আহতরা হলেন, নিহতের পিতা আজিমুদ্দীন কাজী (৬৫), চাচা আব্দুর রাজ্জাক (৫০), ছেলে সৈকত (১৬), প্রতিবেশী আব্দুস সাত্তারের ছেলে জুয়েল রানা (২৫), মুনছুর রহমান (৪৬) । এছাড়াও নিহতের ছোট ভাই হাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজনকে বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, নিহতের পিতা আজিমুদ্দীন কাজী ১৯৭৩-৭৪ সালে একই গ্রামের মৃত আসতুল্লাহর কাছ থেকে জমি ক্রয় করে ভোগদখল করে আসছিল। অন্যদিকে তার বোন ছবেজানের নিকট থেকে ১৯৮৩ সালে আবারও জমি ক্রয় করেন আজিমুদ্দীন কাজী। সেই জমির অংশীদার দাবী করে তা ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন আসতুল্লাহ। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে আদালত আজিমুদ্দীন কাজীর নামে রায় দেয় ।
এর মধ্যে আসতুল্লাহ মৃত্যুবরণ করলে ২০১৯ সাল থেকে ছেলেরা এবং তারই ভাই সেফাতুল্লাহসহ তার ছেলে একটি ভূয়া দলিল করে জমিটি নিজেদের বলে দাবী করে। বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশ সহ স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়নের বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এরই মাঝে তারা বিভিন্ন সময় আজিমুদ্দীনসহ তার পরিবারের কারো না কারো লাশ ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে আসছিল।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২২এপ্রিল) নিহত হাবিল কাজী এবং তার একমাত্র ছেলে সৈকত বিকেলে পান বরজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন এমন সময় তাদের পথ আটকিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ মৃত আসতুল্লাহর ছেলেসহ সেফাতুল্লাহ ও তার ছেলে এবং তাদের পরিবারের নারী সদস্যরা। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে বিষয়টি তখন থেমে যায়। পরে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে হাবিল কাজী সন্ধ্যার পর যখন বাড়ি থেকে বের হয় আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা অবস্থায় লাঠিসোটা, লোহার রড, হাসুয়া, কোদালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সেফাতুল্লাহ এর নেতৃত্বে হামলা চালায় তার উপরে। সেই সময় তাকে একা পেয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে হামলাকারীরা । পরে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে হাবিল মারা যায় বলে জানা গেছে।
এসময় হাবিলের উপর হামলার খবর পেয়ে হাবিলের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে আসলে তাদের উপরেও হামলা করে তারা। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয় বলে জানা যায়। তাদের মধ্যে পাঁচ জনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পৌঁছায় বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোস্তাক আহমেদ । এছাড়াও ঘটনাস্থলে আসেন রাজশাহী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব। এদিকে দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাইকে হারিয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে। অন্যদিকে যারা এই হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত তারা সঙ্গে সঙ্গে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বাদী হয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন