সালমান ফার্সী (সজল) নওগাঁ : নওগাঁয় এক কৃষককে গলাকেটে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উন্মোচন করেছে থানা পুলিশ। এঘটনায় নয়ন (১৭) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। নয়ন সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের নামাহাতাশ গ্রামের মৃত নরেন এর ছেলে। এসময় আলামত হিসেবে একটি কোদাল জব্দ করা হয়েছে। নিহত অরুণ সাহানা (৫৪) একই গ্রামের মৃত রুপচান এর ছেলে। আটক নয়ন নিহতের সম্পর্কে আপন ভাগ্নে। গত মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অরুন সাহানা কৃষি কাজ ও মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। গত ১ মে তিনি রাতের খাওয়া শেষ করেন। এরপর রাত ৯টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ৩০০ মিটার পশ্চিম দিকে গ্রামের ভরি নামে এক ব্যক্তির খলিয়ানে কেটে রাখা ধান পাহারা দেওয়ার জন্য যান। পরদিন রোববার (২মে) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে স্ত্রী রেবতী স্বামীকে ডাকার জন্য যান। সেখানে গিয়ে তিনি স্বামীর গলা কাটা রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান। ঘটনার পর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাবলু কুমার ওরুফে পুলক ওইদিনই বাদী হয়ে ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোডে মামলা করেন।
পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটনার রহস্য উন্মোচনের নির্দেশনা দেন। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রকিবুল আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) একেএম মামুন চিশতী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু সাঈদ, অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম জুয়েল, মামলা তদন্তকারি অফিসার পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব আলম, পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) ফয়সাল বিন আহসান, উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল জান্নাত শাহ ও উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দিন সহ অন্যান্য অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিহত অরুণ সাহানার ভাগ্নে নয়ন কে ৩ মে এলাকা থেকে আটক এবং হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত একটি কোদাল আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। মঙ্গলবার (৪মে) তাকে আদালতে সোর্পদ করা হয় এবং ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
জানা গেছে, নয়ন ছিল উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির। পড়াশুনা ঠিকমতো করতো না। খরের পালায় আগুন দেয়া ও বাড়িতে ঢিল ছোড়ত। এসব কারণে তাকে চর থাপ্পড় দিয়ে মামা অরুণ সাহানা কিছু দিন শাসন করেছিল। সবমিলিয়ে মামার উপর ক্ষিপ্ত ছিল নয়ন।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে নয়নকে আটক করা হয়। আদালতে দেয়া নয়নের জবানবন্দিতে জানা যায়, তার মামা অরুণ সাহানার সঙ্গে পূর্বে মারধর ও ধান মাড়াইয়ের কাজে বাঁধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাত ১২টার দিকে খলিয়ানে ঘুমন্ত অবস্থায় তার মামাকে কোদাল দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আমরা হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন