নওগাঁর রাণীনগরে আমন ধানে বি’এল’বি রোগের ব্যাপক আক্রমনে দিশেহারা কৃষক \ অনেকে ধান ভেঙ্গে নতুন করে রোপন করছেন
ঔষধ প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না
আবু রায়হান রাসেল, নওগাঁ: নওগাঁর রাণীনগরে রোপা/আমন ধানে ব্যাপকহারে ব্যাকটেরিয়া জনিত পাতা পোড়া রোগের (বিএলবি) আক্রমন দেখা দিয়েছে। এতে করে আক্রান্ত জমির ধান সম্পন্ন হলুদ হয়ে মরে যাচ্ছে। বিভিন্ন কোম্পানির ঔষধ প্রয়োগ করে কোন কাজ না হওয়ায় দিশে হারা হয়ে পরেছেন কৃষকরা। ফলে অনেকে ধান ভেঙ্গে নতুন করে রোপন করছেন।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রাণীনগর উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার ৪শত ৫০ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। জমিতে বিনা সেভেন, ব্রি ৪৯, বি ৫১, ব্রি ৫২ ও আতব ধানসহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান রোপন করা হয়েছে। ধান রোপনের পর থেকেই হঠাৎ করে জমির ধানের পাতা হলুদবর্ণ হতে থাকে। আক্রান্ত জমির ধান খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পুড়ো জমিই আক্রান্ত হয়ে পরছে। কৃষকরা বলছেন, বিভিন্ন কোম্পানীর ঔষধ প্রয়োগ করেও কোন সু-ফল পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই জমির ধান ভেঙ্গে নতুন করে রোপন করছেন। কৃষি কর্মকর্তারা যদিও বলছেন,উপজেলায় এরোগে মাত্র এক থেকে দেড় বিঘা জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে এর চিত্র ভিন্ন। কালীগ্রাম, আবাদপুকুর, বেলগড়িয়া, সিলমাদার, করজগ্রাম, ভেটি, দামুয়া, নারায়ন পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শত শত বিঘা জমির ধান এরোগে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে। কালীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান নিরাজুল ইসলাম বাবলু মন্ডল জানান,তার প্রায় সাড়ে ১০ বিঘা জমি আক্রন্ত হয়েছে। মরু পাড়া গ্রামের হেলালুজ্জামান হেলু মন্ডল জানান, তার প্রায় সাড়ে ৯বিঘা জমির ধান ব্যপাক হারে আক্রান্ত হয়েছে। আমগ্রামের আব্দুর গফুর জানান, প্রায় ৪ বিঘা জমির ধান এমনভাবে আক্রান্ত হয়েছে যে, কোন ঔষধ প্রয়োগ করে ফল হচ্ছে না তাই ধান ভেঙ্গে পূণরায় রোপন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। একই অবস্থার কথা বলেছেন দামুয়া গ্রামের আফছার আলী। তিনি জানান, প্রায় সাড়ে ৩ বিঘা জমির ধান সম্পন্ন আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কোন অবস্থাতেই ঔষধ প্রয়োগ করে এতটুকু ফল পাওয়া যাচ্ছে না। কৃষকরা জানান, ঠিক এভাবে এলাকার শত শত বিঘা জমির ধান আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঔষধ প্রয়োগ করে কোন সু-ফল না পাওয়ায় রোগ আক্রন্ত ধান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছেন তারা ।
এব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম জানান, এলাকার নিচু জমিতে এরোগ দেখা দিয়েছে সামান্য এক/দেড় বিঘা জমিতে এরোগের আক্রমন দেখা দিলেও ঔষধ প্রয়োগ করে ইতি মধ্যেই আরোগ্য লাভ করতে শুরু করেছে। তবে এবিষয়ে কৃষকদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।