তৌফিক তাপস নওগাঁ : পার্শ্ববতী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় করোনা পরিস্থিতি আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় নওগাঁর ৩টি উপজেলাকে সতর্ক অবস্থায় শর্তকাবস্থা জারী করা ও পুলিশী চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রশাসন ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষনা করার পর নওগাঁয় মঙ্গলবার গণবিজ্ঞপ্তির মধ্যদিয়ে এ শতর্কাবস্থা জারী করেছে। ওইসব উপজেলার ইউএনও ও সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বেশ কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁর পোরশা, মান্দা ও নিয়ামতপুর উপজেলা সাথে ছোট-অনেকগুলো যাতায়াতের সড়ক রয়েছে। এ ছাড়া দুটি হাইওয়ে সড়ক আছে। এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শতশত যান বাহন চালাচল করে। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ও শনাক্তের পরিমান বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-নওগাঁ সীমান্তে সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এলাকায় করা হচ্ছে মাইকিং। এসব চেকপোষ্টগুলোতে জরুরি পণ্যবাহি যাহবাহন ছাড়া কোন রকম কোন যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়াও যেসব পণ্যবাহি যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে সেসব যানবাহনগুলোকে ভালোভাবে জীবানুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে, স্যানিটাইজারের ব্যবহার ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করা হচ্ছে।
পোরশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হামিদ রেজা জানান, মঙ্গলবার গণবিজ্ঞপ্তির মধ্যদিয়ে এ শতর্কাবস্থা জারী করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় লকডাউন চলাকালে ওই এলাকার কোন জনসাধারন এবং কোন ধরণের গণপরিবহন এ উপজেলায় প্রবেশ বা গমন বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। তবে পণ্যবাহী পরিবহণ ছাড় দেওয়া হচ্ছে এবং বিশেষ কোন কারনে কোন ব্যক্তি এ উপজেলায় আসলে সে ব্যক্তি র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট সনদ দেখাতে পারলে তাকে আসতে দেওয়া হচ্ছে। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য এবং গ্রাম পুলিশ সদস্যদের সার্বিক সহযোগীতা করার জন্য স্থানীয় জনগণকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
নওগাঁর পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া জানান, সংক্রমণ রোধে নওগাঁ-চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাথে হাইওয়ে সড়ক ছাড়াও ছোট যাতায়াতের যেসব সড়ক রয়েছে সেগুলোতে ইতোমধ্যেই পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। যাতে কেউ অকারনে যাতায়াত করতে না পারে। আর যেসব পন্যবাহি যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে সেসব যানবাহনগুলোকে ভালোভাবে জীবানুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে, স্যানিটাইজারের ব্যবহার ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করা হচ্ছে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ জানান, পাশ্ববর্তী জেলা থেকে যাতে নওগাঁয় করোনা সংক্রমন ছড়াতে না পারে এই জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাথে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় হাট বাজার ও গণ পরিবহনে সামাজিক দূরত্ব, শত ভাগ মাস্ক ব্যবহার ও অন্যান্য বিধি নিষেধ কার্যকরে আরো বেশী নজরদারীর কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া বিজিবি, ভারত সীমান্তে কড়া নিরাপত্তায় রয়েছে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে আছে ধাইমরহাট পত্নীতলা, সাপাহার ও পোরশা উপজেলা।
উল্লেখ্য-জেলায় এই পর্যন্ত মোট করোনা রোগী শনাক্ত ২ হাজার ১৮৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৯৮৪ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের।
নওগাঁঁ সিভিল সার্জন এবিএম আবু হানিফ জানান, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ করোনা রোগীর সংখ্যা নওগাঁর চেয়ে তুলনামূলক অনেক বেশি। ইত্যে মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রশাসন ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষনা করার পর নওগাঁ প্রশাসন ওই ৩টি উপজেলায় মঙ্গলবার গণবিজ্ঞপ্তির মধ্যদিয়ে এ শতর্কাবস্থা জারী করেছে। তিনি আরো বলেন, আগামী ৭ দিন যদি সঠিক ভাবে শতর্কাবস্থা থাকা ও নির্দেশণা পালন করা যায় তাহলে আশা করা হচ্ছে নওগাঁয় করোনা ভাইরাস ব্যাপক হারে বিস্তার রোধ সম্ভব হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন