ 4 টাঙ্গাইল 44 ঠাকুরগাঁও 39 ঢাকা 1 থী 3 দিনাজপুর 4784 দেশজুড়ে 42 ধর্ম 3414 নওগাঁ 14 নাটোর 2 নারায়ণগঞ্জ 1 নিহত ২ 1 নীলফামারীর 2 নেত্রকোনা 1 নোয়াখালী 3 পঞ্চগড় 4 পিরোজপু 2 প্রকৃতি 2782 প্রথম পাতা 23 প্রবাস 1 ফরিদপুর 17 ফিচার 8 ফুটবল 1 ফেনী 94 বগুড়া 2 বলিউড 58 বাগমারা 82 বিএমএসএফ 31 বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 53 বিনোদন 51 বেনাপোল 2 ব্রাক্ষণবাড়িয়া 1 ব্রাহ্মণবাড়িয়া 51 ভিডিও 18 ভোলা 8 ভ্রমণ 59 ময়মুনসিংহ 1 মাগুরা 1 মাদারীপু 2 মাদারীপুর 1 মানিকগঞ্জ 1 মেহেরপুর 495 যশোর 5 রংপুর 103 রাজনীতি 3 রাজবাড়ী 95 রাজশাহী 3 লক্ষ্মীপুর 24 লাইফস্টাইল 2 লালমনিরহা 41 শিক্ষা 1 শ্রীপুর 891 সকল জেলা 2 সাতক্ষীরা 9 সিরাজগঞ্জ 3 সিলেট 63 সুনামগঞ্জ 31 স্বাস্থ্য 4 হবিগঞ্জ 1 হলিউড 10 bmsf


 নওগাঁর সাপাহারে রিক কর্তৃক অতিদরিদ্রদের মাঝে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অতিদরিদ্র সদস্যের সন্তানদের উন্নত কারিগরী প্রশিক্ষন শেষে কর্মক্ষেত্রে সফলতা অর্জনকারী ও সেরা কিশোরী ক্লাবের সদস্যদের মাঝে বিনামুল্যে বই সহ প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরন করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় নওগাঁ-১ এরিয়া কার্যালয়ে রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক) এর উদ্যোগে ও ইউপিপি- উজ্জীবিত কম্পোনেন্টের আওতায় উপজেলার ১০ জন বৈদ্যুতিক হাউজ ওয়ারিং কাজে প্রশিক্ষিতদেরকে সকল প্রকার যন্ত্রপাতি,১১জন সেলাই মেশিন প্রশিক্ষিত অসহায় নারীকে পুঁজি হিসেবে কাপড় ও ৬টি কিশোরী ক্লাবে বিভিন্ন প্রকার বই, সেল্ফ, কেরাম বোর্ড সহ খেলনা সামগ্রী বিতরণ করেন প্রধান অতিথি নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান। রিক-নওগাঁ জোনের জোনাল ম্যানেজার মুহাম্মদ আব্দুল আলীম এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহজাহান হোসেন, পোরশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত) নাজমুল হামিদ রেজা,এসিল্যান্ড সহরাব হোসেন, নওগাঁ-১ এর এরিয়া ম্যানেজার মুঞ্জুরুল করিম রিকের শাখা ব্যবস্থাপক রানা আহম্মেদ, পিও স্যোসাল মিজানুর রহমান,শহিদুল ইসলাম,ইউসুফ ্আলী প্রমূখ। 

নওগাঁয় জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধের লক্ষ্যে ইমাম ও শিক্ষকদের সাথে জেলা পুলিশের মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধের লক্ষ্যে ইমাম ও শিক্ষকদের সাথে নওগাঁ জেলা পুলিশের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ লাইনস ড্রিল সেডে পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন পিপিএম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশিদুল হক ও ফারজানা হোসেন, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল হাই, ডিআইও ওয়ান মোসলেম উদ্দীন, জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি নবির উদ্দীন, ইসলামিক ফাউন্ডেশানের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তাফা, মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গন শিক্ষা কার্যক্রমের জেলা সভাপতি ক্বারী মাওলানা মো. রমজান আলী, জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল ওয়াহেদ আল কাদরী, পুৃলিশ লাইন্স জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো. আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা সমাজ থেকে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সভায় জেলার ইমাম মোয়াজ্জিম, শিক্ষার্থী এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সাংবাদিকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

নওগাঁর সাপাহারে জবই বিল খননকালে মানব কঙ্কাল উদ্ধার

সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবই বিলের দোহারা খাড়ী খনন কালে জবই বিলের চ্যালাঘাটি নামক স্থান হতে মানব দেহের মাথার খুলি বুকের হাড়সহ প্রায় ১২ খন্ড হাড় গোড় উদ্ধার করা হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খনন কাজ চলার সময় মাটির সাথে এ হাড় গোড়গুলি উঠে আসলে লোকজন তা উদ্ধার করে।
 
স্থানীয় লোকজন সুত্রে জানাগেছে, পানিউন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এ্যাসকেভেটর মেশিন দ্বারা জবই বিলের ওই অংশে খনন কাজ পরিচালনা করার সময় মাটির ৬-৭ ফিট নিচ থেকে এই মাথার খুলিসহ হাড় গোড়গুলো মেশিনের ফলায় ওঠে আসে। সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত উৎসুক জনতা হাড় গোড়গুলি একনজর দেখতে বিল এলাকায় ভিড় জমায়। বহু পুরনো এই হাড় গোড়গুলো দেখে অনেক বয়স্ক মানুষ মন্তব্য করে বলেছেন যে, ১৯৭১সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সাপাহার উপজেলার জবই গ্রামটি পাকবাহিনীর দোসর রাজাকার আলবদরদের গ্রাম ছিল, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ওই গ্রামটিকে দ্বিতীয় পাকিস্তান হিসেবে লোকজন চিনত। সে সময় হয়ত রাজাকার ও পাকবাহিনীরা নিরহ কোন বাঙালী মানুষকে ধরে হত্যা করে লাশ ওই এলাকায় পুতে রাখতে পারে। আবার অনেকের মতে হাড় গোড়গুলি অতীতে কোন নৌকা ডুবির শিকার মানুষেরও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। হাড় গোড়গুলি বের হওয়া বিষয়ে খনন কাজের দেখা শুনার দায়িত্বে থাকা বাবু নামের একজনের সাথে কথা হলে প্রথমে তিনি বিষয়টি এড়িয়েযান পরে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন যে, বিষয়টি আমি গত রবিবারে শুনেছি এবং সোমবার দেখে তা  আমার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

এব্যাপারে সাপাহার  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ্ জানান, আমিও বিষয়টি লোক মুখে শুনেছি এবং বহুকাল পূর্বে বিলের ওই অংশে হিন্দু সম্প্রদায়ের শশ্মান ঘাট ছিল যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে হাড় গোড়গুলো শশ্মান ঘাটের হতে পারে। তবে কয়েকদিন যাবত মানুষের কঙ্কাল বা হাড়গোড় বিল এলাকায় পড়ে থাকলেও কর্তৃপক্ষই এখন পর্যন্ত সে হাড়গোড়গুলো সেখান থেকে উদ্ধার করেনি বিষয়টি নিয়ে উপজেলার অভিজ্ঞ মহলে সমালোচনার সৃষ্ঠি হয়েছে।

নওগাঁর সাপাহার সদর ইউনিয়ন পরিষদে বাজেট ঘোষনা অনুষ্ঠিত

প্রতিনিধি, সাপাহার: নওগাঁর সাপাহার সদর ইউনিয়ন পরিষদের ২০১৯-২০ অর্থ বছরের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষনা করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে ইউপি চেয়ারম্যান আকবর আলী’র সভাপতিত্বে বাজেট পেশ করেন ইউপি সচিব মহিদুল ইসলাম লিপু।
এতে আয় ধরা হয়েছে (রাজস্ব) ৫০ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯৯২, (উন্নয়ন) আয় ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। ব্যয় (রাজস্ব)  ধরা হয়েছে ৪০ লক্ষ ৭ হাজার ৬৯২ টাকা এবং (উন্নয়ন) ব্যায় ৩ কোটি ১১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। উদ্বৃত্ত ৭ লক্ষ ৫৪ হাজার ৮০৩ টাকা।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাল আলম সহ সকল ইউপি সদস্য ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ।

কয়েকদিনের তীব্র ভ্যাপসা গরমে নওগাঁয় নানা রোগে আক্রান্ত শিশু-বয়স্করা : হাসপাতালে রোগীর ঢল

আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ: গত কয়েকদিনের তীব্র ভ্যাপসা গরমের কারনে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়া শিশু ও বয়স্ক রোগীদের ঢল নেমেছে। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে কর্তব্যরত নার্স ও আয়ারা। বিশেষ করে ডায়েরিয়া, আমাশয় ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্তর সংখ্যা বেশি। আর চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন; শিশুদের নিরাপদ রাখা, বিশুদ্ধ টাটকা, বেশি বেশি পানি ও তরল খাবার খাওয়ানোর।
কয়েকদিনের তীব্র ভ্যাপসা গরমে নওগাঁয় নানা রোগে আক্রান্ত শিশু-বয়স্করা : হাসপাতালে রোগীর ঢল

দীর্ঘ লাইন। এটি নওগাঁ সদর হাসপাতালের চিত্র। গত কয়েকদিন ধরে চলছে তীব্র ভ্যাপসা গরম। হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্করা নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে ভীড় করছে হাসপাতালে। ডায়েরিয়া আমাশয় ও পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্তর সংখ্যায় বেশি। এদিকে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় কর্তব্যরতদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বেড সংকটে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। যেন পা ফেলার জায়গা নেই। এছাড়া অনেক বয়স্ক রোগী ভর্তি হয়েছে শ্বাসকষ্টো আর পেটের ব্যাথা বেড়ে গেছে গরমে। তাই নওগাঁ সদর হাসপাতালের গেটে দেখা যায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর লম্বা লাইন। আবহাওয়াজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের দিকে আসছে রোগীরা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারনে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ কারনে হাসপাতালে বেডের সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হচ্ছেন মেঝেতে থাকতে। হঠাৎই গরমের কারনে শিশুদের পাতলা পায়খানা হয়। এরপর বমি। অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতালে এসেছেন তারা।
কয়েকদিনের তীব্র ভ্যাপসা গরমে নওগাঁয় নানা রোগে আক্রান্ত শিশু-বয়স্করা : হাসপাতালে রোগীর ঢল

হাসপাতালের সেবিকা মোছা: নাছরিন আক্তার বলেন হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় আমরা হিমশিম খাচ্ছি। সময়ের বেশি সময় এখন হাসপাতালে সেবা দিতে হচ্ছে। তবে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি হাসপাতালে আসা রোগীদের সেবা দেবার। আবহাওয়া একটু কমলেই রোগীদের চাপ অনেকটা কমে যাবে।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা: মুনির আলী আকন্দ বলেন প্রতিদিনই বাড়ছে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের সংখ্যা। রোগীর চাপে হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। তবে আমরা রোগীদের এই গরমে করনীয় সম্পর্কে সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান করছি। আমরা দিনরাত রোগীদের সেবা প্রদান করছি। এরপরও আমরা আমাদের সাধ্য মতো রোগীদের সেবা প্রদানের চেষ্টা করছি।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক), ডা: রওশন আরা খানম বলেন কয়েকদিনের তীব্র ভ্যাপসা গরমে রোগীর চাপ বেড়েছে দ্বিগুন। তবে কোন সমস্যা নাই। এই গরমে শিশুদের সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, নিরাপদে রাখা এবং তরল খাবারসহ বেশি বেশি পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
 
২৫০ শয্যার নওগাঁ সদর হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন দেড় হাজারের বেশি রোগী আসে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে। তাই আরো বেশি জনবল বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

আলোড়ন সৃষ্টি করেছে নওগাঁয় ৯বছরের শিশুর পানি পড়া, অভিনব কায়দায় আদায় করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা

আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ: নওগাঁয় নয় বছরের এক শিশু কবিরাজি পানি পড়া চিকিৎসা দিচ্ছে। আর এ পানি পড়া খেয়ে নিঃসন্তান দম্পতিরা অন্তঃসত্ত্বা হচ্ছেন। এমন গুজব সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে একটি সন্তান জন্মদানের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে শত শত দম্পতিরা ছুটে আসছেন সেই শিশুর কাছে।
আলোড়ন সৃষ্টি করেছে নওগাঁয় ৯বছরের শিশুর পানি পড়া, অভিনব কায়দায় আদায় করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা

ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করছেন পানি পড়া নেয়ার জন্য। আর এমন ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটী ইউনিয়নের সরিষপুর গ্রামের হাজী পাড়ায়। কবিরাজের নাম দিপু। বাবার নাম জানা যায়নি। তবে মায়ের নাম দেলেয়ারা বেগম। আর এ পানি পড়াকে কেন্দ্র করে সেখানে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমান দোকান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নওগাঁ শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার পশ্চিমে সরিষপুর গ্রাম। গ্রামে প্রবেশ পথে রাস্তার দু’ধারে মাইক্রোবাস, অটোচার্জার ও ভ্যান গাড়ি সারি সারি করে রাখা আছে। রাস্তা থেকে দিপু কবিরাজের বাড়ি প্রায় এক কিলোমিটার দুরে। রাস্তা থেকে কবিরাজের বাড়ি পর্যন্ত মানুষ লাইন ধরে যাওয়া-আসা করেছেন। হাজী পাড়ায় গিয়ে দেখা যায় একটি আম বাগানের মধ্যে টিনের বেড়া দিয়ে তৈরী একটি ঘর ও বারান্দা। আর এ বারান্দায় বসে পানি পড়া দিচ্ছে শিশু কবিরাজ দিপু। কবিরাজের সামনে একটি দান বাক্স মসজিদের জন্য এবং ঘরের বাহিরে আরেকটি দানবাক্স মন্দিরের জন্য রাখা আছে। যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা বাক্সে নিজেদের ইচ্ছেমত দান করছেন।

আর এ ঘরের আশপাশে অন্তত দেড় হাজার মহিলা প্রত্যেকের হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে লাইন হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ব্যাগের মধ্যে আছে একটি করে পানির বোতল। মহিলাদের সাথে এসেছেন আত্মীয়স্বজন ও স্বামী। আর আম বাগানের মধ্যেই চটি (মাদুর) পেতেই অনেকে শুয়ে-বসে আছেন। আবার অনেকেই রান্নার জন্য খাসি, মুরগি জবাই করছেন। আবার অনেকে সেই রান্না জোগান দিতে পিয়াজ-রসুন বাছাই করছেন।

দিপু কবিরাজের কাছে পানি পড়া নেবার জন্য রাত থেকে এ হাজী পাড়ার আম বাগানে অনেকে অবস্থান নিয়েছেন। তার বাড়ির দরজা থেকে শুরু হয়েছে লাইন। ফজরের নামাজ পর শুরু হয় পানি পড়া দেয়া। আর এ দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে অনেক মহিলা ক্লান্ত হয়ে লাইনের পাশে বসে পড়েছেন। কবিরাজের দরজায় আলম নামে এক যুবক পাহারা দিচ্ছেন। মহিলারা একে একে কবিরাজের কাছে যাচ্ছেন আর ২/৩ মিনিট পর পানি পড়া নিয়ে বেরিয়ে আসছেন। আলমের মতো এখানে ১৫/২০ জন যুবক বাহির থেকে আসা মানুষদের নিয়ন্ত্রন করছেন। আর পানি পড়া দিতে গিয়ে কিছু সময় পর পর তার আসন ছেড়ে বাহিরে গিয়ে খেলাধুলা ও দোকান থেকে জিনিস কিনে খেতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, দুই সন্তান নিয়ে অন্যের জমিতে টিনের কুঠির ঘর তৈরি করে বসবাস করে আছেন দেলেয়ারা বেগম। স্বামী তাদের ছেড়ে অনেক আগে চলে গেছেন। বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন। এখন আর কাজ করতে হয় না। গ্রামের সমসের আলী হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে কবিরাজ দিপু। তবে কুরআন পড়া এখনো শুরু হয়নি। দিপুর বয়স ৯ বছর হলেও ৬ বছর বয়স থেকে পানি পড়া দিয়ে আসছে। প্রতিবেশী জহুরুল ইসলামের বউয়ের দীর্ঘদিন থেকে কোন বাচ্চা হয়নি। তিন বছর আগে তার বউকে পানি পড়া দেয়া হলে গর্ভধারন করে এবং বাচ্চাটি নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে আবারও একটি মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়। গত তিন দিন বছর থেকে এ কবিরাজি চিকিৎসা দিয়ে আসছে। তখন তেমন ভীড় ছিলনা। এ বিষয়ে তেমন কোন প্রচার-প্রচারনা করা হয়নি। যাদের বাচ্চা হয়েছে এবং উপকৃত হয়েছেন তারাই মূলত এ প্রচার প্রচারনা করেছেন।

তবে গত তিনমাস থেকে কবিরাজ দিপুর কাছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া ও জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত নারী-পুরুষ আসছেন পানি পড়া নিতে। পড়া পানি একনজ নারী দিনে দুবার খেতে হয় এবং একজন পুরুষ পড়া মধু দিনে দুবার খেতে হয়। এছাড়া পড়া তেল একজন পুরুষ দিন দুবার শরীরে মাখতে হয়। একজন নারীকে ৩/৫ সপ্তাহ চিকিৎসা নিতে হয়। এরমধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়। অন্তঃসত্ত্বা হলে ডাক্তার দিয়ে কোন চিকিৎসা বা আল্ট্রাসোনো করানো যাবে না বলেও নিষেধ করা হয়। প্রতি শুক্রবার করে পানি পড়া দেয়া হয়ে থাকে। কবিরাজি চিকিৎসা নিতে খরচ হয় তাবিজ ১৩০ টাকা এবং কবিরাজি ফি ১০ টাকা। যাদের মনোবাসনা পূরন হয় তারা কবিরাজের বাড়িতে এসে খাসি জবাই করে উপস্থিত সবার মাঝে বিতরণ করেন। গত শুক্রবার ২৮টি খাসি জবাই করা হয়েছে বলেও জানা যায়।

নওগাঁ সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের গত ২৩ বছরে তাদের দাম্পত্য জীবনে কোন সন্তান নাই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কবিরাজের বাড়িতে এসে স্ত্রী শাহিদা বেগম লাইনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন ডাক্তার ও কবিরাজের কাছে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চিকিৎসা নিয়েও কোন কাজ হয়নি। কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সংবাদ পেয়ে এখানে এসেছি পানি পড়া নিতে। শুক্রবার বেলা ১০ টা পর্যন্ত তার স্ত্রী সামনে আরো ৩০ জন মহিলা দাঁড়িয়ে ছিল।

রাজশাহীর পুটিয়া থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল শিক্ষিকা বলেন, বৃহস্পতিবার তার মাকে কবিরাজের বাড়িতে পাঠিছেন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তিনি কবিরাজের বাড়িতে এসে প্রায় দেড়শ জনের পিছনে জায়গা পেয়েছেন। দাম্পত্য জীবনে গত ১০ বছর হলো কোন সন্তান হয়নি। পানি পড়ার বিষয়টি জানতে পেরে মনের বিশ্বাস নিয়ে এসেছেন।

জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর গ্রামের ইমন হোসেন বলেন, সংসার জীবনে ৭ বছরে কোন সন্তান হয়নি। এখানে ৬ সপ্তাহ পানি পড়া খেয়ে তার স্ত্রী সন্তানসম্ভাবা হয়েছে। তাই পরিবার সহ এখানে এসে খাসি জবাই করে মানত পূরন করলাম।

কবিরাজ দিপুর মা দেলেয়ারা বেগম বলেন, দিপু যখন পেটে তখন থেকেই অনেক কিছু উপলদ্ধি করতাম। জন্মের আড়াই মাস বয়সে এক রাতে বাচ্চা সাপের রুপ ধারন করে। এরপর অনেক ডাক্তার ও কবিরাজ দেখানো হয়। কবিরাজ বাচ্চার গায়ে হাত দিলেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। আমাদের অসহায়ত্ব দেখেই নাকী বাচ্চার উপর জ্বীনের আছর পড়েছে। তখন কবিরাজরাই বলেন বাচ্চাটিকে আমাদের কিছুই করার নাই। যখন বাচ্চা শরীরে জ্বীনের ভর করে তখন কোন নিঃসন্তান দম্পতি থাকলে তাকে বাচ্চা জন্ম ধারনের ক্ষমতা দেয়া হবে বলেও জানানো হয়। এছাড়া কেউ যদি কাউকে কুফরি করে সেটাও ভাল করা যাবে। এরপর ৬ বছর বয়স থেকে পানি পড়া দিয়ে আসছে। রোগী দেখতে দেখতে বাচ্চা যখন অস্বস্থি বোধ করে তখন একটু দেরী করে বাহির থেকে ঘুরে এসে আবার দেখা শুরু করে। বৃহস্পতিবার রাতে ছেলের গায়ে যখন ভর করে (জ্বীন হাজির হয়) কুরআনের সবকিছু বলতে পারে।

দুবলহাটী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, মানুষ কতটুকু উপকৃত হচ্ছে তা জানি না। তবে এটা ভূয়া ও মানুষের সাথে প্রত্যারনা। মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দুরদুরান্ত থেকে লোকজন আসছে। এটা নিয়ে এলাকায় একটা পক্ষ (গ্রুপিং) তৈরী হয়েছে। যে কোন সময় সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে। প্রশাসনকে এ বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই বলেন, ছদ্দবেশে ঘটনাস্থলে (বৃহস্পতিবার) পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ রকম চিকিৎসা বন্ধ করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা: মুমিনুল হক বলেন,     মেডিকেল সাইন্সে বন্ধা কোন নারী পানি পড়া খেয়ে পেটে বাচ্চা আসে এরকম কোন নিয়ম নাই। এছাড়া সাইনটিফিক (বৈজ্ঞানিক) এরকম কোন বিধানও নেই। যেখানে পানি, মধু পড়া এবং তেল পড়া ব্যবহার করলে পেটে বাচ্চা আসে। যদি এরকম কোন ঘটনা হয়ে থাকে আমরা সরজমিনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget