শেষ নেই ভোগান্তির দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে
রুবেলুর রহমান, রাজবাড়ী : পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি থাকায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের দুটি সংযোগ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) সকালে ঘাটে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
জানা গেছে, দৌলতদিয়া প্রান্তের ৬টি ফেরিঘাটের দুটি ঘাট গত বছরের বর্ষায় ভেঙে গেলে এক বছরেরও তা সচল করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বাকি ৪টি ঘাট সচল থাকলেও পদ্মার নদীর পানি বৃদ্ধিতে ৩ ও ৬ নম্বর ঘাট দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী ওঠা নামায় ব্যাঘাত ঘটছে। ৪ নম্বর ঘাটে ভিড়ছে মাত্র ১টি ফেরি ও ৫ নম্বর ঘাটের একটি পকেটে চলছে সংস্কার কাজ।
এদিকে ৩ ও ৬ নম্বর ঘাটের রাস্তার ভাঙন ঠেকাতে বালুর বস্তা ফেলার কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিকেলে ঘাট পরিস্থিতি দেখতে ফেরিঘাটগুলো পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলামসহ অনেকে।
এছাড়া পদ্মার তীব্র স্রোতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ব্যাহত হচ্ছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল। ফলে প্রায় প্রতিদিনই দৌলতদিয়া প্রান্তে নদী পারের অপেক্ষায় থাকছে যানবাহনের সিরিয়াল। তবে কুরবানির ঈদ উপলক্ষে পশুবাহী ট্রাকগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। এছাড়া যাত্রীবাহী বাস ও অন্যান্য যানবাহনকে সিরিয়ালে পারাপার হতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দৌলতদিয়া এলাকায় সব জায়গায় এখন পানি। ৩ নম্বর ফেরিঘাটের রাস্তার ওপর হাঁটুপানি রয়েছে। এর মধ্যেই যানবাহন ও যাত্রীরা আসা যাওয়া করছে। ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা। সকালেও গর্তে পড়েছে একটি মোটরসাইকেল। এছাড়া মাঝে মধ্যেই অটোরিকশা উল্টে যাচ্ছে।
৬ নম্বর ঘাটেরও প্রায় একই অবস্থা। আসলে দৌলতদিয়া ঘাটে বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে কাজ করে। কিন্তু তাদের মধ্যে সমন্ময়হীনতার অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।
তারা আরও জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন ও যাত্রী নদী পারাপার হয় এবং ঈদের আগে ও পরে এর চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুন। করোনা ভাইরাসের কারণে এবার চাপ কিছুটা কম। তবে থেমে নেই আসা যাওয়া। যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহনের পাশাপাশি চাপ রয়েছে কোরবানির পশুবাহী ট্রাকের। একদিকে নদীর স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে ঘাট সমস্যা থাকায় ঈদে ঘরমুখো মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাই দ্রুত ঘাটের রাস্তা ও ফেরিঘাটের পল্টুন ঠিক করার দাবি জানান তারা।
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অঞ্চলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধিতে দৌলতদিয়া প্রান্তের দুটি ফেরি ঘাটের সড়কে পানি উঠেছে। দুর্ঘটনা রোধে বিআইডব্লিউটিএ ওই রাস্তার পাশ দিয়ে বালুর বস্তা ফেলার কাজ করছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া সহকারী ঘাট ব্যাবস্থাপক মো. মাহবুব হোসেন বলেন, পদ্মার তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ৩ নম্বর ঘাটের সড়কে হাঁটু পানি। ফলে যানবাহন ফেরিতে ওঠা-নামায় সমস্যা হচ্ছে এবং ৬ নম্বর ঘাটের সড়কেও হালকা পানি উঠেছে। তবে এখন পারের অপেক্ষায় কোনো পশুবাহী ট্রাক সিরিয়ালে নেই। যাত্রীবাহী বাসসহ প্রায় দুই শতাধিক যানবাহন সিরিয়ালে আছে। সময় বাড়লে চাপও বাড়ে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পশুবাহী ট্রাক আগে পার করছেন। বর্তমানে এরুটে ১৫টি ফেরি চলাচল করছে।
তিনি আরও বলেন, পানিতে ডুবে যাওয়া রস্তা দ্রুত ঠিক না করতে পারলে দোষ হয় বিআইডব্লিউটিসির। কিন্তু এখানে কয়েকটি দফতর কাজ করে। বিআইডব্লিউটিসি শুধু ফেরির দায়িত্বে আছে। রাস্তা সংস্কার, ভাঙনরোধে কাজ করে অন্য দফতর।