আব্দুর রউফ রিপন, রাণীনগর (নওগাঁ) সংবাদদাতা: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে ৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। এতে করে অভিভাবকরা ওই সব বিদ্যালয়ে পাঠদান চরম ভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে অভিভাবকহীন এই সব বিদ্যালয়গুলো।
প্রধান শিক্ষক না থাকার সুযোগে সহকারি শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতায় বিদ্যালয়গুলোর সঠিক পাঠদান পরিবেশ হারিয়ে গেছে বলে অনেকের অভিযোগ। দীর্ঘদিন যাবত প্রধান শিক্ষক বিহীন উপজেলার কিছু কিছু ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় বছরের পর বছর তাদের ধরে রাখা সুনাম হারাতে বসেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা, উপজেলাতে মোট ১শতটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত ৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে এই সব বিদ্যালগুলোর পাঠদান কার্যক্রম। তবে বিদ্যালয়গুলো প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে পাঠদানে কোন সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, পড়ালেখা শেখার ক্ষেত্রে শিশুদের প্রথম হাতে খড়ি হয় এই সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে। সরকারি এই সব বিদ্যালয়গুলো পড়ালেখা প্রদানের সুনাম অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছে। যার কারণে গ্রাম পর্যায়ের অনেক অভিভাবকরা বর্তমানে তাদের সন্তানদের প্রাইভেট (কেজি) বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি করে দিচ্ছে। তার উপর অধিকাংশ বিদ্যালয়গুলোতে দীর্ঘদিন যাবত প্রধান শিক্ষক নেই। প্রধান শিক্ষক হচ্ছে একটি বিদ্যালয়ের অভিভাবক আর এই অভিভাবক না থাকায় ওই সব স্কুলের প্রশাসনিক কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়েছে এবং সহকারি শিক্ষকরাও সঠিক ভাবে পাঠদান করায় না। অভিভাবক ছাড়া এই সব বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকরা নামকা ওয়াস্তে আসে আর যায় কারণ দেখার কেউ নেই। তাই বিদ্যালয়গুলোর পাঠদানের সুষ্ঠ পরিবেশ ভেঙ্গে পড়েছে চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।
অভিভাবকসহ অনেকেই বলেন উপজেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে মান সম্মত শিক্ষা প্রদান ও সুস্থ্য পাঠদানের পরিবেশ পুনরায় ফিরিয়ে আনতে হলে প্রধান শিক্ষকবিহীন এই সব বিদ্যালয়গুলোতে অতিদ্রæত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করতে হবে। তা নাহলে দিন দিন উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠদান চরম ভাবে ব্যাহত হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতোয়ার রহমান বলেন, আমি অনেক বার প্রধান শিক্ষকবিহীন এই সব বিদ্যালয়গুলোর তালিকা উপর মহলে পাঠিয়েছি। বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক খুব জরুরী। তবে বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক না থাকার কারণে পাঠদানের কোন সমস্যা হবে না। কারণ ওই সব বিদ্যালয়গুলোতে সংশ্লিষ্ট অফিসের কঠোর নজরদারী রয়েছে।