তৌফিক তাপস, নওগাঁ : নওগাঁর রানীনগরে গাড়ল পালন করে সফলতার মুখ দেখছেন উদ্যোক্তা আব্দুল মান্নান। বর্তমানে তার খামারে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রাায় ৫০ টি গাড়ল রয়েছে। উদ্যোক্তা আব্দুল মান্নানের বাড়ি উপজেলার মালশন গ্রামে।
মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন আব্দুল মান্নান। তিনি একজন চাউলের ব্যবসায়ী। পাশাপাশি পশু পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গাড়ল পালনের আগে ছোট একটা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন কিভাবে সফল হওয়া যায়। তার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই স্বল্প পরিসরে শুরু করেন গারল পালন। মালশন গ্রামের মাঠে দেখা মিলবে তার খামারটি।
কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২০১৬ সালে মেহেরপুর জেলা থেকে ৪০টি গারল কিনে খামার শুরু করেন। এতে তার খরচ হয় প্রায় ৩ লাখ টাকা। আর খামারসহ অবকাঠামো তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ২ লাখ টাকা। এই পুঁজি দিয়ে শুরু করে গাড়লের খামার। তার খামারে চারজন কর্মচারী কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কর্মচারীদের বেতন দেয়া হয় ৮-১২ হাজার টাকা।
ঘাসের চাহিদা মেটাতে আড়াই বিঘা জমিতে লাগানো হয়েছে নেপিয়ার ঘাস। দিনের বেশির ভাগ সময় মাঠে চরে বেড়ায়। এতে খাবারের খরচ অনেকটাই কম হয়। দিনে একবেলা দানাদার খাবার দেয়া হয়। যেখানে গমের ভূষি, ভুট্টা, এ্যাংকর ও খৈল থাকে। বর্তমানে গো খাদ্যের দাম তুলনামূলক বেশি।
গো খাদ্যের দাম বাড়ায় পশু খামারিরা অনেকটা বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছে। যদি দানাদার খাবারের দাম কম হয় তবে অনেক বেকাররা আবারও খামারের দিকে আগ্রহী হবে।
উদ্যোক্তা আব্দুল মান্নান বলেন, কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই খামার শুরু করেছিলাম। প্রথমে যে খামারটি করেছিলাম মাচা না থাকায় বর্জ্যে ঘরের মধ্যে গ্যাস হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া ঠান্ডাও লেগেছিল। এতে ৬ মাসের মধ্যে রোগবালাই হয়ে অনেক গাড়ল মারা গিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৩টি থাকে। পশু ডাক্তার দেখিয়ে কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
কারণ গাড়ল পালনে যে পরিবেশ প্রয়োজন ঠিকমতো তা ছিল না। একারণে রোগে আক্রমণ করে। এজন্য প্রথম দিকে লোকসান গুনতে হয়। পালন করা থেকেই এখন বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়েছে। কোন মৌসুমে কি ধরনের পশু নিতে হবে কখন কি ধরনের ভ্যাকসিন দিতে হবে তা পালন করা থেকে অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে খামারটির অবকাঠামো পরিবর্তন করায় গাড়ল বসবাস করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করছে। খামারে বর্তমানে ৫০টি গারল আছে। এর মধ্যে বাচ্চা আছে ১৪টি।
তিন একর জমির ওপর প্রজেক্ট করেছি। যেখানে ছাগল ও গরু পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে ছাগলের চেয়ে গাড়ল পালন অনেকটাই সহজ বলে মনে হয়েছে। যে কোনো পরিবেশে গাড়ল পালন করা সম্ভব। দানাদার খাবারের দাম যদি কমানো হয় অনেক বেকাররা খামার করতে আগ্রহী হবে।
খামারের কর্মচারী আব্দুল মতিন ও কুদ্দুস বলেন, তারা প্রায় তিন বছর থেকে এ খামারে কাজ করছেন। সারা বছরই এখানে কাজ করা যায়। অন্য কোথাও কাজ করার প্রয়োজন হয় না। এখানে কাজ করে যে বেতন পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার ঠিকমতো চলে যায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন