তাপস কর, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের
গফরগাঁওয়ে স্কুল শিক্ষিকাকে মারধরের ঘটনার তদন্তের দাবিতে সংবাদ সন্মেলন
করেছে দফতরির পরিবার। দফতরি রাকিব খানকে চাকরিতে পুর্ণবহাল রাখার দাবিতে
সংবাদ সম্মেলন করেছেন দফতরি রাকিব খানের পরিবার।
তাদের
দাবি মারধরের ঘটনা সম্পুর্ণ ভুয়া, মিথ্যা, বানোয়াট এবং রাকিব খান ও তার
পরিবারের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ থেকে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা সাজান শিক্ষিকা
নিলুফা খানম।
আজ রবিবার (৩০ মে) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. ফেরদৌস বলেন, গফরগাঁও উপজেলার বারইহাটি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি রাকিব খান ও প্রধান শিক্ষিকা নিলুফা
খানম সম্পর্কে আপন চাচাত ভাই-বোন। নিলুফা খানমকে মারধরের ঘটনা সম্পুর্ণ
মিথ্যা, ভুয়া ও বানোয়াট।
তিনি দাবি করেন, দফতরি মো.
রাকিবের বাবা আলাল উদ্দিন মারা যাওয়ার পর থেকে রাকিবের সম্পত্তিতে চোখ
পড়ে নিলুফা খানমের। পরিবারের সম্পত্তির ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে দুই পরিবারের
মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। বিষয়টি স্থানীয়রাও অবগত রয়েছেন।
এ
ঘটনা জেরে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে স্কুল বন্ধ করে রাকিব এবং
নিলুফা বাড়িতে আসার ২ঘন্টা পর পূর্বের জেরে রাকিব এবং নিলুফার মধ্যে
বাগবিতণ্ড হয়।
পরে এই ঘটনাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে
নিলুফা খানম স্কুল পরিস্কার করার কথা বলায় রেগে দপ্তরি রাকিব খান তাকে
মারপিট করেছে বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।
সংবাদ
সম্মেলনে দফতরি রাকিব খানের পরিবার অভিযোগ করে বলেন, জমি সংক্রান্ত
বিরোধের জেরে নিলুফা খানমের পরিকল্পনায় রাকিব খান ও তার বড় ভাই নাদিম
খানের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার এবং চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয় রাকিব
খানকে। ঘটনার সঠিক তদন্ত না করেই রাকিব খানকে চাকুরিচ্যুত করা হয় বলেও
অভিযোগ তাদের।
এক প্রশ্নের উত্তরে মো. ফেরদৌস বলেন,
স্কুলে কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি। দুপুর ১২ টার দিকে স্কুল বন্ধ করে রাকিব
এবং নিলুফা বাড়িতে আসার ২ ঘন্টা পর পূর্বের জেরে রাকিব এবং নিলুফার মধ্যে
বাগবিতণ্ডা হয়। তবে, কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
সংবাদ
সম্মেলনে রাকিব খানের ভাই নাদিম খান বলেন, নিলুফা খানমের বাবা হাফিজ উদ্দিন
মাস্টারের গাছ নাদিম খানের ঘরের উপরে পরে। এ ঘটনা থেকেই নিলুফা খানমের
সাথে তাদের বিরোধ দেখা দেয় বলে দাবি করেন তিনি।
এ
বিষয়ে বারইহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নিলুফা খানমের
সাথে যোগাযোগ করা তাকে মারধর করা হয়েছে দাবি করে লাইন কেটে দেন। এরপর ফোন
দিলে তার নাম্বারটি বন্ধ দেখায়।
এ বিষয়ে গফরগাঁও
প্রাথমিক সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সবুজ মিয়া বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে
প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর মো. রাকিব খানকে
চাকরী থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আবারও যদি কেউ তদন্তের দাবি
করেন, তাহলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করার কথাও বলেন তিনি।
এর
আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ২ টার দিকে গফরগাঁওয়ের বারইহাটি সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীলুফা খানমকে মারধর করার অভিযোগ করেন নিলুফা
খানম।
এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুর ২টায় ভুক্তভোগী প্রধান
শিক্ষিকা নিলুফা খানম বাদী হয়ে দফতরি মো. রকিব খান ও বড় ভাই নাদিম খানকে
আসামি করে মামলা করেন। এর আগে ওই দিন ভোররাতে বটতলা থেকে রাকিব খানকে আটক
করে পুলিশ। ওই দিন সন্ধ্যার পর আদালতের নির্দেশে রাকিব খানকে জেল হাজতে
পাঠায় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, নিলুফা খানম স্কুলের দফতরি
মো. রাকিব খানকে স্কুল পরিস্কার করতে বলেন। এ সময় রাকিব ক্লাসরুম পরিষ্কার
করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বন্ধে কোনোরকম কাজ করতে পারবেন না বলে জানিয়ে
দেন প্রধান শিক্ষক নিলুফাকে। একপর্যায়ে স্কুলের মাঠেই প্রধান শিক্ষককে
মারধর করার অভিযোগ করেন নিলুফা খানম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন