নওগাঁর আত্রাইয়ে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ): উত্তরাঞ্চলের শষ্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায় চলতি রবিশষ্য মৌসুমে এবার আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার প্রতিটি মাঠ জুড়ে এখন আলু গাছের সবুজ পাতার রঙে মুখরিত ফসলের মাঠ। উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সবুজ রঙের চোখ ধাঁ-ধাঁলো বর্ণীল সমরাহ। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই সবুজ পাতাগুলোকে। এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনো মুগ্ধকর।
এ বছর বন্যা না হওয়ার কারণে রোপা-আমন ধান কাটার সাথে সাথে রবিশষ্যের উপযোগি চাষযোগ্য জমিতে কৃষকরা আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। সরকার পর্যায় থেকে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণসহ রাসায়নিক সার বিনা মূল্যে যথা সময়ে বিতরণ করায় এই উপজেলার কৃষকদের আগাম আলু লাগানো সম্ভব হয়েছে।
ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও।
এ বছর বন্যা না হওয়ার কারণে রোপা-আমন ধান কাটার সাথে সাথে রবিশষ্যের উপযোগি চাষযোগ্য জমিতে কৃষকরা আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। সরকার পর্যায় থেকে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণসহ রাসায়নিক সার বিনা মূল্যে যথা সময়ে বিতরণ করায় এই উপজেলার কৃষকদের আগাম আলু লাগানো সম্ভব হয়েছে।
ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও।
এবারে চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হানা না দেওয়ায় এবং আলু চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় আলুর পাশাপাশি সরিষা, গম ও ভোট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। উপজেলার গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এই আলু যথা সময়ে ঘরে তুলতে পাড়লে এবং বিক্রয় মূল্য ভাল পেলে বন্যার কারণে রোপা-আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষকদের আগ্রাহ বৃদ্ধি পাবে বলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন।
নওগাঁ জেলার খাদ্যশস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত আত্রাই উপজেলার মাঠগুলো এখন কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবিশস্য মৌসুমে এবারে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ২ হাজার ৮ শত হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও এবছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আলু চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে আলু ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার শাহাগোলা, ভোঁপাড়া, মনিয়ারী ও আহসানগঞ্জ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ জানান, আমি এবছর ৫বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। হিমাগারে কিছু বীজ রেখেছিলাম আর বাঁকিটা কিনে জমিতে বপণ করেছি। আলুর গাছে ভালো হওয়ায় মনে হচ্ছে এবার আলুর আশানুরুপ ফলন পাব। দাম ভাল হলে বিগত দিনের বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে পুরোদমে ইরি-বোরো চাষ করতে পারবো।
বজ্রপুর গ্রামের কৃষক মেহেদি হাসান রুবেল জানান, আমি চলতি মৌসুমে প্রায় সাড়ে ৮বিঘা জমিতে লালপাকরী জাতের আলুর আবাদ করেছি। কোন প্রকার দূর্যোগ ও রোগবালাই না থাকায় এবছর আলুর বাম্পার ফলন পাব বলে আমি আশা করছি।
সরেজমিনে উপজেলার ভবানীপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শফি উদ্দিন আহম্মেদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, শুরুতেই আলুর ক্ষেতে নানা ধরনের পোকা-মাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে আমরা কৃষকদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতা দিয়ে আসছি। বর্তমানে আলু ক্ষেতে প্রায় শত ভাগ রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছি।
এবিষয়ে আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, এবারে আত্রাই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি পরিমান আলু চাষ হয়েছে। যথা সময়ে জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে আলুর আবাদ করেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে আত্রাই উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।
শুধু তাই নয় আলু চাষের জমিগুলো উর্বরতা বেশি থাকায় কৃষকরা ইরি-বোরো চাষেও এর সুফল পাবে।