Articles by "ধর্ম"
92 অন্যান্য 51 অর্থনীতি 24 আইন ও আদালত 76 আন্তর্জাতিক 588 এক ঝলক 3 কক্সবাজার 1 কবিতা 22 কিশোরগঞ্জ 4 কুড়িগ্রাম 6 কুমিল্লা 1 কুষ্টিয়া 3 কৃষি 107 কৃষি ও প্রকৃতি 10 ক্রিকেট 1 খাগড়াছড়ি 73 খেলাধুলা 45 গণমাধ্যম 12 গাইবান্ধা 1 গাজীপুর 17 চট্টগ্রাম 5 চাঁদপুর 5 চাঁপাইনবাবগঞ্জ 2 চুয়াডাঙ্গা 14 জয়পুরহাট 1 জাতীয় 3 জামালপুর 1 জোকস 6 ঝনিাইদহ 246 ঝালকাঠি 12 ঝিনাইদহ 4 টাঙ্গাইল 44 ঠাকুরগাঁও 39 ঢাকা 1 থী 3 দিনাজপুর 4784 দেশজুড়ে 42 ধর্ম 3414 নওগাঁ 14 নাটোর 2 নারায়ণগঞ্জ 1 নিহত ২ 1 নীলফামারীর 2 নেত্রকোনা 1 নোয়াখালী 3 পঞ্চগড় 4 পিরোজপু 2 প্রকৃতি 2782 প্রথম পাতা 23 প্রবাস 1 ফরিদপুর 17 ফিচার 8 ফুটবল 1 ফেনী 94 বগুড়া 2 বলিউড 58 বাগমারা 82 বিএমএসএফ 31 বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 53 বিনোদন 51 বেনাপোল 2 ব্রাক্ষণবাড়িয়া 1 ব্রাহ্মণবাড়িয়া 51 ভিডিও 18 ভোলা 8 ভ্রমণ 59 ময়মুনসিংহ 1 মাগুরা 1 মাদারীপু 2 মাদারীপুর 1 মানিকগঞ্জ 1 মেহেরপুর 495 যশোর 5 রংপুর 103 রাজনীতি 3 রাজবাড়ী 95 রাজশাহী 3 লক্ষ্মীপুর 24 লাইফস্টাইল 2 লালমনিরহা 41 শিক্ষা 1 শ্রীপুর 891 সকল জেলা 2 সাতক্ষীরা 9 সিরাজগঞ্জ 3 সিলেট 63 সুনামগঞ্জ 31 স্বাস্থ্য 4 হবিগঞ্জ 1 হলিউড 10 bmsf

বিশ্বনবীকে কটুক্তি করার অভিযোগে নওগাঁয় আবারও এক যুবক গ্রেফতার

আতাউর শাহ্, নওগাঁ :  "বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" কে কটুক্তি করার, অভিযোগে নওগাঁর মান্দা উপজেলার মান্দা সদর ইউনিয়নের ঘাটকৈর বাজার থেকে শ্রী জয়দেব কুমার (২৪) নামে এক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক জয়দেব কুমার উপজেলার বৈলশিং গ্রামের  শ্রী দিপেন্দ্রনাথ চন্দ্রের ছেলে। গত বুধবার রাত সোয়া ৯ টার দিকে "হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" এর জন্ম নিয়ে কটুক্তি করায় তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, আটককৃত জয়দেব ঘাটকৈর বাজারে ঔষধের দোকানদার ও পল্লী চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৯ টার দিকে তার বন্ধু ও  কৈবারা গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে আতুল (২৮) কে বলেন, "হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" এর জন্ম তার পিতার মৃত্যুর অনেক পরে হয়েছে। এ হিসেবে তিনি ("হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম") হচ্ছেন একজন নাম-পরিচয়হীন জারজ সন্তান ; নাউজুবিল্লাহ। এ নিয়ে অতুল তার বন্ধু জয়দেবের সাথে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। পরবর্তীতে এ কথাটি আতুল বাজারের মধ্যে উপস্থিত  মুসলমানদের জানালে সাথে সাথে এলাকার বিক্ষুব্ধ মুসলমানরা জয়দেবকে আটক করে রাখে।

পরবর্তীতে বিষয়টি স্থানীয়রা মান্দা থানায় অবহিত করলে থানার ওসি, ওসি (তদন্ত) সহ থানা পুলিশের সব সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণপূর্বক জয়দেবকে বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে নিরাপদে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও পুলিশের হস্তক্ষেপে কোন অঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সবকিছু স্বাভাবিক ও নিরাপদ ছিল।

মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিনুর রহমান বিশ্বনবীকে কটুক্তির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে এব্যাপারে কেউ বাদী না হওয়ায় আপাতত ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয় বলেও জানান তিনি।

 
নওগাঁর মহাদেবপুরে মহানবী (সাঃ)কে ফেসবুকে কটুক্তি করায় আটক ১
ষ্টাফ রিপোটার, নওগাঁ :নওগাঁর মহাদেবপুরে মহানবি (সা:) কে অবমানা করে ফেসবুকে কুটক্তি করায় পল্লব কুমার মহন্ত নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। শনিবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এলাকাবাসী তার বাড়ীর কাছে তাকে আটক করে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে রাত ২টার দিকে থানায় নিয়ে আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত দুই দিন আগে সরস্বতীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী পল্লব কুমার মহন্ত তার ফেসবুক আইডি থেকে মহানবি (স.) কে কুটক্তি করে ফেসবুকে কমেন্ট করে। তার সে কুটক্তিপূর্ণ বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হলে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরাসহ ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা মহানবি (সা:) এর অবমাননার প্রতিবাদে ও পল্লব কুমার মহন্তকে গ্রেফতারের দাবীতে মিছিল বের করে। গ্রেফতারকৃত পল্লব কুমার মহন্ত উপজেলা সদরের দক্ষিণ দুলালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও সরস্বতীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পরিমল কুমার মহন্তের ছেলে।

নওগাঁর মহাদেবপুরে মহানবী (সাঃ)কে ফেসবুকে কটুক্তি করায় আটক ১
এবিষয়ে সরস্বতীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সায়েম প্রতিবেদককে বলেন, আমার বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০২২ সালের পরীক্ষার্থী ছাত্র পল্লব কুমার মহন্তকে ফেইসবুকে ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে শুনেছি।

এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আজম উদ্দিন মাহমুদ প্রতিবেদককে জানান, গ্রেফতারকৃত পল্লব কুমার মহন্তের বিরুদ্ধে ৫৪ ধারায় মামলা দায়ের করে রোববার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন তার ফেসবুক আইডিতে ট্যাটাস দিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের কথা স্বীকার করে সকলকে আইনের প্রতি আস্থা রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।

কোরবানি ও আকিকা একসঙ্গে দেওয়া যাবে?

আজকের দেশসংবাদ ডেস্ক : কুরবানী ও আকিকা আলাদা বিষয়। তাই একটিকে অপরটির স্থলাভিষিক্ত না করা উত্তম। তবে, একত্রে করলেও তা আদায় হয়ে যাবে। কারণ আকিকাও এক ধরনের কোরবানি। হাদিসে আকিকার ওপরও ‘নুসুক’ শব্দের প্রয়োগ হয়েছে। আর ‘নুসুক’ অর্থ কোরবানি।

আকিকাও যেহেতু ‘নুসুক’ বা কোরবানি তাই এ মূলনীতিতে কোরবানির পশুতে সন্তানের আকিকা দেওয়া দোষণীয় নয়। এতে কোরবানি ও আকিকা দুইটিই শুদ্ধ হবে। ফতোয়ায়ে শামিসহ ফতোয়ার কিতাবাদিতে বলা হয়েছে যে, কোরবানির সাথে আকিকা শুদ্ধ। (রদ্দুল মুখতার: ৬/৩২৬; হাশিয়াতুত তহতাভি আলাদ্দুর: ৪/১১৬)

কোরবানির গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরিক হলে ছেলের আকিকার জন্য দুই অংশ আর মেয়ের জন্য এক অংশ দিতে হবে। (ইলাউস সুনান: ১৭/১২৬)

সন্তান জন্মের পর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের উদ্দেশে জন্মের সপ্তম দিনে পশু জবাই করাকে আকিকা বলে। আকিকা করা মোস্তাহাব। হাদিসে আকিকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসুল (স.)-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সন্তানের আকিকা করার ইচ্ছা করে, সে যেন তা পালন করে। ছেলের জন্য সমমানের দুইটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭৯৬১)

অন্য হাদিসে আছে, সন্তানের সঙ্গে আকিকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (অর্থাৎ পশু জবাই করো) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও। (বুখারি: ৫৪৭২)

মনে রাখতে হবে, সাতজনে মিলে কোরবানি করলে— সবার অংশ সমান হতে হবে এবং কারও অংশ এক সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না। যেমন কারও আধা ভাগ হলে কোনো শরিকের কোরবানিই শুদ্ধ হবে না। (বাদায়িউস সানায়ে: ৪/২০৭)

উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ। (সহিহ মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

আকিকার গোশত সন্তানের পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন সবাই খেতে পারবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আকিকার গোশত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং কিছু সদকা করবে। (মুসতাদরাকে হাকেম: ৭৬৬৯)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরবানি ও আকিকা সুন্নাহ মেনে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন উপলক্ষে নওগাঁয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা

তৌফিক তাপস,নওগাঁ : পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উদযাপন উপলক্ষে নওগাঁয় ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার সকালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জিলা স্কুল হল রুমে এই প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ। সভায় জেলা ইসলামি ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক আমিন উদ্দিন মাহমুদ, নামাজগড় গাউসুল আজম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আদম আলী ও প্রভাষক রেজওয়ান আহসান প্রমুখ। বক্তারা হয়রত মুহাম্মদ (সা:) এর জীবনাদর্শনের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন।


নওগাঁয় সপ্তমী পূজা শুরু

তৌফিক তাপস, নওগাঁ : মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সকালে নওগাঁর মন্ডপে মন্ডপে শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসবের সপ্তমী পূঁজা। সকালে পুজা মন্ডপগুলোর দূর্গা দেবীকে পূঁজার অর্ঘ দিয়ে শুরু হয় সপ্তমী পূঁজার নানান আয়োজন।

তবে এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রেখে করোনা অতিমারীর কারণে উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে শুধুমাত্র সাত্ত্বিক ভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পুজা শুরুর সাথে সাথে মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠে ঢাকের বাজনা। সপ্তমী পূজায় পূজারি ও মন্দিরের পরিচালনা কমিটির স্বল্প পরিসরে লোকজনদের দেখা গেছে। নওগাঁয় এ বছর ৮১৯ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পঞ্জিকা অনুসারে এবারে দেবী দূর্গা আগমন ঘোটবে। যাবে দোলায় চড়ে। এরই মধ্যে বয়ে আনবে মানুষের জন্য মঙ্গলবার্তা। এমনটাই আশা হিন্দু সম্প্রদায়ের সকলের।


চেয়ারে বসে নামাজ পড়া যাবে কি


মানুষের সাধ্যের বাইরে কোনো কিছু ইসলাম চাপিয়ে দেয়নি। কারণ, ইসলাম সহজাত, জীবনঘনিষ্ঠ ও স্বভাবজাত ধর্ম। আল্লাহর দেওয়া সব বিধানের মধ্যে নামাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অসুস্থ হলেও নামাজ আদায় করতে হয়। তবে সে ক্ষেত্রে ইসলাম কিছুটা অবকাশ দিয়েছে।

সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বসে নামাজ পড়ার বিধান

ইসলাম অসুস্থের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রেখেছে। ভিন্ন পদ্ধতিতে নামাজ আদায়ের সুযোগ দিয়েছে। তবে এর জন্য বিশেষ নীতিমালা রয়েছে। দাঁড়াতে ও সিজদা করতে সক্ষম— এমন ব্যক্তির জন্য নামাজে কিয়াম বা দাঁড়ানো ফরজ।

দাঁড়াতে বা সিজদা আদায়ে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও যদি কেউ ফরজ-ওয়াজিব নামাজ বসে আদায় করে, তবে নামাজের ফরজ ছেড়ে দেওয়ার কারণে তার নামাজ হবে না। নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। (দুররে মুখতার, জাকারিয়া বুক ডিপো : ২/১৩২)

হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়

সিজদা করতে সক্ষম ব্যক্তি যদি নামাজের কিছু অংশে দাঁড়াতে সক্ষম হয় এবং পুরো সময় দাঁড়িয়ে থাকতে অপারগ থাকে, তবে যেটুকু সময় দাঁড়াতে পারবে, তা কোনো লাঠি বা দেয়ালের সঙ্গে ঠেস দিয়ে হলেও সেটুকু দাঁড়ানো ফরজ। এ অবস্থায় যদি না দাঁড়ায় এবং কোনো কিছুর ওপর হেলান দিয়ে দাঁড়ানোর পরিবর্তে বসেই নামাজ আদায় করে, তবে নামাজ হবে না। (দুররে মুখতার : ২/২৬৭)

কেউ যদি দাঁড়াতে সক্ষম, কিন্তু রুকু-সিজদা বা শুধু সিজদা করতে সক্ষম না হয়, তার জন্য বসে নামাজ আদায় করা জায়েজ। সে ইশারার মাধ্যমে রুকু-সিজদা করবে। এ ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে ইশারার মাধ্যমে নামাজ আদায় করার চেয়ে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করা উত্তম। (দুররে মুখতার : ২/৫৬৭, ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ১/১৩৬)

না দাঁড়ানোর সুযোগ রয়েছে যখন

কিছু অক্ষমতা রয়েছে, যেগুলোর কারণে দাঁড়ানোর আবশ্যকতা রহিত হয়ে যায়। তা সাধারণত দুই প্রকার :

এক. হাকিকি বা মৌলিক অর্থাৎ এমন অক্ষম, যে দাঁড়াতে পারে না।

দুই. হুকমি বা বিধানগত অর্থাৎ সে এমন অক্ষম নয় যে দাঁড়াতে পারে না, বরং দাঁড়ালে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অথবা এমন দুর্বলতা থাকে, যা শরিয়তের দৃষ্টিতে অক্ষমতা বলে বিবেচিত।

যেমন- অসুস্থতা, যার ব্যাপারে অভিজ্ঞ মুসলিম ডাক্তাররা পরামর্শ দেন যে দাঁড়ালে রোগ বৃদ্ধি পাবে অথবা সুস্থতা ফিরে আসতে বিলম্ব হবে কিংবা দাঁড়ানোর কারণে অসহনীয় ব্যথা অনুভূত হয়—এসব অবস্থায় বসে নামাজ আদায় করা জায়েজ। (দুররে মুখতার মাআ রদ্দুল মুহতার : ২/৫৬৫)

চেয়ারে নামাজ আদায় বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই বিধান

যে ক্ষেত্রে শরয়ি ওজরের কারণে চেয়ারে বসে ইশারার মাধ্যমে নামাজ আদায় করার অনুমতি রয়েছে, সে ক্ষেত্রে সিজদার সময় ইশারার ওপরই ক্ষান্ত হওয়া উচিত। উল্লিখিত দীর্ঘ আলোচনার সংক্ষিপ্ত নিম্নরূপ :

এক. যে ব্যক্তি দাঁড়াতে সক্ষম নয়, কিন্তু যেকোনোভাবে মাটিতে বসে রুকু-সিজদা করে নামাজ আদায় করতে পারে, তাকে মাটিতে বসেই রুকু-সিজদা করে নামাজ আদায় করতে হবে। চেয়ার ইত্যাদিতে বসে ইশারায় রুকু-সিজদা করে নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে না।

দুই. আর কেউ যদি দাঁড়াতে পারে, কিন্তু কোমর বা হাঁটুতে প্রচণ্ড ব্যথা হওয়ায় সিজদা করার শক্তি না রাখে অথবা সে মাটিতে বসতে পারে, কিন্তু রুকু-সিজদার শক্তি রাখে না, এরূপ লোক মাটিতে বসে নামাজ আদায় করবে। চেয়ার ইত্যাদির ব্যবহার তাদের জন্য উচিত নয়। হ্যাঁ, যদি কোনোভাবেই মাটিতে বসা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে, তখন চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করা যেতে পারে। এ অবস্থায় চেয়ার ব্যবহার করলেও সাদামাটা চেয়ার ব্যবহার করবে। আসলে অসুস্থ ব্যক্তির অবস্থাভেদে চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের বিভিন্ন হুকুম হতে পারে। তাই এ বিষয়ে ঢালাও মন্তব্য কাম্য নয়।


লেখক ও গবেষক

জুমার নামাজ পড়তে না পারলে কি করবেন


ক্বারী মাওলানা মো: জাহাজ্ঞীর আলম : হে ঈমানদারগণ! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য (আজানের মাধ্যমে) আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা দ্রুত আল্লাহর স্মরণে ছুটে চল এবং বেচা-কেনা বন্ধ করে দাও। এটি তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা উপলব্দি করতে পার।’ (সুরা জুমা: আয়াত ৯)। এ আয়াতের মাধ্যমে জুমা আদায় করা মানুষের জন্য আবশ্যক করা হয়েছে। এজন্য প্রতিটি মুসলিমকে অবশ্যই জুমার নামাজ গুরুত্বসহ পড়া উচিত। হাদিসে প্রত্যেকে প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির জন্য জুমা আবশ্যক। 

হজরত হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব তথা অপরিহার্য কর্তব্য।’ (নাসাঈ)

আবার জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়া মারাত্মক অপরাধ। আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘন। কেননা জুমার নামাজ পড়া আল্লাহর নির্দেশ। যারা এ নামাজ ছেড়ে দেয়, তাদের প্রসঙ্গে হাদিসের ভয়বাহ অপরাধ ও শাস্তির কথা বর্ণনা করা হয়েছে। হাদিসে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি অবহেলা ও অলসতা করে পর পর তিন জুমার নামাজ পড়া ছেড়ে দেবে, মহান আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দেবেন।’ (আবু দাউদ)

অন্য হাদিসে এসেছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ওজর এবং অনিষ্টের ভয় ছাড়া জুমার নামাজে অংশগ্রহণ করে না, ওই ব্যক্তির নাম মুনাফিকের এমন দপ্তরে লেখা হয়, যেখান থেকে তার নাম কখনো মোছা কিংবা রদবদল করা হয় না।

জুমার নামাজে মাসবুক হলে

কোনো ব্যক্তি যদি জুমার নামাজ পড়তে এসে এক রাকাআত পায় তবে সে ইমামের সালাম ফেরানোর পর বাকি এক রাকাআত পড়ে নিলেই জুমা আদায় হয়ে যাবে। অনুরুপভাবে কেউ দ্বিতীয় রাকআতের রুকূর আগে ইমামের সঙ্গে নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারলে ইমামের সালাম ফেরানোর পর ২ রাকাআত আদায় করলে জুমার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু যদি কেউ নামাজের দ্বিতীয় রাকআতে রুকুর পর জামাআতে অংশগ্রহণ করে তবে তার এ অংশগ্রহণ জুমা হিসেবে বিবেচিত হবে না। বরং তাকে ইমামের সালাম ফেরানোর পর ৪ রাকাআত নামাজ আদায় করতে হবে।

জামাআতে অংশগ্রহণের সময় জোহরের ৪ রাকাত নামাজ আদায়ের নিয়তে শমিল হবে এবং তা আদায় করে নেবে। হাদিসে এসেছে- হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার এক রাকাত পেয়ে যায়, সে যেন আর এক রাকাত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের) রুকূ না পায়, সে যেন জোহরের ৪ রাকআত পড়ে নেয়।’ (তাবারানি, বায়হাকি, মুসান্নেফে ইবনে আবি শায়বা)

আর যদি কোনো ব্যক্তি জুমার নামাজ না পায় বা মসজিদে গিয়ে দেখে জুমার নামাজ শেষ হয়ে গেছে তবে ওই ব্যক্তি জোহরের ৪ রাকাত নামাজ পড়ে নেবে। কারণ জামাআত ছাড়া একা একা জুমার নামাজ পড়া যায় না।

যারা জুমার নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাবে, তারা অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে খোতবা শুনবে। কোনো ধরনের কথা না বলে ইমামের খোতবায় গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা জুমার খোতবা শোনা মুসল্লির জন্য ওয়াজিব। মনে রাখতে হবে, কেউ কথা বললে, তাকে- ‘চুপ কর’ কথাও বলা যাবে না। হাদিসে এসেছে- হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ইমামের খোতবা দেয়া অবস্থায় যদি তুমি তোমার সাথীকে বল- ‘চুপ কর’, তাহলে তুমি অনর্থক কথা বললে।

অন্য বর্ণনা এসছে, ‘এ কথাটা বেশি আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রকম অনর্থক কাজ করল, তার জন্য ওই জুমআয় আর কিছু রইল না।’ সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত জুমার নামাজ গুরুত্বসহ আদায় করা এবং জুমার খোতবা মনোযোগের সঙ্গে শোনা। একান্তই যদি কেউ নামাজ না পায় তবে জোহরের নামাজ আদায় করে নেয়া।

শিক্ষক, লেখক,ও গবেষক

মানব জীবনে হারাম উপার্জনের প্রভাব


অধ্যক্ষ এম সোলাইমান কাসেমী : মহান আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের প্রদান করেছেন যথার্থ পথনির্দেশ। তাকে কখনোই থাকতে হয় নি দিশেহারা হয়ে। আল্লাহ তায়ালা বলেন ‘আমি প্রতিটি জাতির জন্যই রাসুল প্রেরণ করেছি।’ [আল কুরআন] মহাগ্রন্থ আল কুরআন অবতরণের মাধ্যমে মুহাম্মদ (সা.) এর দ্বারা মানব জাতিকে প্রদান করা হয় পূর্ণাঙ্গ এক জীবনব্যবস্থা। তাদের জন্য করণীয়-বর্জনীয় সব কিছুর স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে তাতে। মহান আল্লাহ তায়ালা সকল সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা। তাই সৃষ্টির মন্দ এবং ভালো সম্পর্কে তিনিই সর্বাধিক পরিজ্ঞাত। সৃষ্টির জন্য কল্যাণকর বিষয়কে তিনি বৈধ করেছেন আর অকল্যাণকর বিষয়কে করেছেন অবৈধ।

হারাম ইসলামি শরিয়তের একটি পরিচিত পরিভাষা। অর্থ অবৈধ, নিষিদ্ধ, অননুমোদিত। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় যে সকল বিষয়ের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে অকাট্য দলিল রয়েছে তাকে হারাম বলে। প্রতিটি ক্রিয়ারই কোনো না কোনো প্রতিক্রিয়া রয়েছে। হারামও এর ব্যতিক্রম নয়। ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে হারামের বিস্তৃত প্রভাব রয়েছে। মন্দ খাদ্য খেলে শরীরে যেমন মন্দ প্রভাব দেখা যায়, ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে হারামেরও তেমন মন্দ প্রভাব রয়েছে।

সাধারণত মানুষ যে সব হারামে লিপ্ত হয় তা হলো, খাদ্য গ্রহণ, উপার্জন ও হারাম কাজ সম্পাদন। হারাম খাদ্য গ্রহণের দ্বারা মানব মনে সৎ কাজের ইচ্ছা হ্রাস পায় এমন পাপ কাজের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়। ইসলামী চিন্তক মুহিতুল ইসলাম সিদ্দিকী আদিল বলতেন, আমি একবার এক দাওয়াতে গেলাম। আর আগে থেকে আমার জানা ছিলো না যে, ঐ ব্যক্তির উপার্জন হারাম। না জানার কারণে এই ভেবে চলে গিয়ে ছিলাম যে, সে তো একজন মুসলিম। সুতরাং তার উপার্জন হালাল হবে এটাই স্বাভাবিক। কিছু খানা খেয়েও ফেললাম। এক পর্যায়ে জানতে পারলাম, তার উপার্জন হারাম। তখন সাথে সাথে খানা ছেড়ে উঠে গেলাম। কিন্তু ঐ যে না জেনে কয়েক লোকমা খেয়েছিলাম, তার মন্দ প্রভাব কয়েক মাস পর্যন্ত অনুভব করলাম। আর তাহলো, বারবার মনে গুনাহর ইচ্ছা জাগতো যে, অমুক গুনাহ করি, অমুক গুনাহ করি।

হারাম কাজ করার দ্বারা ব্যক্তির লজ্জাশীলতা হ্রাস পায়। মন থেকে আল্লাহ ভীতি কমে যায়। সমাজে অনিষ্টের সৃষ্টি হয়। পরকালীন শাস্তির উপযুক্ত হতে হয়। মানব জীবনে হারামের যে সব দিক রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম বিষয় হলো হারাম উপার্জন। ব্যক্তি যদি হারাম উপার্জন করে তাহলে সে স্বাভাবিকভাবেই হারাম আহার করে। হারাম পরিধান করে। আর এ সম্পর্কে ইসলামে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। হারাম কাজ করার মাধ্যমে আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) এর বিরুদ্ধাচারণ করা হয়। কেননা কুরআন ও হাদিসে হালাল ও হারামকে  পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এ কারণে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য হালাল উপার্জন করা ওয়াজিব। এ সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় হালাল স্পষ্ট এবং হারাম স্পষ্ট এ দুটির মাঝে সন্দেহযুক্ত বিষয় আছে অনেক লোক তা জানে না। যে সন্দেহযুক্ত জিনিস থেকে বেঁচে থাকবে সে তার দিন এবং সম্মানকে ত্রুটি মুক্ত রাখলো। আর যে সন্দেহযুক্ত জিনিষের মধ্যে পতিত হলো সে হারামের মধ্যে পতিত হলো।

যদি কেউ এ সম্পর্কে না জানে তাহলে তার জ্ঞানীদের নিকট থেকে জেনে আমল করা ওয়াজিব। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞেস কর, যদি তোমরা না জানো।’ [সূরা নাহল:৪৩] হারাম খাদ্য দ্বারা গড়া শরীর কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করবে না। জান্নাতে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে হারাম অনেক বড় একটি প্রতিবন্ধক।

এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘আর যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা গড়ে ওঠে তার জন্য দোজখের আগুনই উত্তম। [জামিউস সগির: ৮৬৪৮] হারাম উপার্জনের দান আল্লাহ কবুল করেন না। অনেকে হারাম সম্পদ উপার্জন করে পাপমোচনের আশায় দান খয়রাত করে থাকেন। হারাম উপার্জনের দানে সাওয়াব হওয়া তো দূরের কথা এ দান আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন না। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলূল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা পবিত্রতা ছাড়া কোনো সালাত কবুল করেন না, আর হারাম উপার্জনের দানও আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন না।’ [ইবনে খুজাইমাহ: ১০] হারাম উপার্জনের দ্বারা সমাজে জুলুম অত্যাচারের দ্বারা উন্মোচিত হয়। যেমন ঘুষ নেয়া হারাম। এর দ্বারা স্পষ্টভাবে সৃষ্টির উপর জুলুম করা হয়। ঘুষের সম্পদের যে গোস্ত হয় তার ঠিকানা জাহান্নাম, এ সম্পর্কে হযরত আবু বকর (রা.) এর ঘটনা ইমাম বুখারি (রহ.) মানাকেব অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন। হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এর একজন ক্রীতদাস ছিলো যে তার ট্যাক্স আদায় করতো, হযরত আবু বকর (রা.) ট্যাক্সের পয়সায় তার সংসার চলতো, সে একদিন তার জন্য একটা জিনিস আনলো। হযরত আবু বকর (রা.) তার থেকে খেলেন। ক্রীতদাসটি তাকে বললো এটা কি তা আপনি জানেন? তিনি প্রশ্ন করলেন এটা কি? সে বললো- আমি ইসলাম পূর্বযুগে এক ব্যক্তির রাশিফল গণনা করেছিলাম। আর এ রাশিফল গণনা করতে আমি তার সাথে ধোঁকাবাজী করতাম। তার সাথে আজ আমার সাক্ষাৎ হওয়ার পর সে আমাকে ঐ জিনিস দিয়েছিলো। তার থেকেই আপনি খেয়েছেন, হযরত আবু বকর (রা.) মুখের ভেতর হাত দিলেন এবং পেটের ভেতর যা ছিলো সব বমি করে দিলেন।

হযরত কা’ব বিন উজরা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে রাসুল (সা.) আমাকে বললেন, ‘হে কা’ব বিন উজরা! আমি আল্লাহ তার নিকট তোমার জন্য ঐ সমস্ত শাসক থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যারা আমার পরে আসবে। যে ব্যক্তি তাদের দরবারে যাবে তাদের মিথ্যাকে সত্য বলে সত্যায়ন করবে। তাদের অত্যাচারে সাহায্যে করবে সে আমার সাথে নয়। আমিও তার সাথে নই। সে হাউজে আসতে পারবে না। আর তাদের দরবারে গেলো অথবা না গেলো, তাদের মিথ্যাকে সত্য বলে সত্যায়ন করলো না, তাদের অত্যাচারে সাহায্যে করলো না। সে আমার সাথে আমিও তার সাথে এবং সে হাউজের কাছে আমার সাথে সাক্ষাৎ করবে। হে কা’ব ইবনে উজরা নামাজ হলো দলিল-প্রমাণ। সিয়াম হলো শক্ত ঢাল। দান সদকা গুনাহকে তেমনই মিটিয়ে দেয় যেমন পানি আগুনকে মিটিয়ে দেয়। হে কা’ব ইবনে উজরা! ঐ মাংস বৃদ্ধি পায় না যা হারাম দ্বারা তৈরি হয়। বরং জাহান্নাম এর থেকে উত্তম।’ বর্তমানে হারাম উপার্জনের আরেকটি মাধ্যমে হলো সুদ। ইসলামে এটি একটি জঘন্য অপরাধ। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা পরিষ্কারভাবে সুদকে হারাম করেছেন। সুদ না ছাড়লে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার কথা বলেছেন। হাদিসে রাসুল (সা.) সুদ গ্রহণ করাকে নিজের মায়ের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার থেকেও নিকৃষ্ট বলেছেন।

সুদ এমন এক হারাম যা সমাজের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেয়। অভাবীকে আরো অভাবী করে। আর ধনীকে করে আরও ধনী। এর মাধ্যমে এক শ্রেণির লোক নির্বিচারে শোষিত হয় আরেক শ্রেণির লোক বিনা পরিশ্রমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। হারাম উপার্জনের দ্বারা ব্যক্তির মধ্যে অতৃপ্তির সৃষ্টি হয়। দিন দিন তার মাঝে সম্পদের চাহিদা বাড়তে থাকে। আমরা দেখতে পাই, যে ব্যক্তি হারাম পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে লোভ লালসা তার মনের মধ্যে অনেক বেশি বাসা বাঁধে। সে মনে কখনো শান্তি পায় না। সব সময় কৃপণতা করে। তাদের হাত ভর্তি কিন্তু মন খালি। মানুষ তাদের সম্পর্কে বলে, ধনীরা গরিবদের সম্পদের প্রতি বেশি লোভাতু হয়। কেননা হাদিসের ভাষায় তারা হলো এমন যে, খাবার গ্রহণ করে তবে তাদের পেট ভরে না। আর যে সুদের কারবারের মধ্যে পড়ে যায়, সে তার থেকে তওবা করে না। ফলে সুদ গ্রহণ করা থেকে তার মধ্যে অনুশোচনা আসে না। আর যে ব্যক্তি মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, অন্যায় কাজ তার জন্য সুন্দর করে দেখানো হয়। সে নিজে সেটিকে ভালো মনে করে। ফলে কোনো বাহানা বা ষড়যন্ত্র করতে ত্রুটি করে না। আমরা দেখতে পাই তাদেরকে যারা মানুষের সাথে ধোঁকাবাজি করে মিথ্যার আশ্রয় নেয়, অথবা শুনতে পাই তাদে সম্পর্কে যারা কোনো কাজ করে দিয়ে তার পরিবর্তে ঘুষ নেয় অথবা জমির দালালি করে পয়সা নেয় তাদের এই হারাম উপায়ে অর্জন করতে অন্তর কাঁপে না। তারা মানুষের ন্যায্য অধিকার দিতে কার্পণ্য করে শ্রমিকের মজুরি ঠিকমতো দেয় না। আল্লাহ তায়ালার নিষিদ্ধ পথে কখনোই শান্তি, নিরাপত্তা মিলতে পারে না। পরকালীন এবং ইহকালীন উভয় জীবনেই হারাম ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। সবশেষে সেই দোয়া করি যা রাসুল (সা.) করেছেন- ‘হে আল্লাহ! হারাম থেকে বাঁচিয়ে হালাল আমাদের জন্য যথেষ্ট করে দিন। গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে আনুগত্য যথেষ্ট করে দিন। আপনি অনুগ্রহ করে আমাদের মুখাপেক্ষীহীন করে দিন।


লেখক : অধ্যক্ষ এম সোলাইমান কাসেমী, ইসলামী চিন্তক ও শিক্ষা-সংগঠক।

ঝালকাঠির নলছিটিতে জেলা পরিষদ কর্তৃক কোভিড-১৯ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ

রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, ঝালকাঠি : ঝালকাঠির নলছিটিতে জেলা পরিষদ কর্তৃক কোভিড-১৯ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ১০ আগষ্ট মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় নলছিটি পৌরসভা কার্যালয়ে পৌর কর্মচারীদের মধ্যে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হ্যান্ড স্যানেটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ, লাক্স সাবান ও মাক্স বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নলছিটির পৌর মেয়র ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আঃ অহেদ কবির খান, জেলা পরিষদ সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সিন্টু ও পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।

পৌরমেয়র আঃ অহেদ কবির খান তার বক্তব্যে বলেন, “আগস্ট মাস শোকের মাস। এই মাসে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। আমরা স্বাধীনতার স্থপতিকে হারিয়েছিলাম। ফলে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতিসাধিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলকে চলতে হবে এবং মহামারি কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবং সরকারী বিধি নিষেধ মেনে
চলতে হবে।”

এ সময় জেলা পরিষদ সদস্য সাইদুর রহমান সিন্টু বলেন, বর্তমান সরকার মহামারি কোভিট ১৯ প্রতিরোধে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের সকল জনগনকে সচেতনভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় আমরা করোনার ছোবল থেকে রক্ষা পাব না। তিনি ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর পরিবারের শহীদদের রুহের মাফেরাত কামনা করে গভীর শোক প্রকাশ করেন।


হজের খুতবায় যা বললেন মসজিদুল হারামের ইমাম


অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে দ্বিতীয় বছরের হজের খুতবায় ইহসান তথা বৈশ্বিক কল্যাণ কামনা ও ভাইরাস সংক্রমণে সতর্কতার আহ্বান জানানো হয়েছে। সোমবার হজের দ্বিতীয় দিন আরাফাতের ময়দানে সমবেত হাজীদের মসজিদে নামিরা থেকে খুতবা দেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব ড. শেখ বানদার বিন আবদুল আজিজ বালিলা।

এর আগে রোববার শুরু হওয়া হজের মূল আনুষ্ঠানিকতায় মক্কা থেকে পূর্বে মিনায় জমায়েত হয়ে সারাদিন ও রাত ইবাদতে কাটান হাজীরা। সোমবার সকাল থেকে তারা দক্ষিণ-পূর্বে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হন।

খুতবায় শেখ বানদার বলেন, মানুষের নিরাপত্তা ও জনপদের স্থিতিশীলতা ইহসানের অন্তর্ভুক্ত। তিনি বলেন, এই লক্ষ্যে দেশের শাসকদের মান্য করা মানুষের কর্তব্য। এছাড়া মুসলমান-অমুসলমান নির্বিশেষে সকলের প্রতি হাজীদের ইহসানের আহ্বান জানান শেখ বানদার।

হজের খুতবায় যা বললেন মসজিদুল হারামের ইমাম
খুতবায় শেখ বানদার রাসূলের হাদীস উল্লেখ করে ভাইরাস সংক্রমণে সতর্কতার বিষয়ে আহ্বান জানান। এই বছর বাংলাসহ মোট দশটি ভাষায় হজের খুতবার অনুবাদ প্রচার করা হয়। অপর নয়টি ভাষা হলো ফারসি, তুর্কি, উর্দু, মালয়, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ, চীনা ও হাউসা।

খুতবা শেষে জামায়াতে একত্রে যোহর ও আসর নামাজ আদায় করেন হাজীরা। আরাফাতের ময়দানে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করবেন হাজীরা। সারাদিন অবস্থানের পর সন্ধ্যায় হাজীরা মিনা ও আরাফাতের মধ্যবর্তী মুজদালিফায় গিয়ে রাত্রিযাপন করবেন।

মুজদালিফায় একত্রে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করে সেখান থেকে মিনায় শয়তানকে প্রতীকি পাথর নিক্ষেপের জন্য নুড়িপাথর সংগ্রহ করবেন তারা। সারারাত মুজদালিফায় অবস্থানের পর মঙ্গলবার মিনায় গিয়ে হাজীরা তিন জামরাতে শয়তানকে প্রতীকি পাথর নিক্ষেপ, কোরবানী ও চুল কাটার মধ্য দিয়ে ইহরাম থেকে মুক্ত হবেন।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণে সতর্কতায় এই বছর করোনা প্রতিরোধী টিকা নেয়া মাত্র ৬০ হাজার আবেদনকারী হজের অনুমতি পেয়েছেন। সৌদি আরবের বাইরে থেকে এই বছরও কোনো আবেদনকারীকে হজে অংশ নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। শুধু ১৫-৬৫ বছর বয়সী সৌদি নাগরিক ও দেশটিতে বাস করা ১৫০ দেশের নাগরিক হজ করার সুযোগ পেয়েছেন।

 

ঈদুল আজহা নিয়ে ইফার বিবৃতি

নিউজ ডেস্ক : দেশে পবিত্র ঈদুল আজহার তারিখ নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল রোববার (১১ জুলাই) জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ ১৪৪২ হিজরি সনের পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার (১০ জুলাই) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আজহার তারিখ নির্ধারণ ও ১৪৪২ হিজরি সনের পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে আগামীকাল রোববার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে (বাদ মাগরিব) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি।


বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা নিম্নোক্ত টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বরে অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।


টেলিফোন নম্বর: ৯৫৫৯৪৯৩, ৯৫৫৫৯৪৭, ৯৫৫৬৪০৭ ও ৯৫৫৮৩৩৭।


ফ্যাক্স নম্বর: ৯৫৬৩৩৯৭ ও ৯৫৫৫৯৫১।


এদিকে সৌদি আরবের আকাশে কোথাও জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে রোববার (১১ জুলাই) থেকে দেশটিতে জিলহজ মাস শুরু হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

চাঁদ না দেখা যাওয়ায় ১০ জুলাই সৌদি আরবে জিলকদ মাসের শেষ দিন পূরণ হবে। সে হিসেবে দেশটিতে ঈদুল আজহা পালিত হবে আগামী ২০ জুলাই মঙ্গলবার। আগামী ১৯ জুলাই পালিত হবে আরাফাতের দিন।


এর আগে সৌদির সুপ্রিম কোর্ট জনগণের উদ্দেশে আহ্বান জানান, কেউ যদি দেশের কোথাও খালি চোখে অথবা টেলিস্কোপে চাঁদ দেখতে পান, তবে নিকটস্থ কোর্টকে অবহিত করুন। কিন্তু এ দিন দেশটির কোথাও চাঁদ দেখার খবর পাওয়া যায়নি। পরে এক বৈঠকের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


এদিকে চলমান করোনা মহামারির মধ্যে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বিদেশিদের হজে যাওয়া বন্ধ রেখেছে সৌদি আরব। এতে এবারও বাংলাদেশিদের হজ করা হচ্ছে না।


সৌদি সরকার এবার করোনাভাইরাস বিধিনিষেধের কারণে শুধু তাদের নাগরিক এবং দেশটিতে বসবাসরত লোকজনকে হজ করার সুযোগ দেবে। এ বছর সর্বমোট ৬০ হাজার মানুষ হজ করতে পারবেন।

সেজদার ফজিলত


আবূ হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, 

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন -

"যখন কোন আদম সন্তান সেজদার আয়াত পাঠ করে এবং তারপর সেজদায় লুটিয়ে পড়ে, তখন শয়তান কাঁদতে কাঁদতে একপাশে সরে দাঁড়ায় এবং বলতে থকেঃ ‘হায় আমার পোড়া কপাল ! আদম সন্তানকে সেজদা করার নির্দেশ করা হলে সে সেজদা করল । ফলে তার জন্য জান্নাত । আর আমাকেও সেজদার নির্দেশ করা হয়েছিলো কিন্তু আমি অস্বীকার করলাম, তাই আমার জন্য জাহান্নাম । ’ 

_____(সহিহ মুসলিমঃ ১৫২; ইফা)

আপনি সেজদায় যত বেশী বিনীত হতে পারবেন, তত বেশী আপনি আল্লাহর নৈকট্য লাভ করবেন; এবং নিশ্চয়ই তিনি এতে আপনার সম্মান বৃদ্ধি করবেন। 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

‘তুমি আল্লাহর জন্য অবশ্যই বেশী বেশী সেজদা করবে। কেননা তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সেজদা করবে, আল্লাহ্ তা'য়ালা এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করে দেবেন এবং তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ 

_____(সহিহ মুসলিম ৯৮৬, ইফা)

আল্লাহ্ পাক আমাদের বেশি বেশি সেজদায় লুটিয়ে পড়ার তাওফিক দান করুন আমীন!!

মসজিদের জমির মোতাওয়াল্লী লেদ মিস্ত্রী - গ্রামবাসীর মধ্যে দাঙ্গা সৃষ্টির আশস্কা

তৌফিক তাপস, নওগাঁ : নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার সরতা (পশ্চিম পাড়া) ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ওয়াকফ এস্টেটের ৯৯ শতাংশ জমির নতুন করে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করায় গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যেকোন সময় গ্রামবাসীর মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টির আশস্কা দেখা দিয়েছে। 

মসজিদ কমিটির আবেদন কোন প্রকার বিবেচনা না করে তদন্ত ছাড়ায় অর্থের বিনিময়ে মোতাওয়াল্লী নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে ওয়াকফ প্রশাসকের বিরুদ্ধে। নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার সারতা (পশ্চিম পাড়া) জামে মসজিদ। 

এই মসজিদে ১৯৫৩ সালে ৯৯ শতাংশ জমি ওয়াকফ করেন মোসাম্মদ সুনবী বেওয়া। ওয়াকফ দলিলে উল্লেখ থাকে উক্ত জমি থেকে প্রাপ্ত অর্থ মসজিদের আলোক দান, আজান, কোরআন শরিফ পাঠ ও মোশাফিরগনের খাবার, গড়ীবদের দান-খয়রাত এবং মসজিদ সংস্কারের কাজে ব্যায় করিয়া যদি কোন প্রকার অর্থ থেকে থাকে তাহলে তা মোতাওয়াল্লী গ্রহণ করতে পারবেন। 

তৎকালিন মোতাওয়াল্লী মোসাম্মদ সুনবী বেওয়ার মৃত্যুর পাল পালাক্রামে বদর উদ্দীনকে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করা হয়। এবং বদর উদ্দীনের মৃত্যুর পর দীর্ঘ ১০ বছর কোন প্রকার মোতাওয়াল্লী ছাড়ায় ভোগদখল করেছেন তার ওয়ারিশগণ। কিন্তু মোসাম্মদ সুনবী বেওয়া মৃত্যুর পর থেকে তারা কোন প্রকার অর্থ মসজিদে দেন নেই। 

এ বিষয়ে মসজিদ কমিটি একটি লিখিত আবেদন করেন ওয়াকফ প্রশাসক বরাবর। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ওয়াকফ স্টেটটি তদন্ত অন্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেও অর্থের বিনিময়ে কোন প্রকার তদন্ত ছাড়ায় গ্রাম থেকে ৯ কি মি: দুরে মহাদেবপুর সদরে স্থায়ীভাবে বসবাসরত ও শহরে লেদ মেশিনের মিস্ত্রি রেজাউল করীমকে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করেন ওয়াকফ প্রশাসন। 

ওয়াকফ দলিলে মোতাওয়াল্লী হওয়ার শর্তে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ যে মোতাওয়াল্লী সেই ব্যাক্তি হতে পারবেন যে গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করবেন এবং ধর্মভিরু ও ইমানদার ব্যাক্তি হবেন। কিন্তু সেই শর্তও মানা হয়নি এই মোতাওয়াল্লী নিয়োগের ক্ষেত্রে। 

এমতাবস্থায় একজন বে-নামাজি ও গ্রামের বাহিরে বসবাসরত ব্যাক্তিকে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করায় গ্রামবাসির মঝে দাঙ্গা-ফাছাদের আশস্কা দেখা দিয়েছে। 

সরতা পশ্চিম পাড়া কেন্দ্রীয় জামে মদজিদ কমিটির সভাপতি ছামছুদ্দিন আহম্মেদ জানান, মোতাওয়াল্লী মোসাম্মদ সুনবী বেওয়ার মৃতুর পর কোন প্রকার অর্থ তারা মসজিদে দেন নাই এবং এখন পর্যন্ত তারা কোন অর্থ মসজিদে দিতে সম্মত হন নি। তাই বিষয়টি তদন্তের জোর সুপারিশ জানাচ্ছি। তদন্ত অন্তে যেকোন সিদ্ধান্ত মসজিদ কমিটি মেনে নিবেন বলেও অঙ্গীকার করেন তিনি। 

নওগাঁ জেলা ওয়াকফ হিসাব নিরীক্ষক নুরুজ্জামান জানান, আমি দুপক্ষের আবেদনই ওয়াকফ প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেছি। এবং এ বিষয়ে সরজমিনে তদন্ত অন্তে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশও করেছি। কিন্তু মসজিদ কমিটির আবেদনটি আমলে না এনে প্রশাসক মহোদয় এক তরফা রেজাউল করিমকে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করেন। এতে আমার কিছুই করার নেই। 

বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক ঢাকার সহকারী প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, স্থানীয় কর্মকর্তার প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেই মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করা হয়েছে। এতে কোন প্রকার আপত্তি থাকলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পূনরায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নওগাঁর সাপাহার ও পোরশায় মডেল মসজিদের শুভ উদ্বোধন

সালমান ফার্সী (সজল) নওগাঁ : দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় নির্মাণাধীন ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে ৫০টি মডেল মসজিদের শুভ উদ্বোধনের অংশ হিসেবে নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা উপজেলা মডেল মসজিদের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহষ্পতিবার (১০ জুন) সাড়ে ১০ টার দিকে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রনালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যেগে মডেল মসজিদ প্রাঙ্গনে উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাপাহার মডেল মসজিদ প্রাঙ্গনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আলহাজ্ব শামসুল আলম শাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় সাপাহার উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সারোয়ার, সহ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহাজাহান হোসেন মন্ডল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান, থানার অফিসার ইনচার্জ তারেকুর রহমান সরকার সহ উপজেলা ও ইউনিয়ন আ’লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের ফজিলত

হাদিসে, সুরা ফাতিহা আর সুরা বাকারা শেষ দুই আয়াত পড়ে দুয়া করলে দুয়া কবুল এর কথা এসেছে। তাই এই দুই আয়াত মুখস্থ করা আমাদের জন্য জরুরি

সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত (২৮৫-২৮৬, আমানার রাসূলুথেকে শেষ পর্যন্ত) তেলাওয়াত করার অনেক উপকারের কথা সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। শেষ আয়াতে অত্যন্ত জরুরি কয়েকটি দুয়া রয়েছে। এসব দুয়া কবুল হওয়ার ওয়াদাও করা হয়েছে।

বিশ্ব নবী (সাঃ) একদিন বললেন, “এই মাত্র আকাশের একটি দরজা খোলা হয়েছে।

এর আগে কখনও দরজাটি খোলা হয়নি, দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতরণ করছেন। এর আগে তিনি কখনও পৃথিবীতে অবতরণ করেননি। ফেরেশতা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে সালাম করে বলেন, সুসংবাদ গ্রহণ করুন আপাদমস্তক দুটি নূরের, যা আপনার আগে কোন নবীকে দেয়া হয়নি

. ফাতেহাতুন কিতাব অর্থাৎ সুরা ফাতেহা এবং

. সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত।

উভয় আয়াতে দোয়া আছে।

রাতের বেলা ঘুমানোর পূর্বে সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত তেলাওয়াত করলে তাহাজ্জুদ নামাযের সমান সওয়াব পাওয়ার আশা করা যেতে পারে।

রাসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতের বেলা সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পড়বে সেটা তার জন্য যথেষ্ঠ হবে।

বুখারি ৫০১০, মুসলিম ৮০৭।

হজরত আবু মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত রাতে পাঠ করবে, তার জন্য দুটি আয়াত যথেষ্ট হবে; অর্থাৎ সারারাত সে জিন মানুষের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবে এবং প্রতিটি অপ্রিয় বিষয় থেকে তাকে হেফাজত করা হবে।

সহীহ বুখারি সহীহ মুসলিম।

অর্থঃ

২৮৫. রসূল বিশ্বাস রাখেন সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

২৮৬. আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।

(আমিন)

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget