সালমান ফার্সী (সজল) নওগাঁ : নওগাঁ’র সম্পূর্ন ক্ল-লেস একটি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং মুল দুই আসামীসহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার ও লাশ বহনকারী একটি পিকআপ জব্দ করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরো জানান গত ১৯ এপ্রিল ঐ এলাকার গ্রামপুলিশ আব্দুল আজিজের মাধ্যমে রানীনগর থানার পুলিশ সংবাদ পায় যে, উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের মারিয়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে হলুদ রঙের ড্রামে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ ভাসছে। সকাল সাড়ে ৮টায় থানা পুলিশ, পিবিআই নওগাঁ ও সিআইডি ক্রাইম সিন রাজশাহী স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করে। তার অনুমান বয়স ৩৫ বছর। লাশের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। পুলিশের ধারনা ১৮ এপ্রিল থেকে ১৯ শে এপ্রিল’২১ ভোরবেলার মধ্যে যে কোন এক সময় কে বা কারা তাকে হত্যা করে এখানে ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নানের নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ তদন্ত শুরু করেন। তদন্তের এক পর্যায়ের নিহতের পরিচয় উদঘাটিত হয়। নিহত ব্যক্তির নাম মোঃ শহিদুল ইসলাম। সে আত্রাই উপজেলার বাউল্যাপাড়া গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলীর পুত্র। তার পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয় উক্ত শহিদুল ইসলাম গত ১৭ এপ্রিল২০২১ তারিখে ট্রাক্টরের ট্রলি কেনার জন্য ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নওগাঁ শহরের উদ্দেশ্যে যান। কিন্তু ঐ দিন সন্ধ্যার পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং আর বাড়িতে ফিরে যান নি। পুলিশী তদন্তের এক পর্যায়ে গত ২৮ মে’২০২১ তারিখে পুলিশ এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে আত্রাই উপজেলার বাজেধনেশ্বর গ্রামের মমতাজ সরদারের পুত্র মোঃ আলম সরদার (৩৫) ও বাউল্যাপাড়া গ্রামের মোঃ আনোয়ার হোসেনের পুত্র মামুনুর রশিদ ঋতু (২১) এবং মান্দা উপজেলার বড়পই গ্রামের ইয়াছিন দেওয়ানের পুত্র মোঃ জুয়েল রানা (৩৮) ও মৃত বয়েন উদ্দিনের পুত্র মোঃ বুলবুল হোসেন (৪৫)’কে গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখিত আসামীদের পুলিশ রিমান্ডে এনে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পুলিশ ঐদিনই এই হত্যাকান্ডের মুল হোতা মান্দা উপজেলার দূর্গাপুর মধ্য পাড়ার মৃত আব্দুস সামাদ ওরফে লাটুর পুত্র মোঃ সজিব (২৩) এবং দূর্গাপুর সোনারপাড়া গ্রামের মোঃ বাহার আলীর পুত্র মোঃ সোয়েল রানা (২৫)’কে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেখিয়ে দেয়া মতে ভিকটিমের লাশ বহনকারী ঢাকা-মেট্রো-ন-১৪-৮৪৫৫ নম্বরের একটি পিক-আপ ভান উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। তারা স্বকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে যে উক্ত শহিদুল ইসলামকে জনৈক মোঃ আঃ জব্বারের ভাড়া বাসায় হত্যা করে ড্রামে ভরে রাত অনুমান ১১টায় লাশ পিকআপ ভ্যানে করে ঘটনাস্থলে ফেলে আসে। পুলিশ ২৯ মে’২০২১ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে। পরে আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে নিজেদেরকে জড়িয়ে স্বেচ্ছায় ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মতে স্বীকারোক্তিমুলখ জবানবন্দী প্রদান করেছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের উদ্বোর্ধতন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন