Articles by "ফিচার"
92 অন্যান্য 51 অর্থনীতি 24 আইন ও আদালত 76 আন্তর্জাতিক 588 এক ঝলক 3 কক্সবাজার 1 কবিতা 22 কিশোরগঞ্জ 4 কুড়িগ্রাম 6 কুমিল্লা 1 কুষ্টিয়া 3 কৃষি 107 কৃষি ও প্রকৃতি 10 ক্রিকেট 1 খাগড়াছড়ি 73 খেলাধুলা 45 গণমাধ্যম 12 গাইবান্ধা 1 গাজীপুর 17 চট্টগ্রাম 5 চাঁদপুর 5 চাঁপাইনবাবগঞ্জ 2 চুয়াডাঙ্গা 14 জয়পুরহাট 1 জাতীয় 3 জামালপুর 1 জোকস 6 ঝনিাইদহ 246 ঝালকাঠি 12 ঝিনাইদহ 4 টাঙ্গাইল 44 ঠাকুরগাঁও 39 ঢাকা 1 থী 3 দিনাজপুর 4784 দেশজুড়ে 42 ধর্ম 3414 নওগাঁ 14 নাটোর 2 নারায়ণগঞ্জ 1 নিহত ২ 1 নীলফামারীর 2 নেত্রকোনা 1 নোয়াখালী 3 পঞ্চগড় 4 পিরোজপু 2 প্রকৃতি 2782 প্রথম পাতা 23 প্রবাস 1 ফরিদপুর 17 ফিচার 8 ফুটবল 1 ফেনী 94 বগুড়া 2 বলিউড 58 বাগমারা 82 বিএমএসএফ 31 বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 53 বিনোদন 51 বেনাপোল 2 ব্রাক্ষণবাড়িয়া 1 ব্রাহ্মণবাড়িয়া 51 ভিডিও 18 ভোলা 8 ভ্রমণ 59 ময়মুনসিংহ 1 মাগুরা 1 মাদারীপু 2 মাদারীপুর 1 মানিকগঞ্জ 1 মেহেরপুর 495 যশোর 5 রংপুর 103 রাজনীতি 3 রাজবাড়ী 95 রাজশাহী 3 লক্ষ্মীপুর 24 লাইফস্টাইল 2 লালমনিরহা 41 শিক্ষা 1 শ্রীপুর 891 সকল জেলা 2 সাতক্ষীরা 9 সিরাজগঞ্জ 3 সিলেট 63 সুনামগঞ্জ 31 স্বাস্থ্য 4 হবিগঞ্জ 1 হলিউড 10 bmsf

ইলিশ সম্পদ রক্ষা করতে হলে এখনই চাবলি রক্ষা জরুরী

নিউজ ডেস্ক: ইলিশ প্রজনন মৌসুম সম্পন্ন। ইলিশ ধরা শুরু, বাজারে ইলিশ পাওয়া যাবে। বহু জেলে কারাগারে।হয়তোবা অজ্ঞতা বা লোভের কারণে প্রজনন মৌসুমে লাখ লাখ টাকার জাল পুড়ছে। কি পরিমান নৌকা-ট্রলার হাতছাড়া হয়েছে এগুলোর সরকারি  হিসাব থাকাও উচিত। জরিপ করা উচিত কি পরিমান জেলে এখনও মৎস্য আইন, নীতিমালা, মৌসুম সম্পর্কে অজ্ঞ। তবে ইলিশ ধরা মৌসুম শুরু হলেও কিছু জেলে পল্লীতে আপনজন কারাগারে থাকায় মাতম চলছে। ইলিশ সম্পদ রক্ষা করতে এখনই চাবলি পোনা রক্ষায় মৎস্য অধিদপ্তরকে আন্তরিক হওয়া জরুরী।

দেখা উচিত, কতভাগ ইলিশের পেটে এখনও ডিম আছে। ইলিশ সম্পদ রক্ষায় পিছিয়ে ডিমছাড়া মাছ গুলোকে রক্ষার প্রয়োজন আছে কিনা? মৎস্য অধিদপ্তর বলতে পারার কথা যে পরিমান ইলিশ ডিম ছেড়েছে তাতে দেশে ইলিশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম কিনা! ইলিশের পোনা চাবলি রক্ষায় করণীয় বিষয় নিয়ে কাজ করা উচিত। চাবলি নামে যে পোনা হাট-বাজারে, গ্রামে গঞ্জে বিক্রি হয় সেগুলোই ইলিশের পোনা। এটি রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। দেশীয় চিংড়িগুড়া, পোমার কড়া, বাইলা মাছ, টেংরা, পুটি, ভাটা মাছও কিন্তু হারাতে বসেছে। এগুলো রক্ষায় সরকারের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভুমিকা থাকা উচিত।

ইলিশ সম্পদ রক্ষার সাথে জড়িত জেলেরা সরকারি সহায়তা পেয়েও যারা মৎস্য আইন অমান্য করছে তাদের সরকারি অফিসে ঢেকে এনে তিরস্কার জানিয়ে একই সাথে সরকারি অনুদান বন্ধ করে ঐ জেলেদের কালো তালিকায় রাখা উচিত।

মৎস্য সংরক্ষণ কাজের সাথে জড়িত সরকারি কর্মকর্তারা নিজেরাই জলজ এ সম্পদটি রক্ষা করতে পারেন। শুধু প্রয়োজন সততা, আন্তরিকতা ও সাহসিকতা। তবে এদের অনেকে লোভাতৃর লোকজন দ্বারা চরিত্রগত ক্রুটি সংক্রমণে অনেকেই আক্রান্ত।

দেশবাসী অনেকেই জানেন, কিছুদিন পরেই ইলিশের পোনা 'চাবলি' বিক্রি হবে ২০ টাকায় এক পলিথিন। এবছর হয়তোবা ২০০ টাকা হবে। তবে এই মূহুর্তে ইলিশ রক্ষার দ্বিতীয় ধাপে সরকারী উদ্যোগে চাবলি বাঁচাও কর্মসূচী হাতে নেওয়া দরকার। কারণ, এই চাবলিই ইলিশের বংশগত পোনা।

এদিকে ২২ দিন গর্ভবতী ইলিশ রক্ষায় ফিবছর নদীতে যে হারে স্পীডবোর্ড, ট্রলার কিংবা নৌকাবাইচ চলে যা রীতিমতো হাস্যকর এবং পেটভরা ইলিশের কাছে আতঙ্কজনক। কেননা, ঐ মূহুর্তে ইলিশেরা পানির উপরে ভাসে এবং ডিম ছাড়ে। ঠিক এই মূহুর্তটি অসাদু জেলে, নদীপাড়ের কিছু টাউট লোকজন ও মৎস্য কাজের সাথে জড়িত অফিসিয়াল কর্মচারীদের ঈশারা-ঈঙ্গিতেই পুরো মাসব্যাপী ইলিশনিধন চলে।

তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে মাত্র ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা প্রিরিয়ড শেষ করে ২ নভেম্বর থেকে মাছ ধরা চালু হয়েছে। তবে এখনও অধিকাংশ ইলিশের পেটে ডিম রয়েছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ ইলিশ খেতে পারেনা তারাও এইদেশী মানুষ। ভিনদেশী মানুষের প্লেটে ইলিশ তুলে দেওযার আগে দেশী মানুষের ইলিশ খাওয়া নিশ্চিত করা উচিত।

 সরকারি ভাবে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ইলিশ রক্ষা কর্মসূচী ২০২৩ প্রকল্পটি চলমান। তবে দেখার অপেক্ষা এবছর চাবলির কেজি কত বিক্রি হয়, কারা ক্রেতা, কারা প্রশয়কারী। এ বিষয়গুলো মৎস্যচাষী, জেলে এবং জেলে শ্রমিক এবং গণমান্যদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে।

মৎস্য অভিযানে সরকারি-বেসরকারি লোকজন অফিসিয়াল কামকাজ ফেলে যে হারে নদীতে দৌড়াদৌড়ি করেছে এতে রাষ্ট্রীয় কাজের ব্যাঘাত সৃষ্টিমাত্র। ইলিশ রক্ষায় এখন পলিথিন হটাও অভিযান চালাতে পারে সরকার। বাজার থেকে পলিথিন বন্ধ করা উচিত। বেসরকারি সংগঠণ সমুহ জনসচেতনতা সৃষ্টিতে এগিয়ে আসতে পারেন। ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, এটা বাংলাদেশী মানুষের সম্পদ, কিন্তু রক্ষার দায়িত্ব সকলের।

দেশের অধিকাংশ বেসরকারি সংগঠণ সমুহ, এনজিওর মৎস্য চাষ, মৎস্য চাষী প্রশিক্ষণ, সভা সেমিনার কাগজে কলমে গঠনতন্ত্রে কাজ আছে। কিন্তু ইলিশ সম্পদ রক্ষায় তাদের মূলত: কোন কাজ দেখা যায়না। দেশী-বিদেশি দান,অনুদান,সহযোগীতায় সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রকল্প গঠণ করে এরা। বণ্যা-প্রাকৃতিক দূর্যোগে এরা অনুদান আনে।

 পত্রপত্রিকা, অনলাইন ঘাটলে জানাযাবে ইলিশ রক্ষা করতে গিয়ে কতজন সরকারি মানুষ জেলেদের দ্বারা বেইজ্জতি হয়েছেন, কতজনের গায়ে কাদাছোড়াছুড়ি হয়েছে, লাঠিসোটা পিটাপিটির শিকার কতজন মানুষ, পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে অপদস্থ হয়েছেন কতজন জেলে এবং দণ্ডপালন করছেন কতজন। এগুলো নিরুপন করা গেলে ইলিশ রক্ষা করা যেতে পারে। তবে পলিসি মেকিং ইজ ইম্পরট্যান্ট। যতক্ষণ পলিসি মেকিং না হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ না করা হবে ততক্ষণ বাঙালীর পেটে ইলিশ ঢুকতোনা।

 ইলিশের এই অভিযানে মৎস্য অধিদপ্তরের কাজকে সহায়তা করতে ওসি ক্যাটাগরির পুলিশসহ এসিল্যান্ডকেও পানিতে নামানো হয়েছে। তবে ইতিহাস আছে ইলিশ রক্ষায় নেমে নদী থেকে সম্মান বাঁচিয়ে কুলে ওঠতে পারেননি অনেকেই। ডিসি অফিসের ম্যাজিষ্ট্রেটসহ সরকারের কৃষি অফিসার, শিক্ষা অফিসার জেলেদের কাছে ডাইলভাত। অথচ, ঐসব সরকারি অফিসারদের কলমেই তাদের সরকারি সহায়তা যেমন: চাল, আটা, নৌকা,ট্রলার, জাল, গরু,ছাগল, সেলাই মেশিন বিতরণ হয় বিনামূল্যে। এতকিছু দিয়েও অবৈধ ট্রলার নৌকায় অল্প টাকা পুঁজিতে জাল কিনে সরকারের নদীতে নেমে আইন অমান্য করে বারবার। এরা ধবংস করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এরা আইন অমান্যকারীও বটে। যদি এককথায় ধরে নেই এরা অশিক্ষিত, আইন জানেনা। সেটাও ভুল হবেনা; তবে এদরেকে সচেতনতায় কাজ করা দরকার,প্রকল্প বাড়ানো দরকার।

যদি আমরা মূলকথায় আসি, এককালের মাছে-ভাতে বাঙালী আজ মাছ সংকটে বাজারে বিভিন্ন দ্রব্যাদির দর বেড়েছে। দেশীয় মাছ সংকটে চাপ বাড়ছে মুরগি,ডিম ও আলুর ওপর। বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় মাছ রক্ষায় কোন সরকারি কর্মসূচী তেমন চোখে পড়েনা। অথচ হালে পানি ওঠার সাথে সাথেই এক শ্রেণিহীন মানুষ মাছের সাথে দা,বটি, লেজা,কোচ , লাইট নিয়ে রাতে যুদ্ধে নামে। এতে প্রতি রাতে গর্ভবতী দেশীমাছ কুপিয়ে আহত করে। ঐ সময় যে পরিমান মাছ আহত করা হয় এরপরে ১০ ভাগ মাছ এলাকার জমিতে, নদনদী, ডোবানালা,পুকুরে থাকেনা। মৎস্য অধিদপ্তর ইলিশ রক্ষায় শুধু প্রকল্প কেনো প্রকল্প হতে পারে পুটি মাছ রক্ষায়ও।
কেননা; পুটি মাছের ভোক্তা হারও চরম। আত্মীয়তা রক্ষায় ইলিশের মাধ্যমে কেনো; বাংলাদেশি মাছের বাজার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সঠিক ভাবে মৎস্য সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হলে দেশের মানুষের মাছের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।

এলাকাভিত্তিক মৎস্য ক্লাব গঠনের মধ্য দিয়ে মৎস্য রক্ষণাবেক্ষণ কাজে সরকারের পাশে সহায়তা দিতে পারে। জনমত তৈরী, সভা-সেমিনার, নদীপাড়ে বৈঠকী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জারি-সারি,বাওয়ালী, কাওয়ালী, আঞ্চলিক গানের আসরের মধ্য দিয়ে জেলেদের ইলিশ রক্ষায় সচেতন করা জরুরী।

জেলেদের চেয়ে কৃষকরাই বারবার অবহেলিত, ধরুণ এক বিঘা জমির একজন কৃষকের গরু,লাঙ্গল, জোয়াল,মই,খোন্তা, কোদাল ইত্যাদি উপকরণ লাগে। ১৫-২০ লাখ টাকার জমি, দেড় থেকে দুই লাখ টাকার গরুর পরে লাঙ্গল জোয়াল লাগবেই, সাথে কৃষিবিজ। কিন্তু একজন জেলের বাড়ির পাশে নদনদী থাকলেই কাম সারা। সরকারের খরচে নৌকা,ট্রলার, জাল কেনা টাকা, আরও কত অনুদান। জমা চালান ছাড়া নদীতে নামলেই ট্রলার ভড়া মাছ। কুলে ভেড়ালেই লাখো টাকার গুনতি।

শেষকথা: ইলিশ সংরক্ষনে অভিযানের নামে লাখেলাখে টাকা খরচের দরকার নেই। শুধু প্রয়োজন সরকারের মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি মাত্র ঘোষণার। যেই ঘোষণার মধ্য দিয়ে জেলেরা নৌকা-জাল নিয়ে নদী থেকে উঠে যেতে বাধ্য এবং স্বস্ব উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার নিকট নৌকা-জাল জমা দিয়ে সরকারি অনুদানের স্লিপ সংগ্রহ করবেন। স্লিপ ছাড়া কোন অনুদান মিলবেনা, এই কর্মসূচী চালু করলে আর কোনো জেলে নদীতে নামবেনা। আইন মানতে বাধ্য হবেন।

লেখক: আহমেদ আবু জাফর, চেয়ারম্যান, ট্রাস্টি বোর্ড ও সভাপতি, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি।

ক্ষমতার অহংকার ও দাম্ভিকতা চীরজীবন থাকে না

নজরুল ইসলাম তোফা:: সবশ্রেণীর মানুষদের জীবনের উৎকর্ষ-অপকর্ষের সূবিচার হয় তাদের 'চরিত্র'-পরিচয়ে। মানুষদের ''জীবন এবং কর্মের'' মহিমায় তাদের চরিত্রের আলোকেই পায় দীপ্তি। সকল মানুষ তার চরিত্র-বৈশিষ্ট্য অনুসারেই কাজ বা চিন্তা করে এবং সেই অনুযায়ী যেন সমাজজীবনে ভূমিকা রাখে। মানুষের জীবনে চরিত্র যে তার অহংকার ও সম্পদ। জনৈক দার্শনিক বলে ছিলেন, মানুষ হচ্ছে তিন প্রকার। একশ্রেণীর মানুষ হলো খাদ্যের জন্য সংগ্রাম করে যাদের দরকার হয় সবসময়েই খাদ্য। আরেক শ্রেণীর মানুষ হলো, ঠিক ওষুধের মতোই যাদের দরকার হয় মাঝে মাঝে। আরেক শ্রেণীর মানুষরা হলো, রোগের মতো যা তাদের কখনো যেন দরকার হয় না। এ মানুষরা এই তিনটি বিষয় নিজ থেকে বিশ্বাস করে কিন্তু সৃষ্টিকর্তা এখানে বৃহৎ ভুমিকা আছে তাইতো তাঁরা এমন আচরণেই কথা কপচায় এবং দাপটের সঙ্গেই চলে। যার যেটা শক্তিশালী সে সেটা নিয়ে অহংকার করে। সুতরাং, সৃষ্টিকর্তা তাদের অহংকার একনিমেষেই পরিবর্তন করে দিতেও পারেন। মানুষের বুদ্ধির সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু বোকামীর কোন সীমাবদ্ধতা নেই। তাইতো এই জগতের মানুষরা দাম্ভিকতা প্রকাশ করে এবং অহংকার করে।

সৃষ্টিকর্তা তাদেকে দেয় উজ্জ্বল শোভা ও সমুন্নত মহিমা। ফুলের সম্পদ যেমন তার সৌন্দর্য কিংবা সুরভি, আবার মানুষের সম্পদ তেমনি যেন চরিত্রশক্তি। নানা সদগুণের সমন্বয়েই যেন সব মানুষ হয়ে উঠে চরিত্রবান। মানুষদের সাথে সেই রূপ আচার আচরণ করো যেমন তারা পছন্দ করে। কিন্তু নিজের ইচ্ছা বা পছন্দ মাফিক আচরণ কর না। তাতে তারা কষ্ট পায়, একজনের কোনো রোগ হয়না কিন্তু সে ব্যক্তি রোগী ব্যক্তিকে অবহেলা করে বনজঙ্গল কিংবা রাস্তায় রোগীকে ফেলে চলে যায়। কিযে নির্মমতা ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির মানুষ এই সমাজে আছে। তাদের যদি কোনো সময়ে এমন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েই যায় তখন তাদের উপায় কি, তারা একবারেও ভাবে না। সদাচারণ, সত্যবচন, সৎসংকল্প এবং সৎ জ্ঞান হয় তার জীবনে আদর্শ। মানুষ হিতৈষী হয় তার জীবনব্রত নিয়ে।সে মানুষ কোথায়, সমাজ কি অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে।ভূল করা দোষের কথা নয় বরং ভূলের উপরে প্রতিষ্ঠিত থাকা দোষণীয়। দেখা যাচ্ছে দিন দিন যেন ভুলের উপর ইচ্ছা করেই হাবুডুবু খাচ্ছে। চারিত্রিক দৃঢ়তাও মানুষদের বিন্দুমাত্র খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এক সময় আমাদের জানা ছিল, চারিত্রিক গুণাবলীর স্পর্শে সমাজের অধম ব্যক্তিরাও নিজের কুলষিত জীবনকে সুধরে নেয়ার যেন সুযোগ পায়। এখন সুধরে নেওয়া তো দূরের কথা মানুষ অহংকারী হয়ে উঠছে। এখানে অহংকার শব্দটাকে যেই ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা, তার উদ্দেশ্য অবশ্যই ভিন্ন আঙ্গিকে। অহংকার গুরুগম্ভীর শব্দটা অবশ্যই মানুষের কাছে পরিচিত হলেও তা নেতিবাচক একটি শব্দ। মানুষ তাকে নিজস্ব আত্মায় ইচ্ছাকৃতভাবে ধারন করে অনেক বড়াই করে। এ ধরনের কথাকে ভেবেই বলা যেতে পারে যে, অহংকারী মানুষরা কখনোই ভালো মানুষদের কাছে সম্মান পায় না। কিসের এতো অহংকার? অনেক সবুজ ধান গাছের পাকা ধান গুলো কাটছে একটি মহল, কিন্তু সেই ধান গাছের ছবিতে দেখা যায় পাকা ধাপগুলি যেন  চোখেই পড়ছে না। জমির মালিকও বলছেন, পাকা ধান কাটা হচ্ছে। মালিক কি ভয়েই বলছেন আমাদের জানা নেই। হয়তো বা ক্ষমতার দাপটে মালিকে বলিয়ে নিতেও পারেন। ক্ষমতার দাপট কিংবা দাম্ভিকতাটাও- সে সকল মানুষের আত্মঅহংকার পর্যায়ে পড়ে বলেই মনে করতে পারি।

ঘুম ভাঙলে সকাল, আর না ভাঙলে পরকাল। অহেতুক এতো অহংকার বা দাপট কেন? মানুষ নিজের অবস্থান নিয়ে অনেক গর্ব এবং অহংকার করে থাকে কিন্তু ভেবে দেখেও না যে, তাঁর যা অবস্থান রয়েছে তার পেছনে যে কার না কারো অবদান আছে। সুতরাং বলা যেতে পারে অহংকারী ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষেই অকৃতজ্ঞ, কৃতঘ্ন ও গর্বিত কুলাঙ্গার। খুব 'বেশি অহংকার'- কখনোই ভালো হয় না। তিন ধরনের মানুষ অনেক বেশি 'অহংকার' করে থাকে। বেশি শিক্ষিত হলে, বেশি সুন্দর হলে, হঠাৎ করেই তারা বড়লোক হলে। তা ছাড়াও আরো একটি কারণ রয়েছে, তাহলো অল্প বিদ্যা অর্জনকারী ব্যক্তি নিজকে অহেতুক আড়াল করে রাখার জন্যেই যেন এক ধরনের ভাব ধরে অহংকার করে। সুতরাং জ্ঞানীরা মূর্খদেকে চিনতে পারে কেননা সে জ্ঞানী। পক্ষান্তরে মূর্খ জ্ঞানীকে চিনতে পারে না, কেননা সে মূর্খ। তাই তো সামাজিক ভাবে কে জ্ঞানী  আর কে মূর্খ বুঝা কঠিন। শুধুই এই সমাজে লক্ষ্য করা যায় দাম্ভিকতা কিংবা অহংকারের বেড়াজালে সাধারণ মানুষরা বন্ধি। অ-মানুষের জ্ঞান কবে হবে, যে অধিকার আদায়ের পেছনে চেষ্টা চালানো হয় তা কখনই বৃথা যায় না। সততা ও নিষ্ঠার সহিত অহংকার পরিহার করেই কি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার করা যায় না। কেনই বা এই দেশের হতদরিদ্র অসহায় মানুষদের 'খাদ্যদ্রব্য' ক্ষমতার দাপটে চোরি করে খেতে হবে।

সমগ্র পৃথিবীতে আজ অবধি যত সত্য কথাগুলো জানা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম সত্যি কথা অহঙ্কার পতনের মূল আর মানুষের নায্য চাহিদা থেকে বঞ্চিত করা। তাই তো 'জন রে' বলেছিলেন, 'লোভী ও অহংকারী মানুষকে বিধাতা সবচাইতে বেশী ঘৃণা করে।' তাই বলতেই হয় যে, "যতক্ষণ অহংকার ততক্ষন অজ্ঞান। যতক্ষণ নিজ স্বার্থ ততক্ষণ পতন"। অহংকার কিংব অত্মসাতে মতোই স্বার্থ থাকতে কখনোই মুক্তি হবে না। নীচু হলে তবে উঁচু হওয়া যায়, চাতক পাখির বাসা নিচে কিন্তু উঠে খুব উঁচুতে। এ ধরনের 'অহংকার নয়' আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করলেই বড় হওয়া যায়, সকল শ্রেণীর মানুর জাতি সম্মান করে। যাদের আত্ম বিশ্বাসের অভাব এবং আত্মবিশ্বাসেই অন্ধ তারা অন্য মানুষকে ভালো কাজ থেকে কি ভাবে সরিয়ে রাখা যায় সে চেষ্টাই করে থাকে। তারা নিজেরা পারে না বলেই যেন, অন্যকে কৌশলে ফেলে বিভিন্ন চাল ঘটিয়ে চাল চোরি এবং অন্যান্য কিছু পেলেই ভোগ করে থাকে। আবার অতি আত্মবিশ্বাস ও অহঙ্কারহীন মানুষকে নিজ চেষ্টা কিংবা ''সঠিক কিছু শেখা'' থেকেই বিরত রাখতেও চেষ্টা করে। দাম্ভিকতার শিক্ষায় বেশকিছু মানুষরাই এক দিন না এক দিন নিজ স্বার্থ ও অহংকার দেখিয়েই কখন পতন ঘটে যায় তা টেরও পায় না এবং পরেই আপসোস করে। অহংকার এটি অনেক 'খারাপ গুণ'। এটা অবশ্যই শয়তানের বৈশিষ্ট্য, ঠিক শয়তান মানুষকে দিনে পর দিন অহংকারী রূপেই বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। তাই "সৃষ্টি কর্তা" মনেই করেছেন, অহংকারী মানুষ গুলো কখনোই ভালো হয় না। দিনে দিনেই তাদের অন্তরকে 'আলোহীন' করে দেয়। তাদের অন্তরটিতেই যেন একসময়- 'পরিপূর্ণ অহংকার' জায়গা করে নেয়। আর কোনোভাবে সরাতে পারে। ভালো চেতনা নষ্ট  হয়ে যায়। সর্ব প্রথম সৃষ্টি কর্তা এবং তাঁর সৃষ্টির ওপর যে অহংকার করেছিল সে হচ্ছে, অভিশপ্ত ইবলিস। সুতরাং অহংকার ইবলিসি চরিত্র।

অহংকারী মানুষ খুব জঘন্য স্বভাবের হয়। এটা আসলে আত্মার মারাত্মক মরন ব্যাধি। মানুষ নিজেকে অন্যদের থেকে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম বলে মনে করলেই যেন মনের মধ্যে এক ধরনের আনন্দের হাওয়া বয়ে যায়। এমন-- আনন্দ হাওয়ার কারনে মন ফুলে ফেপে উঠে। এটাই অহংকার।মনে রাখতে হবে যে অহংকার ও বড়াই মানবাত্মার জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং মারাত্মক ব্যাধি, যা কিনা মানুষদের নৈতিক চরিত্রকে শুধু কলুষিতই করে না বরং মানুষদের সত্যের পথ থেকে খুব দূরে সরিয়ে ভ্রষ্টতা বা গোমরাহির পথে নিয়ে যায়। কোনো শ্রেণী-পেশার মানুষদের অন্তরে অহংকার ও বড়াই এর অনুপ্রবেশ ঘটে ঠিক তখনই তার জ্ঞান, বুদ্ধির ওপরেই তা বিস্তার করে। নানা প্রলোভন ও প্ররোচনার মাধ্যমেই খারাপ আত্মা খুব শক্ত হস্তেই টেনে নিয়ে যায় কু-পথে এবং বাধ্য করে সত্যকে অস্বীকার বা বাস্তবতাকেই প্রত্যাখ্যান করার মতো অনেক কিছু। ইচ্ছা জাগ্রত থাকেও না খুব ভালো কাজে। 'অংহকারী মানুষ' সবসময়ে চেষ্টা করে অন্যের হক কুক্ষিগত করে নিজের ফায়দা লুটা যায় কিভাবে। তাদের কাছে খুব সজ্জিত ও সৌন্দর্য মণ্ডিত ব্যপারগুলো হয়ে ওঠে যেন কিছু বাতিল, ভ্রান্ত, ভ্রষ্টতাসহ গোমরাহি মতোই নানা বিষয়। যার কিনা কোনো বাস্তবতা খোঁজে পাওয়া যায় না। এ সবের সাথে আরও যোগ হতে থাকে, যেই মানুষ যতোই বড় হোক না কেন, তাকে অহংকারী'রা নিকৃষ্ট মনে করবে এবং তুচ্ছ- তাচ্ছিল্য করে তাকে অপমান করবে। দেখা যায় অনেক মানুষরা আবার প্রতিভার কারণে প্রাথমিকভাবেই সফল হয়, কিন্তু সেই মানুষরা অহঙ্কারের কারণেই যেন নিজের সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি। অহংকারী মানুষেরাই তার নিজের ভুল ত্রুটি কাউকে দেখতেও দেয়না। ইগো তাকে অন্ধ করে দেয়, সে যতটা না বড়, নিজেকে তার চেয়েও যেন বেশি বড় করে দেখতে শুরু করে। কারও পরামর্শ এরা নেয় না। মনে করে নিজেই সবচেয়ে ভালো বোঝে।সুতরাং এমন ধরনের মানুষ সমাজে অহরহ চোখে পড়ে নিজেকে নিয়েই অহংকার করতে করতে ধ্বংস হয়েছে। সমাজ তাদেরকে অনেকেই ঘৃণার চোখে দেখে। সুতরাং পা পিছলে পড়ে যাওয়া লজ্জার কথা নয়। বরং যথাযথ সময়ে উঠে না দাঁড়ানোই লজ্জার ব্যাপার। এ মানুষদের লজ্জা হবে কবে।

অহংকার- তো তারাই করে, যাদের কোনো ধরনের গুন নেই। অহংকার শব্দটির প্রতিশব্দটা হচ্ছে: আত্মাভিমান অহমিকা ও গর্ব। অহংকার অথবা গর্ব এমন একপ্রকার  আবরণ, যা মানুষের সকল মহত্ত্ব আবৃত করেও ফেলে। মানুষের সকল মানবীয় গুণের বহিঃপ্রকাশ হলো মহত্ত্ব। এইসব মানবীয় গুণাবলি দিয়েই মানুষেরা অন্যান্য প্রাণী থেকে নিজেকে আলাদা করেছে। হয়েছেও 'সৃষ্টির সেরা' জীব। মহৎ মানুষরা অহংকারী ও আত্মকেন্দ্রিক না হয়ে, দেশ ও দশের কল্যাণে আত্মোৎসর্গ করেছে। তাই, তাঁরা সকল প্রকার "হীনতা, দীনতা, সংকীর্ণতা, স্বার্থপরতা বা অহংকার" থেকে মুক্ত থাকে। তাঁরা সবসময় দেশ, জাতি ও সমাজকে নিয়ে চিন্তা করে, নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে যায়। তারা বিশ্বাস করেন, মরিচা- যেমন লোহাকে বিনষ্ট করে, তেমনি অতিরিক্ত অহংকার মানুষকে ধ্বংস করে।সৎ মানুষেরা এও বিশ্বাস করেন যে, অহংকারী ব্যক্তিকে আল্লাহ ধ্বংস করে দেন, তার প্রভাব-প্রতাপ নস্যাৎ করে দেন এবং তার জীবনকে সংকুচিত করে দেন। যে ব্যক্তি অহংকার করতে চায় কিংবা বড়ত্ব দেখাতে চায় আল্লাহ তাকে বেইজ্জতি করেন। সুতরাং, অহংকারী হওয়া ঠিক নয়, গারিবদেকে ঘৃণা করা উচিত নয়। তাদের যা প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। মানুষের সাথেই বন্ধুত্ব ছিন্ন করে অর্থ উপার্জন করতে যেও না। কারণটা, বন্ধুত্ব স্থাপনই যেন নিজস্ব অর্থাপর্জনের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম তা স্মরণ রাখতে হবে।

লেখক: নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।

 মান্দায়  পিঁয়াজ চাষে ঝুঁকছে কৃষক

মাহবুবুজ্জামান সেতু,নওগাঁ : সারা দেশে বাংলা ও বাঙালীর প্রতিটি পরিবারে রন্ধন শিল্পে মসলাদির মধ্যে পিঁয়াজ অন্যতম মসলা।

 ইতোমেধ্যেই সেই মসলার পিঁয়াজ তার ঝাঁজ জানান দিয়েছে সবার কাছে। প্রতিটি পরিবারে রন্ধন প্রক্রিয়ায় কমবেশী পিয়াঁজের ব্যবহার হয়েই থাকে। তাই এ বছরে পিয়াঁজ তার আপন ঝাঁজে ব্যাস্ত থাকায় অনেক পরিবারের গৃহিনীরা বিনা পিঁয়াজে তাদের রন্ধন প্রক্রিয়া চালিয়েছেন বেশ কিছুদিন ধরে।

অদুর ভবিষ্যতে এরকম পরিস্থিতি এড়াতে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলার কৃষক কিষানীরা বর্তমানে সর্বস্ব দিয়ে পিঁয়াজ চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছেন।

তারই ব্যস্ত চিত্র নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায় দেখা গেছে। এ উপজেলার কৃষক কিষানীদের কথা ভবিষ্যতে পিঁয়াজ বাজারজাত করতে না পারলেও অন্তত: সারা বছর ধরে খাবার পিঁয়াজ টুকু নিজকে আবাদ করতে হবে।

তাই তারা নিজের জমি হোক আর অন্যের জমি হোক সকলেই কম বেশী পিঁয়াজের চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে।

 উপজেলার গনেশপুর গ্রামের আব্দুল জলিলসহ বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হলে তারা জানান, তারা প্রত্যেকেই ২,৪, বা ৫, ১০ কাঠা আবার  কেউবা  দেড় থেকে দু’বিঘা পরিমান করে পিঁয়াজের চষাবাদ করছে।

মান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, এবারে উপজেলায় পিঁয়াজ থেকে পিয়াজ (কন্দ) পিঁয়াজের চাষাবাদ হয়েছে বিপুল পরিমান  জমিতে যা বর্তমানে ক্ষেত থেকে তোলার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া এ বছরের পিঁয়াজের চাষাবাদ অতিতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে । সব মিলিয়ে এ বছর নওগাঁর  মান্দায় কৃষক কুল কোমর বেধেঁ পিঁয়াজের চাষাবাদে মনোনিবেশন করেছেন বলে উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ জানিয়েছেন।

দীপ্ত জীবন উপাখ্যানের একটি বৃহৎ আলেখ্য নজরুল ইসলাম তোফা

''ভোর হলো দোর খোল খুকু মনি উঠোরে'' এভাবেই যেন ডেকে তাঁর বাবা খুব ভোরে কোলে নিয়ে আদর, সোহাগ করতেন। সে ডাকে নাকি 'নজরুল ইসলাম তোফা' সাড়া দিয়ে বাবার সাথে আধো আধো অস্পষ্ট কথায় যেন মগ্ন হয়ে থাকতেন। ছেলের ছোট্ট চোখে স্বপ্নও দেখতো তাঁর 'বাবা', তাকে ধরে রাখার তখন কোনো ক্যামেরা পান নি, ছোট্টবেলার সেই প্রতিটি মুহূর্ত ও প্রতিটি দিন, অতীতের বহু স্বপ্ন গুলো স্মৃতিরপটে তাকে ধরে রাখা বা না রাখাই যেন একেকটা ছবি বা চিত্র, মহামূল্যবান কাব্যতেই যেন রূপ নিত। তাঁর বুকের ভেতরের শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্রটাও যেন সারাপৃথিবীর সর্বোচ্চ বড় গুদাম, তাই তো সেখানে সুরকে বেঁধে রাখা কোনো এক পণ্যের বস্তার মতোই যে। আরো তো আছে ছেলে বেলার সেই সু-মধুর সময় নিয়ে কথা। তাঁর বাবার প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর অনেক ভক্ত ছিলেন, তাই তাঁর নামও হয়ে গেল নজরুল ইসলাম তোফা। কাজী নজরুলের-তোফা না কি তিনিই। সেই জাতীয় কবি-নজরুলের রেখে যাওয়া এমন তোফা কিংবা উপহারই যেন তিনি। তাঁর বাবার এ ধারণা নিয়েই সন্তানের ভবিষ্যৎ ও মঙ্গল কামনা করতেন। তাঁর চোখে মুখে শৈশব থেকেই দেখতে পেলেন যেন শিল্প সংস্কৃতির ছোঁয়া। তিনি দিনেদিনে বড় হচ্ছেন, বুঝতে বা জানতেও পারছেন বহুকিছু। তাঁর শুরু হয়ে যায় গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে ভাবুক মনে একাকিত্বে হাঁটাহাঁটি। অনেক সকালেই সূর্য-উদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠে যেন পথে-ঘাটে পড়ে থাকা ''ময়লা কাগজ'' পড়া শুরু করেন। পড়ে থাকা সেই ময়লা যুক্ত কাগজের ছড়া বা কবিতা পছন্দ হলেই যেন তা কাটিংকরে ঘরে এনে আবৃত্তির পাশাপাশি সেগুলোর ভাব ধারায় অনেক কবিতা ও ছড়া খেলা লেখি করতেন এবং নিজের সে লেখাগুলোতে মনের মাধুরী দিয়ে নানা ধরনের ইলাসট্রেশন, ক্যালিগ্রাফি করা আরম্ভ করতেন। তাছাড়াও বইয়ের মলাটে প্রচ্ছদ অংঙ্কন সহ ছড়া কিংবা কবিতা লিখে নিজস্ব প্রতিভার আলোয় মনের অজান্তে ছুটে চলতেন। এইগুলো দেখে তাঁর বাবা আনন্দ পেতেন এবং তাঁর নিজের গ্রাম 'পাঁজর ভাঙ্গা' বাজার থেকে ক্রয় করে দিতেন কাজী নজরুল ইসলামের ছড়া ও কবিতার বই। সেই সময় বাবা মনে করেছিল, তরুণ জীবনে এমন শিল্প জ্ঞানহীন ছেলের প্রতিভার বিকাশ অমন্দ নয়, এক দিন তাকে শিল্পের মাস্টার তৈরি করবো। আজ তা সত্য হয়েই গেছে, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর চারুকলা বিভাগ থেকেই এমএফএ করেছেন। এখন তিনি কর্মরত আছেন কর্মরত রাজশাহী চারুকলা মহাবিদ্যালয় অর্থাৎ চারুকলার এক জন মাস্টার বা চিত্রশিল্পী।
 
'শুনেছো- ঠিকই শুনেছো। তাঁর কেনো সুনাম থাকবে না, কেন বলো? কতকাল ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে এ কাজ করে আসছি’ শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'নাটক সংগ্রহ' গ্রন্থের ‘স্বর্গে কিছুক্ষণ’ নাটকের সংলাপ এটি। এমন এ সংলাপ তাঁর অনেক ভালো লাগে। তাই মাঝেমধ্যেই এমন গ্রন্থটি বের করে তিনি পড়েন। কথা গুলো তিনি এক নাগাড়েই যেন বললেন। গ্রন্থ-প্রেমী, নাট্যকার এবং নাট্যাভিনেতা- নজরুল ইসলাম তোফা বলা যায় যে, তিনি সরল মনের মানুষ। তাঁর অভিনয়ে অবাধ বিচরণ ছিল গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে বহমান আত্রাই নদী'র তীর। নওগাঁ জেলার ১৩ নং কশব ইউনিয়নেই স্থায়ী ঠিকানা। তাঁর পিতার হলেন, মোঃ কমর উদ্দীন শাহানা। তাঁর দ্বিতীয় সন্তান- নজরুল ইসলাম তোফা। তিনি পড়া শোনা করেন, গ্রামের স্কুলেই ৫ম শ্রেণী আর চকউলী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এস এস সি'র পরপরই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগে ভর্তি হন। তারপরে প্রচণ্ড স্বপ্নবাজ এমন গ্রন্থ-প্রেমী সাদা মনের মানুষটি নাট্যাঙ্গনের প্রতি মনোযোগী হয়েছেন। এ ভাবে দিনেদিনে নানা ধরনের নাটক নির্মাণ করার সহিত নানান নাটকের চরিত্রে অভিনয়ে মগ্ন থেকেছেন তিনি।
 
নজরুল ইসলাম তোফার জন্ম ০৫ জুলাই ১৯৭৫ সালে। তিনি এখন থাকেন রাজশাহীর বর্নালীর মোড়েই, হেতেম খাঁতেই অবস্থিত- "গ্রীন গার্ডেন টেকনিক্যাল এন্ড বি.এম কলেজের পার্শ্বে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর চারুকলা বিভাগ থেকে পড়া শোনা শেষ করে রাজশাহী চারুকলা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশিই অভিনয় করেন। গ্রন্থপ্রেমী নাট্যসমগ্র সংগ্রহে নেশা পূর্ণভাবে শুরু করেন। নান্দনিক দৃষ্টিতে ঘরে অসংখ্য পুস্তকের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন। বই গুলো শুধু সংস্কৃতিমনা মানুষদের ভালো লাগবে মনে করি। শুধু বই ক্রয় করে সেলফে রাখেননি, কাজের ফাঁকে ফাঁকে প্রতিদিনই যেন একটি হলেও নাট্য পান্ডু লিপি পড়েন। জানা গেল, তাঁর মনের ক্ষুধা অনেক বড়। সেই ক্ষুধা মেটানোর জন্য তিনি যখনই সুযোগ পান তখনই বই পড়েন। শৈশবে নজরুল ইসলাম তোফা স্কুল ও পূঁজা-পার্বণেও যাত্রা করেছেন। তাঁর নিজ গ্রামে গ্রামে ঘুরে অভিনয় ও কৌতুক করে মানুষ হাঁসাতেন। সে যাত্রা কিংবা কৌতুক পরিবেশনের পাণ্ডু লিপি যেন তিনি কপি করতেন নিজ হাতে লিখে। আর তাঁর সঙ্গে যারা কৌতুক বা অভিনয় করতেন তাঁদের 'প্রম্পট ও অভিনয়' শিখিয়ে দিতেন। এইভাবেই তাঁকে বই পড়ার নেশাটি পেয়ে বসে। পরে ভিডিও নাটকে অভিনয় শুরু তাঁর। এইভাবেই বৃহৎ পরিসরে প্রতিশ্রুতিশীল ও প্রতিভাবান এই নাট্যাভিনেতা আলোচিত ব্যক্তি হয়ে উঠেন। এলাকাজুড়ে সমালোচিত হতেও শুরু করেন, কারণটি হলো এই তাঁর নিজ গ্রামের বাড়ির পাশে আত্রাই নদীর পাড় এবং সেখানেই স্কুলমাঠ আর সে মাঠে বিরাট কড়ই গাছ। গাছের গোড়ায় বসেই ঘন্টা পর ঘন্টা উচ্চস্বরে ও হেলে দুলে অভিনয় চর্চা আর মাঝে মাঝে বিরতি নিয়েই 'ক্রিয়েটিভ চিত্রকর্ম' চর্চা করে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। বলা যায় যে, সবই ছিল তাঁর পাগলের মতো। তারই ফলশ্রুতিতে প্রায়  চার হাজার মতোই নাট্য সমগ্র গ্রন্থ তাঁর সংগ্রহে রয়েছে। যে কারণেই কোনো প্রহসন নয়, অনুপ্রেরণার গল্পই বলা চলে।
 
কোনো দুর্লভ এবং ব্যতিক্রমধর্মী নাট্য সমগ্র পুস্তকসমূহ  সংগ্রহের প্রয়োজন পড়ে, সবার আগেই তিনি মনে করে রাজশাহীর বুক পয়েন্টের মালিক চন্দন দার কথা। তিনি কলকাতা ও ঢাকা গিয়ে তাঁকে মনের খোরাক মেটানোর জন্য নাট্য সমগ্র এনে দিতেন। নিজস্ব বুদ্ধিদ্বীপ্ত চেতনায় বই পাগল নাট্যপ্রেমী মানুষ বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলে নাটক করছেন এবং আগামীতেও দক্ষতার সহিত করে যাবেন। তাঁর নাট্য গুরু শিমুল সরকারের অবদান তিনি কখনোই অস্বীকার করতে পারেন না। কারণ- তাঁর গুরু 'অনুপ্রেরণা বা সুযোগ' না দিলে জীবনের অনেক অর্জন অপূর্ণ থেকেই যেত। গ্রন্থ-প্রেমী 'নজরুল ইসলাম তোফা' নিজের শৈল্পিক চিন্তায় বইয়ের মলাট করে রাখেন তুলি কলম দিয়ে পূর্নাঙ্গভাবেই প্রচ্ছদ অংকন করে। শুধু তাই নয়, সেই গ্রন্থ গুলোকে ক্রমিক নম্বরের আওতায় এনেই তা ডায়রিতে ক্রমিক নম্বর অনুযায়ী লিপিবন্ধ করেছেন।আর তিনি এমন রুচিশীল ব্যক্তি হবেনা কেন? তিনি তো চিত্রশিল্পী, চারুকলা কলেজের শিক্ষক। তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে গ্রন্থ খুঁজে পেতে চমৎকার লেখাটি মনোযোগ আকর্ষণ করবে। নাট্যগ্রন্থ প্রেমী নজরুল ইসলাম তোফা দেশি-বিদেশের লেখকদের লেখা নাটকের সমগ্র সংগ্রহ করেন। বর্তমানে তার সংগ্রহে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, উৎপল দত্ত, বাদল সরকার, বুদ্ধদেব দাশ গুপ্ত, বুদ্ধদেব বসু,শরবিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোজ মিত্র, অলোক রায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, শুম্ভ মিত্র, নভেন্দু সেন, চন্দন সেন, লোকনাথ ভট্টাচার্য, ধনঞ্জয় বৈরাগী, ব্রাত্যরাইসু, সেলিম আল দীন, আব্দুল্লাহ আল- মামুন, মান্নান হীরা, মামুনুর রশীদ,হুমায়ূন আহমেদ,মমতাজউদ্দীন আহমদ, রামেন্দ্র মজুমদার, আসাদুজ্জামান নূর, আলী যাকের,আহম্মেদ ছফা, আবুল হোসেন, সিকান্দার আবু জাফর, প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক সহ দেশি-বিদেশি খ্যাতিমান সব লেখকদের বাংলা ভাষায় লেখা নাটকের অনেক রুচিশীল নাটকসমগ্র। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া শোনা চলাকালীন থেকেই বহু ধরণের বই সংগ্রহের নেশায় মগ্ন ছিলেন। তাঁর সংগ্রহ শালাতে আজও রয়েছে ১ম শ্রেণী থেকেই আরম্ভ করে শিক্ষা জীবনের কেনা যত গুলি বই- সবগুলোই।
 
তবে তাঁর নাটকের সমগ্র সংগ্রহের নেশা তৈরি হয়েছিল- ১৯৯২ সালের দিকেই, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগে ভর্তি হবার পরে। নাটকের গ্রন্থ সংগ্রহের বিষয়ে বলতে গিয়েই তিনি বলেছেন ২০১০ সালের দিকে আমি ধারাবাহিক 'চোরকাব্য' নাটকে কাজ করেছিলাম। তখন শ্যুটিং এর জন্যে ঢাকায় ছিলাম। সেইজন্য ‘টিভি নাটক সমগ্র’ গ্রন্থটি সংগ্রহ করার জন্যেই গিয়ে ছিলাম ঢাকার নীলক্ষেতে। আর সেখানে গিয়ে পড়তে হয় ভোগান্তিতে। আমার পরনের শার্টটি ছিঁড়ে যায় দ্রুত চলমান রিকশায় বেঁধে। সেই ছিঁড়া টিশার্ট পরেই মার্কেটের ভিতরে ঘুরতে থাকি। নতুন শার্ট কেনার জন্যে না, পছন্দের সেই গ্রন্থটি কেনার জন্যে। মনটা খারাপ হলেও টি-শার্ট কেনার জন্য কোনও আগ্রহ ছিল না। কারণ হলো শার্টের চেয়ে গ্রন্থটি বেশি প্রয়োজন ছিল তখন। আবেগ জড়িত কন্ঠেই তিনি আরো বলেন, আর একটা বিষয় হলো সেসময় চাইলেই হয়তো টি-শার্ট কিনে নিতেই পারতাম, তবে শার্ট কিনলে গ্রন্থটি কেনার টাকা হতো না। 'ঢাকা থেকে বাড়ি' ফিরতে বই কেনা টাকা ব্যতিত পকেটে ছিলো মাত্র ৫ শত টাকা। যাক অনেক কথাই তাঁর স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠে, তাঁর বাবা হঠাৎ একদিন বলেই বসেছেন, এতো পুস্তক সংগ্রহ করছো কি হবে- এতো? উত্তরে তিনি বলেন, বই আমার অপূর্ণতাকে কাটিয়ে উঠার সহায়ক হচ্ছে, তা ছাড়া তুমি তো একদিন থাকবে না। তখন আমার ছেলেকে বলবো, আমার বাবা আমাকে এমন এ লাইব্রেরি করে দিয়েছে। তুমিও তোমার সন্তানদেরকে বলবে। আসলেই নজরুল ইসলাম তোফার বাবা সেইসময় কান্না জড়িত কন্ঠে তাঁর দিকে চেয়ে বলেন, তোমার চিন্তা-চেতনার জায়গা আমি বুঝি রে বাপ। তারপরে তাঁর বাবা বই সংগ্রহ নিয়ে কোন কথা বলেননি। এটি ছিলো তোফার পুস্তক সংগ্রহের বড় শক্তি।

গ্রন্থ সংগ্রহ করতে করতে বর্তমানে তার সংগ্রহে শুধুমাত্র নাটকের সমগ্র গ্রন্থ প্রায় ৪ হাজারের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ের গ্রন্থও প্রয়োজনের তাগিদে কিনে থাকেন। তাঁর সংগৃহীত বইয়ের মধ্যে যেন আছে বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান লেখককের শুধু বাংলা ভাষায় লেখা নাট্য সমগ্র বা অনুবাদ করা নাট্যগ্রন্থ। সেই গ্রন্থগুলো দিয়েই নিজের বাড়িতে তৈরি করেছেন একটা সংগ্রহশালা। কেন তিনি এতো গুলো নাট্য সমগ্র সংগ্রহ করেছেন কিংবা এখনো তা সংগ্রহ করেই যাচ্ছেন এবং সেই গুলোকে সযত্নে সংরক্ষণ করেন জানতে চাইলেও নজরুল ইসলাম তোফা বলেছেন,- ‘'ছোট বেলা থেকেই নাটকে অভিনয় করি আর 'নাটকের বই' পড়ার দরকার পড়ে, সে চেতনা থেকেই নাটকের বই কিনি এবং পড়তে ভালোবাসি। স্কুলে পড়া কালে মঞ্চ নাটকের মধ্য দিয়েই শুরু হয় নাটক বা অভিনয় করা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পরেই নাট্যগুরু পরিচালক শিমুল সরকারের সঙ্গে থিয়েটারে যুক্ত হই। এই ভাবে নাটক করতে করতে এক সময় টিভি নাটকে কাজের সুযোগ আসে। সুতরাং- সেখানে গিয়ে কাজ করার সময়, নিজের ভিতরেই কিছু অপূর্ণতা আছে তা মনের মধ্যেই যেন জাগ্রত হওয়া শুরু করলো। অপূর্ণতাকে কাটিয়ে উঠতে, আর নাটক কিংবা অভিনয় সম্পর্কে আরো বেশি জ্ঞানার্জনের লক্ষ্যেই যেন বিভিন্ন খ্যাতিমান নাট্যকার ও লেখকদের লেখা নাট্যগ্রন্থ সংগ্রহ করে পড়তে শুরু করি। এভাবেই আমার সংগ্রহে জমা হতে থাকে একের পর এক নাট্যগ্রন্থ।

পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষের জীবন ভাবনা থাকে আর থাকে স্বপ্ন। কিছু মানুষ আছে যাদের মধ্যে স্বপ্নের জগৎ অনেক বড়। নজরুল ইসলাম তোফাও যেন সে ভবিষ্যত স্বপ্ন পরিকল্পনায় স্বপ্ন বাজদের দলেই। তিনি পথ নাটক, মঞ্চ নাটক এবং টেলিভিশনে শতাধিক নাটকে অভিনয় করে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তারমধ্যেই যেন টিভিতে তাঁর  প্রচারিত নাটক- প্রায় তিরিশটার মতো। বর্তমানে একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন। নাট্যকার ও পরিচালক শিমুল সরকারের সেই টেলিফিল্মের নাম- "গুপ্তধন এবং একজন বৃদ্ধ''। অভিনয়ের পাশাপাশি কয়েকটি নাটকও লিখেছেন। আগামীতেই একটি স্ক্রিপ্ট পরিচালক শিমুল সরকার পছন্দ করেছেন। সুতরাং- নাট্যগ্রন্থ সংগ্রহ তাঁর দিনে দিনেই কাজে দিচ্ছে। এই নাট্যগ্রন্হ নিয়ে ভবিষ্যতে কিছু করার পরিকল্পনা আছে কিনা তা জানতে চাইলেও তিনি বলেন, ‘এসব কাগজের গ্রন্থ তো বেশি দিন অক্ষত অবস্থায় সংরক্ষণ করা সম্ভব না। সেই জন্যে এসব দেশ বিদেশের 'মূল্যবান গ্রন্থ গুলো' অক্ষত অবস্থায় সংরক্ষণ করার জন্য ই-বুকে রুপান্তরিত করে একটি 'ই-লাইব্রেরি বা অনলাইন আর্কাইভ' তৈরির পরিকল্পনা আছে। যাতে সযত্নে নিজের সংগ্রহে রাখার পাশাপাশি গ্রন্থগুলো দ্বারা অন্যদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে সহায়তাও করতে পারেন।

নওগাঁর পিরোজপুরে নিজ উদ্যোগ্যে পরস্কিার পরচ্ছিন্ন জোরদার যুবসমাজকে আহ্বান

আতাউর শাহ্, নওগাঁ প্রতিনিধি ঃ
নওগাঁর আত্রাই ও রাণীনগর দুটি থানার প্রধান সড়কপথে কাঠালতলী থেকে পিরোজপুর মাদ্রাসা মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা অত্যন্ত সরু ও জংলা, এই রাস্তা দিয়ে একটি বড় গাড়ি এলে পথচারীর রাস্তার নিচে নামা ছাড়া কোন উপায় থাকেনা , আবার পাকা রাস্তার নিচে পায়ে হাঁটা পথে আগাছায় ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ন । এই অবস্থায় হাজার হাজার পথচারীর পথচলা খুবই কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। আর রাতে পৌর রোডলাইনে সব বাল্ব না থাকায় , এক জঙ্গলী ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি  হয়েছে। এই সুযোগে এখানে মাঝেমধ্যে ছিনতাই ও সংঘঠিত হয় ।

মো. আশিকউজ্জামান আশিক, বলেন আপনার মাধ্যমে আমি যুবসমাজকে আহ্বান জানাই, এসব কাজ করতে পৌরসভাসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করার নিয়ম থাকলেও, জনসাধারণেরও এব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত। মনে রাখতে হবে জনগণই এর প্রধান ভূক্তভোগী। আপনার আমার সচেতনতাই পারে নিকটস্থ ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ময়লা আর্বজনা ও জীবাণুমুক্ত রাখতে। আমরা নিজেরা যদি উদ্যোগী হয়ে নিজেদের ঘরের আশপাশ পরিস্কার করে রাখি তাহলে একদিকে যেমন জায়গাটি উজ্জ্বলতা ও প্রাণ ফিরে পাবে তেমনি নানান অসুখ বিসুখ থেকেও আমরা আমাদের পরিবার ও সমাজকে মুক্ত রাখতে পারব। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা একটি এলাকার মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়। দশের লাঠি একের বোঝা। সুতরাং এই গুরুত্বপূর্ন কাজ কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দিকে চেয়ে না থেকে , নিজ উদ্যোগে পরিস্কার করার দায়িত্ব নিয়েছি । সর্বপরি রাস্তা পরিস্কার করা নবীর সুন্নত ও ছাদগায়জারিযা ।#

নওগাঁর রাণীনগরে পাটের চেয়ে পাট কাঠির যতেœ ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষানীরা, বাজার ভালো হওয়ায় স্বস্তি

আব্দুর রউফ রিপন, রাণীনগর (নওগাঁ): নওগাঁর রাণীনগরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সোনালী আঁশ পাটের চাষ। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫হেক্টর বেশি জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে পাটের চেয়ে পাট কাঠির কদর কৃষকদের কাছে অনেক বেশি। তাই উপজেলার কৃষক-কৃষানীরা পাট কাঠির যত্নে  ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাট থেকে কাঠি ছড়ানোর পর রোদে শুকিয়ে তা মজুদ করায় ব্যস্ত তারা। 

এক সময় পাটই ছিলো দেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। পাটকে বলা হতো সোনালী আঁশ। বিগত কয়েক বছরে পাটের দাম না পাওয়ায় এক সময়ের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলো। কিন্তু বর্তমানে পাটের বাজার ভালো হওয়ায় কৃষকদের কাছে দিন দিন পাট চাষের কদর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে পাটের আঁশের পাশাপাশি পাটকাঠির মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় পাটকাঠির যত্নে  ব্যস্ত কৃষক-কৃষানীরা।

বর্তমানে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকায় পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের ও পাটকাঠির বাজার ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুঁটেছে হাঁসির ঝিলিক।
নওগাঁর রাণীনগরে পাটের চেয়ে পাট কাঠির যতেœ ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষানীরা, বাজার ভালো হওয়ায় স্বস্তি

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ৩৫হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে যা গত বছরের চেয়ে ৫হেক্টর বেশি। চাষের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকায় অনেক স্থানে চাষ কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলন হওয়া ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা খুশি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ভালো মানের পাটের মূল্য ১৮শ টাকা মণ ও নিম্ন মানের পাটের মূল্য ১৫শ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ফলে ন্যায্য মূল্য পেয়ে পাট চাষীদের মাঝে এখন পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে।

উপজেলার মিরাট গ্রামের কৃষক হাসেম আলী বলেন, এবার ৫বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে না। আর বর্তমানে আমাদের কাছে পাটের আঁশের চেয়ে বেশি মূল্যবান হচ্ছে পাটকাঠি কারণ বাজারে পাটকাঠির চাহিদা সারা বছর। দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই আমরা পাটকাঠির প্রতিই বেশি যতœশীল।

খট্টেশ্বর রাণীনগর গ্রামের পাট চাষী কুদরত বলেন, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম তবে পড়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফলনও ভালো হয়েছে। পাট জাগের পর্যাপ্ত জলাশয় থাকা ও বাজারে পাটের দাম ভালো থাকায় আমি খুশি। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামি বছর আরো বেশি জমিতে পাট চাষ করবো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় পাটের হারানো যৌবন ফিরে আনার লক্ষ্যে কৃষি অফিস মাঠ পর্যায়ে সব সময় কাজ করে আসছে। কৃষকদের কাছে বিনামূল্যে পাটের বীজসহ অন্যান্য উপকরন সরবরাহ করা থেকে পাটের আঁশ ছাড়া পর্যন্ত আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে এসেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পাটের বাজার ভালো থাকায় কৃষকরা খুশি। পাটের পাশাপাশি পাট কাঠির কদরও কৃষকদের কাছে অনেক বেশি। পাটের এই বাজার বর্তমান থাকলে আগামীতে পাট চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে কারণ কৃষকরা ধান চাষে বার বার লোকসান দিয়ে আসছে।


পাখির গ্রাম নওগাঁর আলিদেওনা গ্রাম উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত ॥ আধুনিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষনার দাবী

আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ : নওগাঁর মহাদেবপুরের সনাতন ধর্মাম্বলী অধ্যুষিত গ্রাম আলি দেওনা। বাঁশ ও গাছে গাছে হাজার হাজার পাখির কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠেছে আলিদেওনা গ্রামটি। মহাদেবপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২কিলোমিটার পশ্চিমে খাজুর ইউনিয়নে অবস্থিত এই গ্রাম। কিন্তু এই গ্রামের রাস্তাসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত দিকে আধুনিকতার কোন ছোঁয়া লাগেনি। এখানে গড়ে ওঠা বিভাগের বৃহত্তম পাখির অভয়ারন্যকে জাতীয় ভাবে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষনার দাবী স্থানীয়দের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০বছর আগে হঠাৎ করেই এই গ্রামের বাঁশঝাড়সহ বিভিন্ন বড় বড় গাছে আসতে শুরু করে নানা প্রজাতির পাখি। আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে পাখি কলোনী। গ্রামের সাধারণ মানুষের উদ্যোগে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল। এখানে আশ্রয় নেয়া হরেক রকম পাখিদের মধ্যে রয়েছে লাল বক, সাদা বক, শামুককল, রাতচোরা, সারস, মাছরাঙা, পানকৌড়ি ও বিভিন্ন প্রজতির ঘুঘুসহ নাম না জানা নানান রংয়ের হাজার হাজার পাখি। গ্রামের আনাচে-কানাচে বেড়ে ওঠা বাঁশ ও গাছে গাছে সারাক্ষণ হাজার হাজার পাখিদের কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে গ্রামটি। এ কারণে বর্তমানে আলিদেওনা গ্রামের নাম হয়েছে পাখির গ্রাম। ওই পাখি গ্রামের পাখিদের বাড়তি নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় পাখিপ্রেমী, সমাজসেবী ও পরিবেশবিদরা সরকারীভাবে অভয়ারণ্য ঘোষণার পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি করছেন।

পাখির গ্রামে গেলেই মুগ্ধ হয়ে উঠে নওগাঁ জেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলার পর্যটকরা। স্থানীয়রা স্ব-উদ্যোগে গ্রামটিকে পাখি শিকার মুক্ত এলাকা ঘোষণা করেছেন। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পাখির বাস। ওই গ্রামের সীমানায় কোন পাখি প্রবেশ করা মানে পাখিটি নিরাপদ। আর এ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন গ্রামের সকলেই। পাখি শিকার রোধে গ্রামবাসী নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। ফলে সারা বছরই সেখানে হাজার হাজার পাখির আগমন ঘটে। বিশেষ করে বাচ্চা উঠানোর মৌসুমে শামুককল ও বকের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে গ্রামটিতে প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে।

তবে গ্রামের অবকাঠামোগত অবস্থা ভালো নয়। গ্রামটিতে প্রবেশের সময় দেখা যায় সরু রাস্তার দুই ধারে থাকা গাছে গাছে লাগানো রয়েছে বিভিন্ন পাখির আদলে সাইনবোর্ড। সাইনবোর্ডগুলোতে পাখি শিকার রোধে বিভিন্ন আইন ও সচেতনতামূলক উপদেশ লেখা রয়েছে। ‘পাখি শিকার করবেন না, পাখি মারবেন না, পাখিরাও আমাদের মতো বাঁচতে চায়, পাখি এ সমাজের পরম বন্ধু, তাদের আগলে রাখতে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’ ইত্যাদি। আর এ কাজে গ্রামের মানুষদের এক কাতারে এনে প্রতিনিয়ত উদ্বুদ্ধ করছে স্থানীয় আলিদেওনা পাখি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি নির্মল বর্মন। সেখানে পাখির খেলায় যেন মেলা বসে। পাখিদের মেলার কারণে গ্রামটিও যেন ফিরে পেয়েছে নতুন প্রাণ। নতুন প্রাণের স্পন্দনে জেগে ওঠা গ্রামবাসী পাখিদেরও আগলে রেখেছেন আপন সন্তানের মতই। ইচ্ছাকৃতভাবে না হোক, কোনো শিকারী ভুলক্রমেও এ গ্রামে প্রবেশ করলেও তার কপাল মন্দ।

আলিদেওনা পাখি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত নির্মল বর্মন বলেন, পাখিদের প্রতি আলিদেওনা গ্রামের মানুষের ভালোবাসার কারণেই এখানে পাখিদের আবাসভূমি গড়ে উঠেছে। তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বা অন্য কোন কারণে বাসা থেকে পড়ে যাওয়া বাচ্চাগুলোকে গ্রামবাসিরা যতœ সহকারে মা পাখিদের বাসায় পৌঁছে দেয়। তিনি গ্রামটিকে সরকারিভাবে পাখিদের অভয়ারণ্য করার পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা বর্তমানে সময়ের দাবী। কিন্তু পাখি ঘেরা এই এলাকার রাস্তাগুলোর অবস্থা খুবই বেহাল। বর্ষা মৌসুমে পর্যটকরা রাস্তার কারণে গ্রাম ঘুরে পাখি দেখতে পান না। নেই দুরদুরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের বসার কোন স্থান।

তিনি আরো বলেন পাখিদের পায়খানা পরিস্কারের নেই কোন ব্যবস্থা। যার কারণে পাখির পায়খানার বিষ ক্রিয়ায় নানা সমস্যার সৃষ্টি ও ক্ষতি হচ্ছে অন্যান্য গৃহপালিত পশুপাখির। এতে করে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় এখানে বসবাসরত বাসিন্দাদের। এই পাখির অভয়ারন্যে আরো বেশি পর্যটকদের আকর্ষন করার জন্য প্রয়োজন অনেক কিছুই। আর প্রয়োজন কর্তা ব্যক্তিদের সুদৃষ্টি। কারণ কর্তা ব্যক্তিরা আশ্বাস দিতে পছন্দ করেন কিন্তু তার বাস্তবায়ন নিয়ে কোন মাথা ব্যথা থাকে না তাদের। যার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দীর্ঘ প্রায় ২০বছর যাবত। আমি দীর্ঘ সময় থেকে এই সমস্যাগুলো সরকারের বিভিন্ন মহলকে জানিয়েও আজ পর্যন্ত কোন উপকার পাওয়া যায় নাই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, জেলার আলিদেওনা গ্রামটি ঐতিহ্যবাহী পাখি গ্রাম হিসেবে সারাদেশের মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছে। পাখির অভয়ারণ্যসহ গ্রামটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করছি।

নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

ওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যাওয়া নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী নামক স্থানে গুটার বিলে গত বুধবার বিকালে স্থানীয় ‘হাঁসাইগাড়ী ছাত্র কল্যাণ সংস্থা’ এর আয়োজন করে। ৩০ থেকে ৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যের নৌকা নিয়ে প্রতিযোগিতায় মোট ৬টি দল অংশ গ্রহন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার নিজাম উদ্দীন জলিল জন।

সংস্থার সভাপতি জয়নাল আবেদিন জয়নালের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নির্মল কৃষ্ণ সাহা, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক, জেলা যুবলীগের সভাপতি এ্যাড: খোদাদাদ খান পিটুসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। পরে প্রধান অতিথি বিজয়ী তিন দলকে এলইডি টেলিভিশন তুলে দেন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিলের প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে হাজার হাজার নারী মানুষ, পরিবার-পরিজন নিয়ে নেচে-গেয়ে এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন।


প্রতিনিধি নওগাঁ: মৎস ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার খাল-বিল ও নদীর পানি কমতে শুরু করার সাথে সাথে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে দেশি নানা প্রজাতির মাছ। ফলে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে জমে উঠেছে দেশি মাছে ভরপুর আড়তগুলো।
 
হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে টেংরা, বাতাশি, কৈ, বোয়াল, আইড়, পাবদা, শোল, খলিশা, সরপুঁটি, গচি, শিং, রুই, কাতল, মৃগেলসহ প্রায় ৩০-৪০ প্রজাতির দেশি মাছ । দাম কোথাও একটু বেশি আবার কোথাও কম। প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত চলছে এ বেঁচাকেনা। বিভিন্ন জাতের দেশি মাছগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে কিনে যাচ্ছেন পাইকাররা।
নওগাঁ আত্রাইয়ের মাছের আড়তে খাল-বিলের দেশী মাছে ভরপুর

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন বৃহৎ মাছের আড়ত, ভবানীপুর বাজার, বান্দাইখাড়া বাজার, নওদুলি বাজার, শাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশন বাজারসহ বিভিন্ন মাছ বাজারে উঠছে এসব দেশি মাছ। সময়, স্থান-কাল ভেদে এবং ক্রেতাদের চাহিদা অনুপাতে বিভিন্ন দরে এসব মাছ পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে।
 
মৎস সংশ্লিষ্টরা জানান, এক সময় এই এলাকায় দেশি প্রজাতির মাছের প্রাচুর্য ছিল। নদী ও খাল-বিলে এসব মাছ ধরা পড়তো সহজেই। কিন্তু দিন দিন দ্রুত বর্ধনশীল মাছের বাণিজ্যিক চাষ, সংরক্ষণের অভাব ও নানা প্রাকৃতিক কারণে দেশি মাছের বহু জাতই বিলুপ্তি হয়েছিল। কিন্ত গত কয়েক বছরে মৎস বিভাগের উদ্যোগে বিল নার্সারি স্থাপন, পোনা মাছ অবমুক্ত, মা মাছ উৎপাদন বাড়াতে অভয়াশ্রম স্থাপনসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেয়ায় বর্তমানে বিলুপ্তি হওয়া বিভিন্ন প্রজাতির মাছের আবির্ভাব ঘটেছে।
 
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় আগের মতো মাছের আমদানি হচ্ছে না। মাছের আমদানি বাড়াতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরী। প্রতিদিন ভোর থেকে জেলেরা বিভিন্ন পরিবহনে করে বিক্রির জন্য মাছ নিয়ে আসেন আত্রাইয়ের মাছ বাজারের আড়ত গুলোতে। প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা চলে কেনাবেচা। খালে, বিলে, নদীতে দেশি মাছ ধরা পড়ায় নওগাঁর আত্রাইয়ে জমে উঠেছে মাছের আড়তগুলো। বেশির ভাগ বিক্রিত মাছ যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
 
মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই বাজারে মাছের ব্যবসা করে আসছি। আত্রাই ও আশপাশের এলাকা থেকে এই বাজারে দেশি মাছের আমদানি হয়। এই মাছগুলো আমরা আড়তের মাধ্যমে দিনাজপুর, পার্বতীপুর, সৈয়দপুর, রংপুরসহ উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি।
 
জেলার আত্রাই উপজেলাসহ আশপাশের চলনবিল, হালতিবিল, বিলসুতি বিলসহ আত্রাই নদীর মাছ নিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ের জেলেরা মাছ কেনাবেচার জন্য প্রতিদিন ভোরে এই মাছের আড়তে আসেন।
 
প্রতিদিন সকালে ট্রেনে করে নাটোর থেকে আত্রাই মাছের বাজারে মাছ কিনতে আসেন এমনই একজন ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, আত্রাই থেকে ভোরবেলা মাছ কিনে নাটোরের বিভিন্ন হাটে নিয়ে বিক্রি করেন তিনি। এতেই তাঁর সংসার চলে।
 
উপজেলার পতিসরের সন্দিপ কুমার জানান, প্রতিদিন ভোরবেলা তিনি এই মাছের হাটে আসেন। নদী ও বিলের বিভিন্ন জাতের মাছ হাট থেকে কিনে নিয়ে যান। পাবদা, পাতাসি, গুচি, ট্যাংরা, শৈল, শাটিসহ বিভিন্ন জাতের মাছ পাইকারি কিনে নিয়ে বিভিন্ন হাটে সারা দিন বিক্রি করেন।
 
আত্রাই মাছ বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজনু আকন্দ অভিযোগ করে বলেন, ভোরবেলা হাট বসার কারণে দূর-দূরান্তের পাইকারদের রাতেই হাটে এসে থাকতে হয়। কিন্তু এখানে থাকার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। টাকা-পয়সা নিয়ে পাইকাররা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রাত যাপন করেন। এ জন্য হাটে পাইকারদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
 
আত্রাই মাছ বাজার সমিতির সভাপতি বাবলু আকন্দ বলেন, আত্রাই মাছের আড়তের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছ আড়তে আনতে পারছেন না। অতিরিক্ত বর্ষায় আড়ত এলাকা পানির নিচে ডুবে যায়। প্রায় ৩৫ বছরের পুরোনো এই মাছের আড়ত থেকে দেশের উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মাছ সরবরাহ করা হয়। ঐতিহ্যবাহী এই মাছের আড়তটিকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, আড়তগুলো সংস্কারের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
 
আত্রাই উপজেলার আশপাশের চলনবিল, সিংড়া বিল, হালতিবিলসহ কমপক্ষে ১০টি বিল ও নদী এলাকার প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাছ প্রতিদিন কেনাবেচা হয় এই আড়তগুলোতে। অতিসত্বর যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা গেলে আত্রাই মাছের বাজার ফিরে পাবে তার হারিয়ে যাওয়া যৌবন।

১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস:

এক কাঙালী ভোজের ইতিকথা

বিশেষ প্রতিনিধি: আজ থেকে প্রায় ৩২ বছর আগের কথা। দেশে তখন হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসন চলছে। ঐ সময় রাজনৈতিক ডামাডোলে দেশ প্রায়ই উত্তাল থাকতো। ঐ সময় জাতির পিতার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক অনন্য বহিঃপ্রকাশ হয়ে উঠে বানিয়ারচর গ্রামে শোক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক কাঙালী ভোজ। জাতির জনকের জন্মস্থান হিসেবে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া বাংলাদেশের পুন্যভূমি।

এই গোপালগঞ্জের অন্তর্গত মুকসুদপুর উপজেলার আওতাধীন জলিরপাড় ইউনিয়নের বানিয়ারচর গ্রামের কয়েক সাধারণ মানুষ গত তিন দশক ধরে ১৫ আগষ্ট জাতির পিতার শাহাদত বার্ষিকি উপলক্ষ্যে স্থানীয় উদ্যোগে শোক দিবসের অংশ হিসেবে কাঙালী ভোজের আয়োজন করে আসছে। তিন দশক আগে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আজকের মত এতোটা স্বচ্ছল ছিল না। গ্রামের বেশীরভাগ মানুষই তখন অস্বচ্ছল ছিল। অধিকাংশ মানুষ দিন-মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। সেই অবস্থায় জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এই মানুষগুলোর অধিকাংশই একাডেমিক শিক্ষায় শিক্ষিত নন। কেউ কেউ হয়তো অনেক কষ্ট করে নিজের স্বাক্ষরটা করতে পারেন মাত্র।

উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি কোন কিছু আয়োজনের মূলে থাকে আর্থিক সমর্থন। কিন্তু তিন দশক আগে এই সমর্থন পাওয়াটা ছিল অত্যন্ত কঠিন কাজ। তখন কোন পক্ষ থেকেই কোন রকম আর্থিক সহায়তা পাওয়া যেত না। কিন্তু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হবে এবং গ্রামাঞ্চলে শোক দিবসের একটি বড় অংশ জুড়ে থাকে কাঙালী ভোজের আয়োজন অর্থ্যাৎ আর্থিক সহায়তা এখানে খুব বেশী প্রয়োজন।

বানিয়ারচর গ্রামের ঠিক মাঝামাঝি প্রধান সড়কের পাশে রয়েছে ছোট্ট একটি বাজার (বর্তমানে যার নাম নতুন বাজার)। এই বাজার প্রতি বছর ইজারা দেওয়া হয়। প্রথম দিকে এ বাজারটি এতটা সুপরিসর ছিল না। তখন ইউনিয়ন পরিষদ থেকেই এটি ইজারা দেওয়া হোত। বানিয়ারচর গ্রামের বাসিন্দা তুফান বিশ্বাস শুরু থেকে একটানা ১৫ বছর এই বাজারের ইজারা নিয়েছিলেন। এটা যেন ছিল ঐ সময় তার জন্য একচেটিয়া।

গ্রামের প্রাচীন ব্যাক্তিত্ব অনিল মণ্ডলের কাছ থেকে জানা যায় যে, তিন দশক আগে যখন বানিয়ারচর গ্রামের এই বাজারে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয় তখন তুফান বিশ্বাস তার ইজারাকৃত ঐ বাজারে আদায়কৃত পুরো এক মাসের সমূদয় অর্থ প্রায় ৩০০০ টাকা তার (অনিল মণ্ডল) হাতে তুলে দেন। ঐ সময় অনিল মণ্ডল ছিলেন বানিয়ারচর হতে নির্বাচিত ইউপি সদস্য। শুরু হল জাতীয় শোক দিবস পালনের প্রথম তহবিল গঠন। এভাবে তহবিল ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং বর্তমানে এ তহবিল লক্ষাধিক টাকায় উন্নীত হয়েছে।

ঐতিহ্যগতভাবে প্রতি বছর বানিয়ারচর বাজারে ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়। এ শোক দিবসে এলাকার হাজার হাজার মানুষ যোগদান করেন এবং কাঙালী-ভোজে অংশ নেন। গত তিন দশক ধরে যে সকল নিবেদিত প্রাণ জাতীয় শোক দিবস পালনের এই ঐতিহ্য নানা বাধাঁ-বিপত্তি অতিক্রম করে অতি সম্মানজনকভাবে ধরে রেখেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন: প্রয়াত প্রগতি হালদার, তুফান বিশ্বাস, অনিল মণ্ডল, প্রয়াত সুরেন বাইন, নীরু মণ্ডল, প্রয়াত বরেন্দ্র নাথ হীরা, অম্বরিশ বাড়ৈ, দিপক বাড়ৈ ও অধীর সাহা সহ বর্তমান প্রজন্মের প্রতিনিধি রকিম বৈরাগী, সমীর মণ্ডল, প্রণব হালদার, প্রদীপ হালদার, প্রেমানন্দ হালদার ও সঞ্জয় কির্তনীয়া সহ আরো অনেকে।

প্রতি বছর আগষ্ট মাস শুরু হলেই এই মানুষগুলোর ব্যস্ততা যেন অনেক বেড়ে যায়। ২০১৯ সালের জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য প্রথম বারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। এই পরিচালনা কমিটিতে কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশস্বরূপ তুফান বিশ্বাসকে সভাপতি নির্বাচন করা হয় যার বয়স বর্তমানে প্রায় ৯০ বছর। কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন অনিল মণ্ডল এবং কোষাধ্যক্ষ হিসেবে আছেন প্রদীপ হালদার। এছাড়াও সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন নীরু মণ্ডল, মনমথ বৈরাগী ও রকিম বেরাগী। এবারের জাতীয় শোক দিবস দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে পালন করা হয়েছে যা খুবই সুখকর।।

চিকিৎসা ব্যস্থার উন্নতি আর বিনামুল্যে ঔষধ প্রদানের কারনে সরকারী হাসপাতালে রোগির সংখ্যা বৃদ্ধি 
বিগত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে নওগাঁ হাসাপাতালে মোট ৩,৫৮,৯৮৫ রোগি চিকিৎিসা সেবা গ্রহন করেছেন
 
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁয় চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধি, চিকিৎসকদের চিকিৎসা প্রদানে অধিক আগ্রহের সৃষ্টি এবং সরকারীভাবে রোগীদের বিনামুল্যে ঔষধ সরবরাহের কারনে জেলা শহরে অবস্থিত আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা গ্রহিতাদের সংখ্যা ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

নওগাঁ জেলা সদরে অবস্থিত আধুনিক হাসপাতালে প্রতিদিন জেলার ১১টি উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা এবং বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলা থেকে হাজার হাজার রোগি এই হাসপাতালে আউটডোরে এবং ইনডোরে চিকিৎসা নেয়ার জন্য ভীড় জমাচ্ছেন। বিশেষ করে প্রতিদিন আউটডোরে এত রোগি আসেন যে সেখানে তিল ধারনের ঠাঁই থাকেনা।

নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: রওশন আরা খানম বলেছেন, প্রতিদিন এই হাসপাতালে গড়ে ২ থেকে আড়াই হাজার মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। তাঁর দেয়া হিসাব অনুযায়ী বিগত ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে কেবলমাত্র নওগাঁ জেলা সদরে অবস্থিত আধুনিক হাসপাতালে মোট ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯শ ৮৫ জন রোগি চিকিসাসেবা গ্রহন করেছেন। এর মধ্যে আন্ত:বিভাগে ২৯ হাজার ৭শ ২ জন, জরুরী বিভাগে ৪৪ হাজার ৪শ ৬২ জন এবং বহি:র্বিভাগে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮শ ২১ জন। গত জুলাই’১৮ থেকে জুন’১৯ মাস পর্যন্ত এই পরিমান রোগি চিকিৎসাসেবা গ্রহন করেছেন।

সূত্রমতে মাস ভিত্তিক চিকিৎসাসেবা গ্রহণকৃত রোগির পরিমান হচ্ছে জুলাই’১৮ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৩২৩ জন, জরুরী বিভাগে ৫০৩৬ জন ও বহি:র্বিভাগে ২২,৯৭১ জনসহ সর্বমোট ৩০ হাজার ৩শ ৩০ জন, আগষ্ট’১৮ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৬১৮ জন, জরুরী বিভাগে ৩২৯৪ জন ও বহি:র্বিভাগে ১৮,৫৭৭ জনসহ সর্বমোট ২৪ হাজার ৪শ ৮৯ জন, সেপ্টেম্বর’১৮ মাসে আন্ত:বিভাগে ২১৮৭ জন, জরুরী বিভাগে ২৯৪২ জন ও বহি:র্বিভাগে ২৫১৫৫ জনসহ সর্বমোট ৩০ হাজার ২শ ৮৪ জন, অক্টোবর’১৮ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৩২৮ জন, জরুরী বিভাগে ২৬১৩ জন ও বহি:র্বিভাগে ২৬,৩৩৭ জনসহ সর্বমোট ৩১ হাজার ২শ ৭৮ জন, নভেম্বর’১৮ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৫৯১ জন, জরুরী বিভাগে ২৪৮৫ জন ও বহি:র্বিভাগে ২৩,৬৭৭ জনসহ সর্বমোট ২৮ হাজার ৭শ ৫৩ জন, ডিসেম্বর’১৮ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৪৬১ জন, জরুরী বিভাগে ২১৫৫ জন ও বহি:র্বিভাগে ১৮,৩৭২ জনসহ সর্বমোট ২২ হাজার ৯শ ৮৮ জন, জানুয়ারী’১৯ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৯৬০ জন, জরুরী বিভাগে ৫৪০৫ জন ও বহি:র্বিভাগে ২৫,১২৪ জনসহ সর্বমোট ৩৩ হাজার ৪শ ৮৯ জন, ফেব্রুয়ারী’১৯ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৪৯৪ জন, জরুরী বিভাগে ২৭৫৯ জন ও বহি:র্বিভাগে ২৪,৭৩৯ জনসহ সর্বমোট ২৯ হাজার ৯শ ৯২ জন, মার্চ’১৯ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৪৯১ জন, জরুরী বিভাগে ৫৮১৭ জন ও বহি:র্বিভাগে ২৯০১২ জনসহ সর্বমোট ৩৭ হাজার ৩শ ২০ জন, এপ্রিল’১৯ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৪৯৯ জন, জরুরী বিভাগে ৩৬০৭ জন ও বহি:র্বিভাগে ২৭,৬৩৬ জনসহ সর্বমোট ৩৩ হাজার ৭শ ৪২ জন, মে’১৯ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৪৩৫ জন, জরুরী বিভাগে ৪০২৮ জন ও বহি:র্বিভাগে ২১,১৪৬ জনসহ সর্বমোট ২৭ হাজার ৬শ ৯ জন এবং জুন’১৯ মাসে আন্ত:বিভাগে ২৩১৫ জন, জরুরী বিভাগে ৪৩২১ ও বহি:র্বিভাগে ২২,০৭৫ জনসহ সর্বমোট ২৮ হাজার ৭শ ১১ জন।

নওগাঁর আত্রাইয়ে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি ঘর

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ): নওগাঁর আত্রাইয়ে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার চির ঐতিহ্য নিদর্শন সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা শান্তির নীড় মাটির তৈরি বাড়ি (ঘর)। যা এক সময় ছিল গ্রামের মানুষের কাছে মাটির বাড়ি বা ঘর গরিবের এসি বাড়ি নামে পরিচিত। কিন্তু কালের আবর্তে আজ হারিয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি ঘর।

বেশি দিনের কথা নয়, বাংলার প্রতিটি গ্রামে নজরে পরতো এই মাটির বাড়ি ঘর। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশা-পাশি প্রচুর গরম ও শীতে বসবাস উপযোগী মাটির তৈরি বাড়ি ঘর।  এসব মাটির বাড়ি ঘর আর তেমন একটা নজরে পড়ে না। আধুনিকতার ছোঁয়ায় আর সময়ের পরিবর্তে গ্রাম বাংলা থেকে ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাড়ি ঘর বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এই বাড়ি ঘর শীত ও গরম মৌসুমে আরামদায়ক বলে গ্রামের  অনেক বিত্তবানও এই মাটির দ্বিতল বাড়ি ঘর তৈরি করেন।
নওগাঁর আত্রাইয়ে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি ঘর

জানা যায়, অতি প্রাচীনকাল থেকেই মাটির বাড়ি বা ঘরের প্রচলন ছিল। গ্রামের মানুষের কাছে এই বাড়ি বা ঘর ঐতিহ্যের প্রতীক ছিল। গ্রামের বিত্তবানরা এক সময় অনেক অর্থ ব্যয় করে মজবুত মাটির দ্বিতল বাড়ি ঘর তৈরি করতেন। যা এখনও কিছু কিছু গ্রামে চোখে পড়ে। এঁটেল বা আঠালো মাটির কাঁদায় পরিণত করে ২-৩ ফুট চওড়া করে দেয়াল বা ব্যাট তৈরি করা হয় ১০-১৫ ফুট উঁচু। দেয়ালে কাট বা বাঁশের শিলিং তৈরি করে তার ওপর খর বা টিনের ছাউনি দেয়া হয়। মাটির বাড়ি ঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হতো। সব ঘর বড় মাপের হয়না। গৃহিনীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা  এঁকে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয় বলে বর্তমান সময়ে দীর্ঘ স্থায়ীত্বের কারণে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি নির্মাণের আগ্রহী হচ্ছেন। ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি একটি মাটির বাড়ি শত বছরেও বেশি স্থায়ী হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে কালের বিবর্তনে ইটের দালানকোটা আর বড় বড় অট্রালিকার কাছে হার মানছে মাটির বাড়ি ঘর।

উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের আজাদ সরদার, ভবানীপুরের রমজান আলী, রসুলপুর গ্রামের মোবারক আলী, হাতিয়াপাড়া গ্রামের হাফিজুল, আয়তালী ও আব্দুস সামাদসহ আরো অনেকে জানান, মাটির তৈরি এই বাড়ি ঘর তারা পেয়েছেন পৈত্রিক ভাবে। তাদের পূর্ব পুরুষরাও এই মাটির তৈরি বাড়িতেই জীবন কাটিয়ে গেছেন। তাই এখনও তারা এই বাড়িগুলো ভাঙ্গেনি। মাটির বাড়ি বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের পরিবর্তনে আধুনিকতার সময় অধিকাংশ মাটির বাড়ি ঘর ভেঙ্গে অধিক নিরাপত্তা ও স্বল্প জায়গায় দীর্ঘ স্থায়ী ভাবে অনেক লোকের নিবাস কল্পে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি ঘর তৈরি করছেন বলে অনেকের ধারনা।

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget