বদলগাছী, নওগাঁ: নওগাঁর বদলগাছীতে একটি খাস পুকুরের লিজ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ শুরু হয়েছে তেলেসমাতি কারবার। জানা যায়, বদলগাছী সদর ইউনিয়নের আখিট্টি মৌজায় ২২২ নং দাগে ৭.৬২ একর আয়তনের একটি খাস জলাশয় বা পুকুর রয়েছে। পুকুরটি নীলা দিঘি নামে পরিচিত। উক্ত পুকুরটি তিন বছর পর পর লিজ প্রদান করেন উপজেলা প্রশাসন।
উক্ত পুকুরটি উপজেলায় অবস্থিত খাস পুকুরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পুকুর। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারনে পুকুরটি নামমাত্র মূল্যে ইজারা প্রদান করা হতো। গত ১৪২২ বঙ্গাব্দ থেকে ১৪২৪ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত বাৎসরিক মাত্র ৭৫ হাজার টাকা মূল্যে লিকুশনের ম্যাধমে আকিট্র আদশ মৎসজিবি সমবায় সমিতি (ভুয়া) ইজারা প্রদান করেছিলেন উপজেলা প্রশাসন। পরে লিকুজেশন কারীরা অনত্র ২০লাখ টাকায় সার্ব লিজদিয়ে টাকা ভাগ বাটারোয়া করে নেয়। এতে সরকার বিষাশ অংকের রাজস্ব আয়থেকে বঞ্চিত হয় মরর্মে স্থানীয় জনগন জানায়।
মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে চলতি ১৪২৫ বঙ্গাব্দে উপজেলার খাস পুকুরগুলো ইজারা প্রদান করা হলেও উক্ত নীলা দিঘিটি অদ্যাবধি ইজারা প্রদান করা হয়নি। সরকারী বিধি মতে ইজারা প্রদান না হলে কোন ব্যক্তি মাছ চাষ করতে পারেবেন না। কিন্তু কোন কিছুকে তোয়াক্কা না করে উপজেলা পরিষদের সুইপার পদে নিয়োগপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ীচালক সৌখিন হোসেন কিছু ব্যক্তিকে প্রলোভন দিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে উক্ত দিঘিতে মাছ ছাড়ার ব্যবস্থা করেছেন। এলাকার বাসিন্দা হুমায়ন, গৌর চন্দ্র, শ্রীরাম চন্দ্র, যোগেন চন্দ্র জানান, গত মঙ্গলবার সকালে ইউএনও স্যারের ড্রাইভার কয়েকজন ছেলেকে নিয়ে এসে দিঘিতে মাছ ছেড়েছেন।
কয়েকজন মৎস্যচাষী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উক্ত জলাশয়টি ১৫/২০ লক্ষ টাকা দিয়ে লিজ দিলে আমরাই নিব। এ বিষয়ে উক্ত সমিতির সভাপতি এজাজ উদ্দীন মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিব করেনি। উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানান অফিসে কথা বললে তারা বলেন, পুকুরটি ভিপি সম্পত্তির। ভিপি সম্পত্তির তদারকি করেন উপজেলা ভূমি অফিস। এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: রওশন আলীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, পুকুরটি খাস জলাশয়। এটা লিজ উপজেলা নির্বাহী অফিস থেকেই হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম আলী বেগ বলেন, আমি সরকারী কাজে ঢাকায় আছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আহসান হাবিব বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত আছি। বিকালে কথা বলেন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা অলি আহমেদ রুমী চৌধুরী বলেন, আমি শুনেছি একটি চক্র পুকুরটি ইজারাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জন্য মূলত আমরাই দায়ী। এতে সরকারের প্রায় ২০ লক্ষ টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হওয়ার আশংকা আমিও করছি।
তাঁর অফিসের সুইপার সৌখিন হোসেন এই চক্রটির সাথে জড়িত আছে এমন প্রশ্নটি করলে তিনি বলেন, যদি সে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো: মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। তবে যেহেতু বললেন, বিষয়টি দেখছি। তাছাড়া লিজ প্রক্রিয়ার সময় তো এখনও শেষ হয়ে যায়নি। এ বিষয়টি নিয়ে বদলগাছী উপজেলাতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।