আবু রায়হান রাসেল, নওগাঁ: নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় জোর পূর্বক এক গৃহবধুকে (২৬) ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য সালিসে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। বিচার না পেয়ে অবশেষে নওগাঁ আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী পরিবার। গত ০৭/০৭/১৮ ইং তারিখে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নে হাট পাটাকাঠা গ্রামে এ ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই পরিবারকে গত এক বছর ধরে এক ঘরে রেখেছে গ্রাম প্রধানরা।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাট পাটাকাঠা গ্রামের প্রভাবশালী অমল সরকার (৩২)। একই গ্রামের হতদরিদ্র গৃহবধু দুই সন্তানের জননীকে দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন ভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল অমল সরকার। ফলে প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে গৃহবধুর কোন প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছিল না।
গত ০৭/০৭/১৮ ইং তারিখে ওই গৃহবধু সন্ধ্যায় প্রকৃতির ডাকে বাড়ির বাড়ির বাহিরে সাড়া দিতে গেলে পথরোধ করে অমল সরকার ধর্ষণের চেষ্টা করে। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে অমল পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে গৃহবধুর স্বামী গ্রাম প্রাধনদের বিচার দিলে পরদিন সালিস বসে। সালিসে তার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়। গ্রাম প্রধানরা ওই কাগজে নিজেদের মত লিখে তিনদিন পর গৃহবধুর স্বামীকে একটা কপি দেয়। তাতে লিখা ছিল ওই দিন কোন ধরনের ঘটনা ঘটেনি। যা মিথ্যা এবং অমল সরকারকে ফাঁসানোর চক্রান্ত করা হয়েছিল। ভুক্তভোগীর পরিবার সুবিচার না পেয়ে অমল সরকারকে আসামী করে ১২/০৭/১৮ ইং তারিখে নওগাঁ আদালতে মামলা করেন। গত মঙ্গলবার মহাদেবপুর থানার এসআই আব্দুর রউফ ঘটনাস্থলে গিয়ে মামলাটি তদন্ত করেন।
ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, ১২ বছর আগে একই গ্রামের দুজনের সিদ্ধান্তে বাড়ি থেকে পালিয়ে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করি। এরপর পর থেকে গ্রাম প্রধানরা আমার শ্বশুর পরিবারকে একঘরে করে রেখেছে। শ্বশুরের বাড়িতে আমার নিয়মিত আসা যাওয়া থাকায় আমাকে ১ বছর থেকে একঘরে করেছে গ্রাম প্রধানরা। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি। তবে এ বিষয়ে গ্রাম প্রধানরা কোন কথা বলতে চাননা।
এসআই আব্দুর রউফ বলেন, মামলার তদন্তের কাজ চলমান আছে। কয়েকজনের স্বাক্ষী নেয়া হয়েছে। এখন চুড়ান্ত করে বলা যাবেন।
সফাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল আলম বাচ্চু বলেন, আমার ইউনিয়নে কাউকে একঘরে করে রাখার কোন ঘটনা নাই। আমি বেশ কিছু দিন থেকে ঢাকায় ছিলাম। তাই ধর্ষণের বিষয়টি আমি জানি না।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, একঘরে রাখার বিষয়টি সঠিক না। তারা নিজেরাই তেমন কারো সাথে মিশে না। তবে তাদের বাড়ীর একটি মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে।