ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) : বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত নওগাঁর অন্যতম খাদ্য ভান্ডার মহাদেবপুরে ৪০ মিনিটের শিলা বৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় কৃষককুল মর্মাহত ও সঙ্কিত হয়ে পরেছেন। কৃষকের গোলায় ধান উঠতে আর মাত্র ২৫ থেকে ৩০ দিন বাঁকি। ধান ক্ষেতের চেহারা দেখে বাংলা নব-বর্ষের আনন্দে কৃষকরা যখন স্বপ্ন দেখছিল হঠাৎ সে মূহুর্তে শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া কৃষকদের রঙিন স্বপ্ন ভেঙ্গে লন্ড ভন্ড করে দিল।
জানা গেছে, শনিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে উপজেলার আকাশে কালো মেঘ জমে এবং বিভিন্ন এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। বিশেষ করে উপজেলার উত্তরগ্রাম, শিবরামপুর, বামনসাতা, কর্ণপুর, ধর্মপুর, বাগডোপসহ বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া ও শিলা বৃষ্টি হয়। এতে বোরো ধান, আম, লিচুসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, ওই শিলা বৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে ২০০ হেক্টর জমির বোরো ধান মাটিতে শুয়ে পরেছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা সামনে আর কয়েকদিন কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ কিংবা অনিষ্টকারী পোকা-মাকড়ের আক্রমন হতে রক্ষা পেলে ভাল ফলন পাওয়া যাবে। যা অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারো উপজেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যত্র প্রচুর খাদ্য শস্য পাঠানো যাবে। কিন্তু শেষ মূহুর্তে এসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে কিছুটা হলেও কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার উত্তরগ্রাম গ্রামের কৃষক মাজহারুল ইসলাম ও আব্দুল জব্বার জানান, তাদের উত্তরগ্রাম মাঠে প্রায় তিন একর জমির ধান গাছ মাটিতে শুয়ে পরেছে। বামনসাতা গ্রামের ছায়দুল ও শিবরামপুর গ্রামের আবু বক্কর জানান, সবেমাত্র ধানের শীষ বের হতে শুরু হওয়া ধান গাছগুলো শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে ক্ষেতে পানির মধ্যে শুয়ে পরেছে। এতে তারা ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম প্রামাণিক জানান, কৃষকরা ধান ক্ষেতের পানি বের করে দিতে পারলে তেমন ক্ষতি হবে না। দু’এক দিনের মধ্যে প্রখর রোদ হলে আংশিক ধান গাছ সম্পূর্ণ রুপে দাঁড়িয়ে যাবে। তাছাড়া যেসব ধান গাছের শীষ বের হয়েছে সেগুলো আখ ক্ষেতের মতো গোছা আকারে বেঁধে দিলে তেমন ক্ষতি হবে না।