তৌফিক তাপস : মহাকালের রথে চড়ে আজ শতবর্ষে পদার্পণ করছে বাংলাদেশের অস্তিত্বের স্পন্দন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সেই বিশেষ বৈশিষ্টমণ্ডিত বিদ্যায়তন যা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠিত হয়নি বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাত ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রায় সব আন্দোলনই অঙ্কুরিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী প্রাঙ্গণে। একটি জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী ও জ্ঞান চর্চার প্রধান বাতিঘর হিসেবে এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক পালাবদলের প্রধানতম কেন্দ্র হিসেবে বিগত একশ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলায় রয়েছে বৈচিত্রময় আড়ম্বর। দীর্ঘ এ চলার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়উচ্চ শিক্ষায় যেমন নেতৃত্ব দিয়েছে, তেমনি পথ দেখিয়েছে বাঙালি জাতির ক্রান্তিলগ্নেও। বিগত শতবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, প্রশাসক, রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজচিন্তকদের তৈরি করেছে। এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত না হলে গোটা বাঙালি জাতি উত্তরণের দেখা পেত কি না সেটিই আমাদের জাতীয় ইতিহাসের বড় প্রশ্ন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বাঙালি বুদ্ধিজীবীরা দু’টি অংশে বিভক্ত হয়েছিল। কলকাতাকেন্দ্রিক কিছু বুদ্ধিজীবীর ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সুচনালগ্ন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়তাদের বিরোধীতার মুখে পড়ে। আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার পক্ষে অনেকে অনড় অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন, নানামুখী অবদানে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক ও মূল প্রস্তাবক ছিলেন নবাব সলিমুল্লাহ। ১৯১৫ সালে তার মৃত্যুর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনটিকে শক্ত হাতে এগিয়ে নেন ধনবাড়ির জমিদার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন পর্বে রাজনৈতিক সমর্থন ও পৃষ্টপোষকতা করেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। শুরু থেকেই ইংরেজ সরকার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে এগিয়ে নেয় ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠাপর্বের ইতিহাসে এসব আলোচিত রাজনৈতিক তৎপরতার বাইরে প্রশাসনিক ও বুদ্ধিভিত্তিক তৎপরতাও বেশ কাজে দিয়েছিল। কিন্তু এসব বুদ্ধিভিত্তিক তৎপরতার খবর ইতিহাসের মূল আলোচ্যে খুব বেশি স্থান পায়নি অথবা ইতিহাসে এই পর্বটি উপেক্ষিত থেকেছে। অনেক বুদ্ধিজীবী শিক্ষাবিদ রাজনৈতিক পরিমন্ডলের বাইরে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ছিলেন সরকারের তেমনই একজন শিক্ষাপ্রশাসক যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপটে অসামান্য অবদান রাখেন, কিন্তু রাজনৈতিক ডামাডোলের নীচে তাঁর বুদ্ধিভিত্তিক লড়াইয়ের খবর অনেক দিন আমাদের ইতিহাসে উপেক্ষিত রয়েছে। অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার একবারে সূচনালগ্ন থেকে প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত প্রতিটি পর্বে প্রত্যক্ষ সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা। ১৯১২ সালে নাথান কমিশনের টিচিং সাব কমিটির সদস্য, ১৯১৪ সালে হর্ণেল কমিটির সদস্য, ১৯১৭ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের কাছে সুস্পষ্ট জোরালো বক্তব্য, ১৯১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার খসড়া আইনের ওপর মতামত প্রদানকালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট বিশেষ কমিটিতে একমাত্র বাঙালি মুসলমান হিসেবে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে সর্বত্রই অনড় অবস্থান গ্রহণ করেন।
আহ্ছানউল্লা ছিলেন প্রথম ও একমাত্র ভারতীয় মুসলিম যিনি অবিভক্ত বাংলার শিক্ষা বিভাগের সহকারি পরিচালক পদে আসীন হয়েছিলেন, ইন্ডিয়ান এডুকেশন সার্ভিসেও তিনিই প্রথম ভারতীয় আই.ই.এস এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য। ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় ও মৌলিক প্রায়োগিক চিন্তা-চেতনার জন্য তিনি ১৯১১ সালে ব্রিটেনের রয়্যাল সোসাইটি অব আর্টসের ফেলো মনোনীত হন। তখন থেকেই অবিভক্ত বাংলায় তাঁর শিক্ষাভাবনাকে ব্রিটিশ সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতো।
১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষনায় পূর্ববঙ্গের জনগণ, বিশেষ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান সম্প্রদায় নিদারূন আশাহত হয়। নবাব সলিমুল্লাহ বঙ্গভঙ্গ রদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে ১৭ এবং ২০ ডিসেম্বর দুটি চিঠি পাঠান ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জকে। ১৭ তারিখের চিঠিতে তিনি বঙ্গভঙ্গ রদের ফলে পূর্ববাংলার জনগনের মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ হওয়ার কথা এবং ২০ তারিখের চিঠিতে পূর্ববাংলার সংখ্যাগুরু মুসলমানদের সার্বিক উন্নতিবিধানকল্পে শিক্ষাব্যবস্থায় কিছু অভিনব সংস্কারের প্রস্তাবনা পাঠান। পত্র পাওয়ার পরদিনই ভাইসরয় তার শিক্ষা উপদেষ্টা স্যার এইচ বাটলারকে নবাবের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তার অভিমত জানতে চেয়ে নোট দেন। এইচ বাটলার নবাব সলিমুল্লাহর প্রস্তাবে ভাইসরয়কে ইতিবাচক মতামত প্রেরণ করেন। ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি ভাইসরয় ঢাকা সফরে এলে নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ এবং এ কে ফজলুল হক সহ পূর্ববঙ্গের ১৯ জন মুসলিম নেতৃবৃন্দ তার সাথে সাক্ষাত করে বেশ কিছু দাবি পেশ করেন। ভাইসরয় প্রতিনিধিদলকে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সরকারের সক্রিয় বিবেচনার আশ্বাস দেন। প্রতিক্রিয়ায় ১৬ ফেব্রুয়ারি ড. রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হিন্দু প্রতিনিধিদল ভাইসরয়ের সাথে সাক্ষাত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করে, কিন্তু ভাইসরয় তাদের আপত্তিতে সম্মত হননি। ২৭ মে বেঙ্গল সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রেজিল্যুশন জারি করে এবং স্কিম তৈরির জন্য ব্যারিস্টার নাথানের নেতৃত্বে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। এসময় একজন ‘টিচিং স্কলার’ হিসেবে আহ্ছানউল্লাকে নাথান কমিটির টিচিং সাব কমিটির সদস্য করা হয়। তখন তিনি প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান পদ্ধতি, বিষয়ভিত্তিক অনুষদ ও শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে তার মতামত উপস্থাপন করেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ থেমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১৪ সালের ১৪ এপ্রিল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি মোহামেডান এডুকেশনাল কনফারেন্সে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ঢাকায় বিশ্ব¦বিদ্যালয় স্থাপনে বিলম্বে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই উদ্বেগ নিরসনে বাংলার ডিপিআই হর্নেলর নেতৃত্বে বাংলা সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে ‘হর্ণেল কমিটি’ গঠন করে। প্রেসিডেন্সি বিভাগের তৎকালীন এডিশনাল ইন্সপেক্টর আহছানউল্লাকে কমিটির অন্যতম সদস্য করা হয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে মুসলমানদের পিছিয়ে কারণ ও উত্তরণের সুপারিশসহ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আহ্ছানউল্লা। এই প্রতিবেদন পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও আইন প্রণয়নে তথ্য উপাত্ত হিসেবে বেশ গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হয়।
১৯১৭ সালে গঠিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন (স্যাডলার কমিশন) দেশের শিক্ষাবিদ ও শিক্ষানুরাগীদের কাছ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে লিখিত অভিমত চেয়ে পাঠায়। আহছানউল্লা ২২ টি প্রশ্নের মধ্যে আটটি বিষয়ভুক্ত প্রশ্নের ওপর তার সুচিন্তিত অভিমত পেশ করেন। তার অভিমতসমূহ কমিশন রিপোর্টের ৯ম, ১০ম, ১১শ ও ১২শ খন্ডে সংযোজিত হয়। কমিশনের চার নম্বর প্রশ্নের বিষয়বস্তুই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রসঙ্গটি। মূলত এই বিষয়টিই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আপত্তি ও নেতিবাচক মনোভাবের ভিত্তি। চার নম্বর প্রশ্নের জবাবে খানবাহাদুর আহছানউল্লা তার স্মারকলিপিতে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান সীমাবদ্ধতার চিত্র তুলে ধরেন। লিখিত অন্যান্য অভিমতগুলোতেও তিনি যে নির্দিষ্ট প্রস্তাবমালা পেশ করেন তা তখনকার শিক্ষাব্যবস্থায় অবিকৃতভাবে প্রতিফলিত হতে দেখা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চুড়ান্ত পর্বে আহছানউল্লা আরও প্রত্যক্ষ ও অবিসংবাদিত ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ১৯১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল উত্থাপিত হয়। সরকার ২৩ সেপ্টেম্বর পাঠনো একটি চিঠিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে খসড়া আইনের ওপর চুড়ান্ত অভিমত প্রেরণের আহবান জানায়। এই প্রেক্ষিতে ১ নভেম্বর সিনেটের ১৪তম অধিবেশনে ৯ সদস্য বিশিষ্ট সিনেট কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটিতে একমাত্র বাঙালি মুসলমান সদস্য ছিলেন খানবাহাদুর আহছানউল্লা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে তখনো একমাত্র বাঙালি মুসলমান হিসেবে তার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ছিল। খসড়া বিল পর্যালোচনা কমিটির সদস্য হিসেবে বিলের প্রতিটি অনুচ্ছেদের ধারা উপধারায় কমিটির অন্যান্য প্রভাবশালী সদস্যদের সাথে চরম প্রতিকূলতা ও তীব্র বাদানুবাদে তিনি তার জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেন। কমিটির অধিকাংশ সদস্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধাচরণ করেন। পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি একাই বুক চিতিয়ে বুদ্ধিভিত্তিক লড়াইটি চালিয়ে যান। স্বাভাাবিকভাবেই অন্যদের সাথে আহ্ছানউল্লা একমত হতে পারেননি, সে কারণে ২৭ নভেম্বর ১৯১৯ তারিখে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার পক্ষে চার পৃষ্ঠার একটি নোট অব ডিসেন্ট দাখিল করেন। তার নোট অব ডিসেন্টটি কমিটির রিপোর্টের সাথে সংযুক্ত হয়।
১৯২০ সালের ২৩ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। নাথান ও হর্নেল কমিটিতে দেয়া আহ্ছানউল্লার সুপারিশ, স্যাডলার কমিশনে দেয়া লিখিত অভিমত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট দেয়া যুক্তিতর্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠায় স্পেশাল কমিটিতে দেয়া অভিমত, নোট অব ডিসেন্টের বক্তব্য সকল বিষয়েরই স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়আইনে। ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট মেম্বর (সিনেট) ছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক পথচলার প্রথম একযুগ তিনি বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী ছিলেন আহ্ছানউল্লারই পুত্রবধু ফজিলাতুন্নেছা জোহা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস মানে বাঙালি জাতির উত্থানের ইতিহাস। একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে, শিক্ষা প্রশাসক হিসেবে, বাঙালি মুসলমানের আত্মপ্রত্যয়ী প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠায় অন্যান্য আলোকবর্তিকাদের মতো খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার অবদানও অনস্বীকার্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের মূল আলোচনায় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লাকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। শতবছর পরে এসেও যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়প্রতিষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস এই প্রজন্মের কাছে উন্মোচন না করা যায় তবে তা সত্যিই বেদনার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ছিল রাজনৈতিক ও বুদ্ধিভিত্তিক সংগ্রামের সমন্বিত প্রয়াস। বাঙালি জাতির বাতিঘর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়জ্ঞানের আলো জ্বালুক অনাগত কাল।
লেখক: পরিচালক, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউট