মাহমুুদুন নবী বেলাল, নওগাঁ: স্বস্থিকর একটি অবস্থার মধ্যদিয়ে এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছে নওগাঁ শহরবাসী। শহরে ছিলনা অসহনীয় যানজট। চাঁদাবাজি, পকেটমার আর ছিনতাইকারীর শিকার হওয়ার কোন খবরও পাওয়া যায়নি। ১১টি উপজেলা ছাড়াও নওগাঁর পার্শ্ববর্তি জেলা বগুড়া ও জয়পুরহাট থেকেও প্রতিবারের মতো এবারও মানুষের ঢল নেমেছিল নওগাঁয় ঈদের কোনাকাটায়। শহরের অপ্রসস্থ সড়ক গুলিকে করা হয়েছিল একমূখি। সেই সড়ক গুলির যাজট মুক্ত রাখতে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি নওগাঁ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির নিয়োজিত তরুনরাও দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যবসা প্রধান এলাকা গুলোয় চেম্বারের স্থাপিত নিজস্ব সিসিটিভি ক্যামেরাও গুরুত্বপূর্ন ভ‚মিকা পালন করেছে। এছাড়াও ছিল ব্যবসায়িদের নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতেও স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরা। নওগাঁর জেলা প্রশাসক মেঃ মিজানুর রহমান ও নওগাঁর পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেনের নির্দেশনায় ও ব্যক্তিগত তদারকিতে এবং জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্রলস প্ররিশ্রমেই এতোসব সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও শহরবাসী। জেলা প্রশাসনের অব্যাহত ভেজাল বিরোধি অভিযান এবার ইফতারের খাদ্যসামগ্রী ও স্থানীয় ভাবে তৈরী খাদ্যদ্রব্য ছিল ভোজাল মুক্ত। যত্রতত্র বসেনি কোন ইফতার খাদ্য সামগ্রীর দোকান।
সুত্র জানায়, তীব্র গরম উপেক্ষা করে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নেমেছিল ঈদের কেনাকাটায়। ১০ রমজানের পর চাঁদ রাত পর্যন্ত গভীর রাত অবধী চলেছে ঈদের কেনাকাটা। ফলে শহরে ছোট ছোট যানবাহন বিশেষ করে ইজিবাইক, ব্যাটারী চালিত রিক্্রা, সিএনজি চালিত অটো নিয়ন্ত্রন করা ছিল দূরহ ব্যাপার। তবুও সেই কঠিন কাজটিও করেছিল নওগাঁর পুলিশ বিভাগের প্রতিদিনের কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা। শহর অনুপাতে বাজার মহল্লার রাস্তা গুলো অপরিকল্পিত ও অপ্রসস্থ। এছাড়াও তরুনদের তীব্রগতিতে বাইক চালানো বিষয়টিও ছিল কড়াকড়ি ভাবে নিয়ন্ত্রিত। ফলে অনাকাংখিত দুর্ঘটনাও ঘটেনি শহরে। প্রতিবার বিশেষ করে ঈদের দিন নওগাঁ শহর বাইপাস সড়কে তরুন বাইক চালকদের তীব্রগতিতে বাইক চলানোর এক প্রকার প্রতিযোগিতা চলতো। এতে প্রতি বছরই ঈদের দিন গুলোতে দূর্ঘটনায় প্রাণহানীর মর্মান্তিক ঘটনাও ঘটেছে। এবার পুলিশের বিশেষ নজরদারী ছিল এই বিষিয়টিতে। ফলে দূর্ঘটনা এড়ানো গেছে।
নওগাঁ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি ইকবাল শহরিয়ার রাসেল বলেন, নওগাঁ শহরে এবার ঈদ ছিল স্বস্থিদায়ক । জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান ও পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন এর সমন্বিত প্রচেষ্টায় নওগাঁর মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে পবিত্র রমজান মাসে কেনাকাটাসহ পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করতে পেরেছেন। ছিনতাই, চাঁদাবাজী পকেট মারেরমত কোন ঘটনা ঘটেনি। নওগাঁ শহরে যানজটমুক্ত ও তিব্রগতিতে তরুনদের বাইক চালানো নিয়ন্ত্রন একটি বড় সমস্যা বিশেষ করে উৎসবের দিন গুলোকে কেন্দ্র করে। সেটিও এবার সহনীয় পর্যায়ে ছিল। নওগাঁ চেম্বারে পক্ষে যতটুক ুসম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি।
নওগাঁর পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, দুই পবিত্র ঈদ ও দুর্গা পূঁজায় নওগাঁ শহরে প্রচন্ড যনজটের সৃষ্টি হয়। এই বিষয়টি নিযন্ত্রনের জন্য সর্বাত্মক ভাবে চেষ্টা করেছি। এছাড়াও বিশেষ করে তরুণ বাইক চালকদের বেপোরওয়া ভাবেই বাইক চলানোর কারনে বিগত বছর গুলোতে এই উৎসবের দিন গুলোতে দূর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এবার এবিষয়ে চালকেদের সতর্ক করে মাইকিং করা হয়েছে। বিশেষ বিশেষ স্থানে পুলিশ চেকপোষ্ট বসানো হয়েছিল। এবার আমরা এধরনের দূর্ঘটনা এড়াতে পেরেছি। ছিনতাই, চাদাবাজি ও পকেটমারের কোন ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও পথচারী ও বয়স্ক মানুষের কথা বিবেচনা করে লাউড স্পীকারে গান যেনো না বাজানো হয় সে বিষয়ে আগের থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল। আমি আমার প্রচেষ্টা ও পূর্বের অভিজ্ঞতা প্রয়োগে এবং নওগাঁ বাসীর সহযোগিতায় এবার পবিত্র ঈদুল ফেতর শান্তিপূর্ন অবস্থার মধ্যদিয়ে পালন করা সম্ভব হয়েছে।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, পবিত্র ঈদ ও রমজান মাসকে সমনে রেখেই আমরা বিভিন্ন গ্রæপের সাথে মতবিনিময় করেছি। যেনো যে যার দায়িত্বটা সুষ্ঠু ভাবে পালন করতে পরে। এক্ষেত্রে নওগাঁ চেম্বার আব কমার্স এন্ড ই্ডাষ্ট্রি’র ভাল সহযোগিতা পেয়েছি। আমরা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা নিয়েছিলাম। ইমামদের মাধ্যমে প্রতিটি মসজিদে মুসল্লিগনকে বিষয় গুলো অবহিত করার জন্য। ভেজাল বরোধী অভিযান অব্যাহত ছিল। নওগাঁ জেলা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা ও ভ‚মিকা ছিল নি:সন্দেহে উল্লেখযোগ্য। এবার সকলের সহযোগিতায় আমরা পবিত্র ঈদুল ফিতর সুষ্ঠু ও শন্তিপূর্ন ভাবে পালন করতে পেরেছি।