অনলাইন নিউজ : আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্কর গাহের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া তালেবান যোদ্ধারা।
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্কর গাহের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে লড়াই করছে তালেবান যোদ্ধারা। যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান বাহিনীর বিমান হামলার পরেও শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে তীব্র লড়াই চালাচ্ছে তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, তালেবানের কাছে আফগানিস্তানের প্রথম কোনো প্রাদেশিক রাজধানীর পতন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তালেবানরা বলছে, তারা এরই মধ্যে একটি টিভি স্টেশন দখল করে নিয়েছে। আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে হাজারও মানুষ।
স্থানীয় এক হাসপাতালের চিকিৎসক বিবিসিকে জানিয়েছেন, চারদিকে শুধু যুদ্ধ চলছে। এদিকে, তালেবানদের মোকাবিলায় শত শত আফগান যোদ্ধা মোতায়েন করা হয়েছে।
হেলমান্দ প্রদেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সামরিক অভিযানের একটি কেন্দ্র। তালেবানের কাছে এর পতন হলে তা আফগান সরকারের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে।
বিবিসি বলছে, যদি লস্কর গাহের পতন হয়, তবে তা হবে ২০১৬ সালের পর তালেবানদের দখলে থাকা প্রথম কোনো প্রাদেশিক রাজধানী। এটি আক্রমণের কবলে থাকা আফগানিস্তানের তিনটি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে একটি। লস্কর গাহে আফগান বাহিনীর এক কমান্ডার বলেছেন, ‘তালেবানদের বিজয় বৈশ্বিক নিরাপত্তায় মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।’
এদিকে তালেবান হামলার আশঙ্কায় হেলমান্দ প্রদেশে ১১টি রেডিও এবং চারটি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সম্প্রচার সোমবার বন্ধ ঘোষণা করেছে আফগানিস্তানের তথ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে, গত রোববার বিমানবন্দরে রকেট হামলার পর আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে তালেবান। কান্দাহার তালেবানের নিয়ন্ত্রণে গেলে সেটি হবে তাদের জন্য একটি বিশাল প্রতীকী বিজয়। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করা তাদের জন্য সহজ হয়ে উঠবে।
এ ছাড়া, পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত শহরে গত কয়েক দিন ধরে চলেছে তীব্র লড়াই। গত শুক্রবার সেখানে জাতিসংঘের একটি কার্যালয় আক্রমণের শিকার হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় সরকারি বাহিনী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, হেরাতের রাস্তায় ও ছাদে বাসিন্দারা সরকারের বিজয়ের সমর্থনে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চিৎকার করছে।
সম্প্রতি আফগানিস্তানে শক্তিশালী হচ্ছে তালেবান। দেশটিতে ২০ বছর সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর থেকে দ্রুত তালেবানের উত্থান ঘটতে শুরু করে।
এরই মধ্যে আফগানিস্তানে এমন পরিস্থিতির জন্য মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে দায়ী করছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। তিনি পার্লামেন্টে বলেন, ‘আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির কারণ হলো, এই সিদ্ধান্ত হুট করে নেওয়া হয়েছে।’ প্রেসিডেন্ট ঘানি আরও বলেন, তিনি ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেছিলেন, তাদের এই সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
তথ্য সূত্র: এনটিভি,বিবিসি
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন