নওগাঁর সাপাহারে আম শেষে বাজার দখল করেছে মাল্টা

 

নওগাঁর সাপাহারে আম শেষে বাজার দখল করেছে মাল্টা

তৌফিক তাপস, নওগাঁ : আমের রাজধানী খ্যাত নওগাঁর সাপাহারে আশ্বিনা গৌড়মতি আমের মধ্যে দিয়ে প্রায় শেষ পর্যায়ে আমের মৌসুম। এরই মধ্যে বাজার দখল করে বসেছে লেবুজাতীয় ফলমাল্টা এই অঞ্চলে অন্যান্য ফসলের ন্যায় মাল্টা চাষ একটি অনুকুলতা এনেছে। বানিজ্যিক ভাবেও মাল্টা বাজারজাত করে ভালো দাম পাওয়ায় সন্তুষ্ট মাল্টাচাষীরা।

বরেন্দ্র মি খ্যাত এই উপজেলার মাটির গুনাগুণ ভালো হবার ফলে সব ধরণের ফসল চাষে অনুকুল। যার একটি অংশ দখল করেছে মাল্টা। মাল্টার বাজার মূল্য উৎপাদনের হার ভালো থাকায় এই অঞ্চলের কৃষকরা মাল্টা চাষে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করছেন। বর্তমানে মাল্টা চাষ অনেকটাই বিস্তৃত হয়েছে এই এলাকায়। প্রাথমিক অবস্থায় স্বল্প খরচে মাল্টা চাষ করে লাভবান হবার ফলে এই ফল চাষে কৃষকদের আগ্রহের যেন সীমা নেই। এছাড়াও মাল্টা চাষ উৎপাদনের দিকে লক্ষ্য রেখে বাজারের ফল আড়ৎগুলোতে বানিজ্যিক ভাবে মাল্টা ক্রয় করছেন আড়ৎদাররা। যা মাল্টাচাষীদের আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় প্রাথমিক অবস্থায় অনেক কৃষক পরীক্ষামূলক ভাবে মাল্টা চাষ করছেন। মাল্টার ফলন মাটির অনুকলতায় মাল্টা চাষে নতুন সম্ভাবনা দেখছেন এলাকার চাষীরা। আবহাওয়া অনুকলে থাকায় মাল্টা মৌসুমগত ভাবে একবার উৎপাদন হয়। কিন্তু কিছু জাতের মাল্টা বছরে দুই বার উৎপাদন হচ্ছে মাল্টা হারভেস্টের উত্তম সময় হচ্ছে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস। তবে কিছু অগ্রীম জাতের মাল্টা আগষ্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে হারভেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানান মাল্টা চাষীরা।

মাল্টা চাষী মাহফিজুর রহমান বলেন, “আমি পরীক্ষামূলক ভাবে ৩শটি মাল্টা গাছ লাগিয়েছিলাম। বর্তমানে প্রতিটি গাছ প্রাপ্ত বয়স্ক হবার ফলে ভালো ফলন হচ্ছে। আমার বাগানে দুই জাতের মাল্টা চাষ করছি। বারি- বারি- জাতের মাল্টা আমার বাগানে রয়েছে। তবে ফলনের দিক থেকে বারি- জাতের মাল্টা অনেকটা অনুকল। প্রথমে যখন মাল্টা চাষ করি, তখন বাজারজাতের জন্য অনেকটাই সমস্যা মনে হত। কিন্তু বর্তমানে কিছু আড়ৎদার মাল্টা কেনার ফলে আমরা মাল্টা বাজারজাত করণে অনেকটা সুবিধা পাচ্ছি

অনেক মাল্টা চাষী বলছেন, আমের মৌসুমে যেমন বাইরে থেকে ব্যাপারীগণ আসেন ঠিক তেমনি ভাবে যদি মাল্টা ক্রয়ের জন্য বাইরে থেকে ব্যাপারী আসতেন সেক্ষেত্রে আমরা আরো বেশি লাভবান হতে পারতাম।

আড়ৎদার ফরিদুল ইসলাম জানান, বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রতিমণ মাল্টা ২৬/২৮শ টাকায় কেনা হচ্ছে। আমি এসব মাল্টা ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন ফলের মোকামে পাঠাই। যাতে করে একদিকে যেমন এটি একটি লাভজনক ব্যবসা অপরদিকে কৃষকেরাও সহজেই বিক্রয় করতে পারছেন নিজ জমিতে উৎপাদিত মাল্টা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান জানান, চলতি বছরে উপজেলায় লেবু জাতীয় ফলের চাষ হয়েছে ৯৭ হেক্টর জমিতে তার মধ্যে মাল্টা চাষ হয়েছে ৮০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০/১২ মেট্রিক টন। এছাড়াও মাল্টা চাষীদের উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সার্বিক ভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

যদি বানিজ্যিক ভাবে মাল্টা বাজারজাত করণের সুবিধা আরো বিস্তৃত করা হয় তাহলে এই অঞ্চলে মাল্টা চাষ ব্যাপক ভাবে বাড়বে বলে ধারণা করছেন এলাকার মাল্টাচাষীরা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget