অধিক লাভজনক কমলা চাষে স্বপ্ন বুনছেন নওগাঁর কৃষকরা

অধিক লাভজনক কমলা চাষে স্বপ্ন বুনছেন নওগাঁর কৃষকরা

তৌফিক তাপস, নওগাঁ : নওগাঁয় অধিক লাভজনক নতুন অর্থকরী ফসল হিসেবে কমলা চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। তবে জেলায় এই কমলা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনার আলো দেখছে কৃষি বিভাগ। ইতিমধ্যে অনেকেই কমলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এক সময় জেলায় উৎপাদিত কমলা দিয়ে স্থানীয় প্রয়োজন মিটিয়ে নিজ দেশসহ বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা।


রানীনগর উপজেলার রঞ্জনিয়া গ্রামে ঢকুতেই রাস্তার পাশে চোখে পড়বে নাইসের গড়ে তোলা বিশাল একটি সমন্বিত কৃষি বাগান। এই বাগানে গাছে গাছে ঝুলে আছে হলুদ কমলা। নাম দার্জেলিং কমলা। খেতেও বেশ সুস্বাদু। সমতল ভূমিতে এই কমলা চাষ করে সফল হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন অনেক সৌখিন কৃষকরা। নাইস কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় পরীক্ষা মূলক ভাবে চাষ করেছেন এই কমলা।
কমলা চাষী নাইস হোসেন বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে চাকরীর পেছনে না ছুটে বাবার পরামর্শে প্রায় ৩০বিঘা জমিতে একটি সমন্বিত কৃষি বাগান গড়ে তুলি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার উৎসাহে প্রায় ৩বছর আগে কমলার চাষ শুরু করি। চলতি বছর আমার কমলার গাছে কমলা ধরেছে। সেই কমলাগুলো বর্তমানে পাঁকতে শুরু করেছে। কমলাগুলো খেতে অনেকটাই সুস্বাদু। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার মানুষ আমার বাগানের কমলা ও কমলার গাছ দেখতে আসছেন। আমি উৎসাহী ব্যক্তিদের কমলা চাষ বিষয়ে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছি। শিক্ষিত বেকার যুবকরা চাকরীর পেছনে না ছুটে ইচ্ছে করলেই আমার মতো বাগান তৈরি করে বেকারত্ব দূর করাসহ নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন।


রানীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন কৃষকদের একঘেয়েমী ফসল চাষ থেকে নতুন অর্থকরী ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করতেই আমি এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই চেস্টা করে আসছি। কৃষকদের সহযোগিতায় আমি এই উপজেলায় নতুন করে নিউটন কচু, মাল্টা, বীজ বিহীন চায়না-৩ লেবু ও ড্রাগন ফলসহ বেশ কিছু অধিক লাভজনক ফসল চাষের প্রচলন শুরু করেছি। এবার পরীক্ষা মূলক ভাবে চাষ শুরু করেছি কমলা। সমতল ও উচু জমি কমলা চাষের জন্য খুবই উপযোগি। বর্তমানে বিক্ষিপ্ত ভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৭বিঘা জমিতে আগ্রহী কৃষকদের মাধ্যমে মান্ডারী ও চায়না জাতের কমলা চাষ শুরু করা হয়েছে। বর্তমানে কমলার গাছগুলোতে কমলা ধরতে শুরু করেছে।

তিনি আরো বলেন আমি প্রথমে নিজ উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গা থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন কমলা গাছের চারা এনে উৎসাহী কৃষকদের মাঝে বিতরন করি। কমলা চাষে অন্যান্য ফসলের চাইতে খরচ অনেক কম হওয়ায় এটি অধিক লাভজনক একটি অর্থকরী ফসল। কমলা এমন একটি ফল যার চাহিদা সারা বছর জুড়েই তাই কমলার বাজারজাত করা কিংবা বাজারে কাটতি বিষয়ে কোন চিন্তা নেই। কমলা গাছ রোপনের দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যেই ফল দেওয়া শুরু করে। আর একটি কমলা গাছ থেকে ১৫-২০বছর যাবত ফল পাওয়া সম্ভব। এই জেলায় কমলা চাষের এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। কমলা চাষের ফাকে ফাকে ওই জমিতে অন্যান্য মৌসুম ভিত্তিক ফসল চাষ করাও সম্ভব। প্রতিদিনই কমলা চাষে আগ্রহী ব্যক্তিরা কৃষি অফিসে এসে পরামর্শ নিয়ে যাচ্ছেন। আমি আশাবাদি এক সময় নওগাঁ জেলা এই অর্থকরী ফসল কমলা চাষের বাগানে ভরে উঠবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget