রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু ,ঝালকাঠি : ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী গাবসেতুটি উচ্চতার দিক থেকে বাংলাদেশের প্রথম সেতু। ঝালকাঠিবাসীর অবসরসময় কাটানো ও বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এই সেতুটি। শহরের রোকজন ক্লান্তি কাটাতে বিকেলে ও সন্ধ্যায় মুক্ত বাতাস খেতে ভড়ি জমায় গাবখান সেতুর উপর। কিন্তু ইদানিং সন্ধ্যা হলেই অন্ধকার নামে ঝালকাঠির গাবখান সেতুতে। বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবহন চলাচল করে। রাতে সেতুতে পর্যাপ্ত বাতি না থাকায় প্রায়ই এ ছোট খাটো দূর্ঘটনা ঘটতেই থাকে। গুরুত্বপূর্ন এ সেতুতে আলোর অভাবে রাতে বড় ধরনেরও যে কোন দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা এলাকাবাসীর।
গাবখান সেতু হলো ৫ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। এটি ২০০ বছরের প্রাচীন গাবখান চ্যানেলের উপর নির্মিত। গাবখান সেতুকে বাংলার সুয়েজ খালও বলা হয় । বরিশাল -খুলনা মহসড়কের ঝালকাঠির গাবখানে স্থাপিত গুরুত্বপূর্ণ এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবহন চলাচল করে। ৯১৮ মিটার দৈর্ঘ্য এই সেতুতে ৬২টি লাইট পোষ্ট রয়েছে। যার মধ্যে ৪০টির বাতিই এখন নষ্ট। এ কারণে রাত হলেই অন্ধাকার নামে গাবখান সেতুতে। যান চলাচল ছাড়াও নয়নাভিরাম এ সেতুতে শত শত দর্শনার্থী ও পর্যটক প্রতিদিন ঘুরতে আসে। রাতের বেলা সেতুতে আলো না থাকায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। স্থানীয়দের অভিযোগ রাতের অন্ধকারে সেতুতে মাদকের আড্ডাও বসে।
সড়ক বিভাগ সূত্র জানায় এই সেতুর বাতি নষ্ট হলে নতুন বাতি লাগানোর দায়িত্ব ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু গাবখান সেতুর ইজারা নেয়া প্রতিষ্ঠান ইসলাম এন্ড ব্রাদার্স এর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। করোনার কারনে তারা আদালতে আবেদন করে ৩ বার সময় বৃদ্ধি করেছেন। তবে আরো সময় বৃদ্ধি হবে কিনা তা আদালতের চুড়ান্ত রায়ের পর বলা যাবে। রায়ের পূর্ব সময় পর্যন্ত ইসলাম এন্ড ব্রাদাসই সেতুর টোল উঠাবে এবং সেতুর বাতি লাগানোর দায়িত্বও তাদের। তবে এ ব্যাপারে টোল ঘরে উপস্থিত ইসলাম এন্ড ব্রাদার্সের প্রতিনিধি জানান, সড়ক বিভাগ যদি তাদের চিঠি দেয় তাহলে তারা বাতি লাগিয়ে দেবে। তবে তারা কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি। এ অবস্থায় এ সেতুতে চলাচলকারী যানবহন চালক ও দর্শনার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। তারা অবিলম্বে গুরুত্বপূর্ন এই সেতুতে লাইট স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয় জানতে চাইলে ঝালকাঠি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, সেতুতে বাতি লাগানোর দায়িত্ব ইজারাদারের। খুব শীগ্রই ইজারাদারকে বলে গাবখান সেতুতে নতুন বাতি লাগানো হবে।
সেতু এলাকার বাসিন্দা মো: লিটন জানান, দূরদূরান্ত থেকে এখানে মানুষ বেড়াতে আসে। একটু বিনোদন করে মুক্ত বাতাস গ্রহন করে সাধারণ মানুষ। কিন্তু বর্তমানে সেতুতে বাতি না থাকায় নিরাপত্তা বিঘœ হচ্ছে এবং নানা রতম দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে। আমাদের দাবী শীঘ্রই এখানে আলোর জন্যে বাতির ব্যবস্থা করা হোক।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন