মোঃ সাইফুল ইসলাম, বাগমারা, রাজশাহী : রাজশাহীর বাগমারায় দ্বিতীয় দিন চলছে কঠিন লকডাউন। লকডাউনের কারনে পাল্টে গেছে বাগমারা উপজেলার চিত্র। রাস্তাঘাট ফাঁকা, নেই কোন যানবাহন। আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সর্বদায় টহল জোরদার করেছে। ভারী কোন যানবাহনকে রাস্তায় চলাচল করতে দেখা যায়নি। পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও লকডাউনে তাদের দায়ীত্ব পালনে অনড়। হাটবাজার গুলো ঔষুধ ছাড়া অন্যান্য দোকানপাট গুলো বন্ধ দেখা গেছে।
প্রথম দিনের লকডাউনটি ঢিলেঢালা থাকলেও দ্বিতীয় দিনে তার কঠিন ভাবে রুপ নেয়। আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনসার সদস্যদের কঠিন ভাবে দায়ীত্ব পালন করতে দেখা গেছে। মূল রাস্তার মোড়, হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে তাদের কঠিন ভাবে দায়ীত্ব পালন করতে দেখা যায়।
কঠিন লকডাউন পালনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার সর্বত্রই মাইকিংসহ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। আইন শৃংখলা বাহিনীর পাশপাশি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরকে কঠিন ভাবে দায়ীত্ব পালন করে আসছে। উপজেলার হাটবাজার গুলোতে কাঁচামালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে ক্রেতাদের নিদিষ্ট সময় বেঁধে দিচ্ছে। ওই সময়ের মধ্যে ক্রেতারা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে।
কঠিন লকডাউনের পর থেকে রাস্তায় কোন ভারী যানবাহন চলতে দেখা যায় নি। তবে কাঁচামাল বহনের জন্য হাটবাজার গুলোতে দুই একটি ট্রাক ও লরি লক্ষ করা গেছে। লকডাউনে রাস্তায় কোন সাধারন মানুষকে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে না। বিনা প্রয়োজনে বাড়ি বাহিরে যেতে পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে এলাকার জনসাধারনকে সচেতন করা হচ্ছে।
কঠিন লকডাউনের কারনে মানুষের মধ্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। সব চাইতে বেশী দুশ্চিন্তিায় পড়েছে এলাকার গরুর খামারীরা। হাটবাজার গুলো উন্মুক্ত না হলে তারা তাদের পোষা গরু গুলো নিয়ে বিপাকে পড়বে বলে ধারনা করছেন। এলাকার গরুর খামারীরা জানান, ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে তারা তাদের খামারের গরু গুলো বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। লকডাউন দীর্ঘদিন থাকলে তারা গরু নিয়ে বিপাকে পড়বেন বলে ধারনা করছেন।
কঠিন লকডাউনের কারনে এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর লাভি শ্বাস উঠেছে। দিন আনে দিন খাই, এমন মানুষ গুলো ব্যাপক সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে। কঠিন লকডাউনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিনা প্রয়োজনে কোন মানুষকে বাড়ির বাহিরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। উপজেলার সকল এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান ছাড়া সকল দোকান পাঠ বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
করোনা সংক্রম বৃদ্ধির কারনে এমন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ। তিনি বলেন, দেশের দুর্যোগ মূহুর্তেই এলাকার সকল মানুষকে ধর্য্য ধারনের মাধ্যমে মোকাবিলা করার জন্য এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এমন পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মানুষ। তারা মনে করেন, বাগমারায় করোনা উপসর্গের প্রার্দুভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্ধশত মানুষ মারা গেলেও সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার কোন হিসেব নেই। শত শত মানুষ আক্রান্ত হলেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১০ জনের তালিকা রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ বলেন, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর জন্যই সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা সবাই মিলে সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিলে দেশ, জাতী ও দেশের মানুষ ভাল থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন