মসজিদের জমির মোতাওয়াল্লী লেদ মিস্ত্রী - গ্রামবাসীর মধ্যে দাঙ্গা সৃষ্টির আশস্কা

মসজিদের জমির মোতাওয়াল্লী লেদ মিস্ত্রী - গ্রামবাসীর মধ্যে দাঙ্গা সৃষ্টির আশস্কা

তৌফিক তাপস, নওগাঁ : নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার সরতা (পশ্চিম পাড়া) ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ওয়াকফ এস্টেটের ৯৯ শতাংশ জমির নতুন করে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করায় গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। যেকোন সময় গ্রামবাসীর মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টির আশস্কা দেখা দিয়েছে। 

মসজিদ কমিটির আবেদন কোন প্রকার বিবেচনা না করে তদন্ত ছাড়ায় অর্থের বিনিময়ে মোতাওয়াল্লী নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে ওয়াকফ প্রশাসকের বিরুদ্ধে। নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার সারতা (পশ্চিম পাড়া) জামে মসজিদ। 

এই মসজিদে ১৯৫৩ সালে ৯৯ শতাংশ জমি ওয়াকফ করেন মোসাম্মদ সুনবী বেওয়া। ওয়াকফ দলিলে উল্লেখ থাকে উক্ত জমি থেকে প্রাপ্ত অর্থ মসজিদের আলোক দান, আজান, কোরআন শরিফ পাঠ ও মোশাফিরগনের খাবার, গড়ীবদের দান-খয়রাত এবং মসজিদ সংস্কারের কাজে ব্যায় করিয়া যদি কোন প্রকার অর্থ থেকে থাকে তাহলে তা মোতাওয়াল্লী গ্রহণ করতে পারবেন। 

তৎকালিন মোতাওয়াল্লী মোসাম্মদ সুনবী বেওয়ার মৃত্যুর পাল পালাক্রামে বদর উদ্দীনকে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করা হয়। এবং বদর উদ্দীনের মৃত্যুর পর দীর্ঘ ১০ বছর কোন প্রকার মোতাওয়াল্লী ছাড়ায় ভোগদখল করেছেন তার ওয়ারিশগণ। কিন্তু মোসাম্মদ সুনবী বেওয়া মৃত্যুর পর থেকে তারা কোন প্রকার অর্থ মসজিদে দেন নেই। 

এ বিষয়ে মসজিদ কমিটি একটি লিখিত আবেদন করেন ওয়াকফ প্রশাসক বরাবর। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ওয়াকফ স্টেটটি তদন্ত অন্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেও অর্থের বিনিময়ে কোন প্রকার তদন্ত ছাড়ায় গ্রাম থেকে ৯ কি মি: দুরে মহাদেবপুর সদরে স্থায়ীভাবে বসবাসরত ও শহরে লেদ মেশিনের মিস্ত্রি রেজাউল করীমকে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করেন ওয়াকফ প্রশাসন। 

ওয়াকফ দলিলে মোতাওয়াল্লী হওয়ার শর্তে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ যে মোতাওয়াল্লী সেই ব্যাক্তি হতে পারবেন যে গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করবেন এবং ধর্মভিরু ও ইমানদার ব্যাক্তি হবেন। কিন্তু সেই শর্তও মানা হয়নি এই মোতাওয়াল্লী নিয়োগের ক্ষেত্রে। 

এমতাবস্থায় একজন বে-নামাজি ও গ্রামের বাহিরে বসবাসরত ব্যাক্তিকে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করায় গ্রামবাসির মঝে দাঙ্গা-ফাছাদের আশস্কা দেখা দিয়েছে। 

সরতা পশ্চিম পাড়া কেন্দ্রীয় জামে মদজিদ কমিটির সভাপতি ছামছুদ্দিন আহম্মেদ জানান, মোতাওয়াল্লী মোসাম্মদ সুনবী বেওয়ার মৃতুর পর কোন প্রকার অর্থ তারা মসজিদে দেন নাই এবং এখন পর্যন্ত তারা কোন অর্থ মসজিদে দিতে সম্মত হন নি। তাই বিষয়টি তদন্তের জোর সুপারিশ জানাচ্ছি। তদন্ত অন্তে যেকোন সিদ্ধান্ত মসজিদ কমিটি মেনে নিবেন বলেও অঙ্গীকার করেন তিনি। 

নওগাঁ জেলা ওয়াকফ হিসাব নিরীক্ষক নুরুজ্জামান জানান, আমি দুপক্ষের আবেদনই ওয়াকফ প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেছি। এবং এ বিষয়ে সরজমিনে তদন্ত অন্তে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশও করেছি। কিন্তু মসজিদ কমিটির আবেদনটি আমলে না এনে প্রশাসক মহোদয় এক তরফা রেজাউল করিমকে মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করেন। এতে আমার কিছুই করার নেই। 

বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক ঢাকার সহকারী প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, স্থানীয় কর্মকর্তার প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেই মোতাওয়াল্লী নিয়োগ করা হয়েছে। এতে কোন প্রকার আপত্তি থাকলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পূনরায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

লেবেলসমূহ:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget