বাগমারায় পিতার লাশ দাফন করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেন শামীম


বাগমারায় পিতার লাশ দাফন করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেন শামীম
 

মোঃ সাইফুল ইসলাম, বাগমারা (রাজশাহী) :  সামনে খাতা থাকলেও মনোযোগ নেই লিখার। দু’চোখ দিয়ে টপ টপ করে পড়ছিল কান্নার জল। ভালো ছাত্র হলেও কিছুই করার ছিল না। খাতায় লিখার পরিবর্তে চোখ দিয়ে পানি ঝরছিল তার। শান্তনা দেয়ার কেউ নেই।

মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে অর্ধেক সময়ে নেয়া হচ্ছে পরীক্ষা। সবাই লিখায় ব্যস্ত। হাতে তেমন সময়ও নেই। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হবে পরীক্ষা। সেই চিন্তাও যেন পিছু ছাড়ছে না চলতি বছরে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থী শামীম হোসেনের। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধিনে দিচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা।

মঙ্গলবার ছিল তার রসায়ন বিষয়ের পরীক্ষা। সে উপজেলার চকমহব্বতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মচমইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দিচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। রোববার এসএসসির প্রথম পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে যায়। মঙ্গলবার তাকে আরেকটি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হবে।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সোমবার রাতে মেধাবী সেই শিক্ষার্থী শামীম হোসেনের বাবা আব্দুর রশিদ (৫০) দুনিয়ার মায়া ছেড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সকল স্বপ্নই যেন মুহূর্তের মধ্যে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় শামীম হোসেনের। সারা রাত বাবার লাশের পাশেই ছিলেন একমাত্র ছেলে।

বাগমারায় পিতার লাশ দাফন করে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেন শামীম
পরীক্ষার কারনে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পরীক্ষার পূর্বেই লাশ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দাফন সম্পন্ন করা হয়। বাবার জানাযায় একমাত্র ছেলে যেন উপস্থিত থাকতে পারে সে কারনে পরীক্ষার পূর্বেই জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত জানাযায় স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন এলাকার ধর্মপ্রাণ লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

দুই মেয়ে আর একমাত্র ছেলে নিয়ে অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে চলছিল তাদের সংসার। দীর্ঘদিন থেকে শামীম হোসেনের পিতা মেরুদন্ডের সমস্যায় ভূগছিলেন। সংসারের হাল ধরার মতো তেমন কেউ নেই। কষ্ট করেই পাশের গ্রামে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মচমইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব, প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন খাঁন বলেন, আমরা শামীম হোসেনের বিষয়টা শুনেছি। সত্যিই ঘটনাটি অনেক কষ্টের। তবে শামীম হোসেন যেন সুন্দর ভাবে পরীক্ষা দিতে পারে সে বিষয়ে সর্বদায় খোঁজ খবর নেয়া হয়েছে। আমরা তার পাশে রয়েছি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget