অর্থনীতি নিউজ ডেস্ক : গত দেড় বছর ধরেই করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। এরপরও রেমিট্যান্স আয় ভালো হয়েছে। গত অর্থবছরের পুরোটা সময় জুড়েই আগের বছরের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে হঠাৎ করে রেমিট্যান্স কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে তেমনটাই দেখা গেছে।
এদিকে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই মাসে দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এসেছে ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। যা প্রায় ১৫ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনের চেয়ে ছয় কোটি ৯৩ লাখ ডলার কম। এই অঙ্ক গত চার মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।
সোমবার (২ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে উল্লেখ করা হয়, জুলাই মাসে ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় ২৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ কম। আর গত বছরের জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে তিন কোটি ২২ লাখ ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৪০ কোটি ১২ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।
সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। প্রায় ৫৫ কোটি মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২২ কোটি ৯১ লাখ ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে সর্বোচ্চ ১৯ কোটি ৪৮ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৭৫ লাখ ডলার এবং জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে পাঁচ কোটি ৯২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।
২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। যা আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। অর্থবছরের হিসাবে এ যাবতকালে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ২০২০-২১ অর্থবছরে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ১৭৮ কোটি ৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। আর গত বছরের জুলাইয়ে এসেছিল ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার, যা ছিল এক মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স।
এ বিষয়ে অর্থনীবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, কোভিডের সংক্রমণ বিভিন্ন দেশে বেড়ে যাওয়ায় আয় কমেছে অনেক শ্রমিকের। আর কোরবানি ঈদের আগে প্রয়োজনটা বেড়ে যায়, তাই টাকা পাঠানোর পরিমাণটাও বেড়েছে। বিশ্ব পরিস্থিতি ভাল হলে শ্রমিকদের আয়ের ক্ষেত্রগুলো স্বাভাবিক থাকলে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোরবানির ঈদের আগে ১৯ দিনে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১৫৫ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স। ঈদের পর মাসের বাকি ১১ দিনে এসেছে ৩২ কোটি ১৫ লাখ ডলার।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন