সালমান ফার্সী (সজল): নওগাঁর আত্রাইয়ে গ্রামবাসীরা নিজ উদ্যোগে তৈরী করলেন ৩ কিলোমিটার গ্রামীন রাস্তা ও কবরস্থানের সংস্কার কাজ। দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করেও প্রতিকার না পাওয়ায় এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বলে জানান উপজেলার বিশা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামবাসী। রাস্তা তৈরীর কাজ শেষ দিনে গ্রামে মিলাদের আয়োজনও করেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কয়েক যুগ আগে ৫টি পাড়া নিয়ে গঠিত হরিপুর গ্রামে ২ হাজার ৫’শ লোকের চলাচলের জন্য তৈরী করা হয় গ্রামীন রাস্তাটি। গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, প্রভাষক, শিক্ষক এবং সরকারের বিভিন্ন বাহিনীতে লোকজন কর্মরত আছেন। তারা বাবা-মা, ভাই-বোনের সাথে ঈদ করতে গ্রামে এসে সীমাহীন কষ্টের সম্মুখীন হন। এছাড়া সংস্কারের অভাবে গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বর্ষা মৌসুমে ডুবে নিদারুন কষ্ট সইতে হয়। সেইসাথে গ্রামের একমাত্র কবরস্থান নিচু জায়গাতে হওয়ায় বর্ষাকালে কেউ মৃত্যু বরণ করলে দাফনের উপায় থাকেনা। তাদের দুঃখ দুর্দাশার কথা বিভিন্ন মহলে জানানোর পরেও প্রতিকার না পেয়ে গ্রামবাসী এক আলোচনার আয়োজন করেন। আলোচনায় গ্রামবাসী অনুপ্রাণিত হয়ে হৃদয়ে ধারন করেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাজারো কষ্টে অর্জিত স্বাধীন দেশ। স্থাপন কৃত পৃথিবীর মানচিত্রে লাল সবুজের পতাকা। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া শান্তি ও উন্নয়ন। নিজ উদ্যোগে নির্মাণাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতু।
হরিপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মফিজ উদ্দিন জানান, উপজেলার শেষপ্রান্তে নাটোর জেলা সংলগ্ন হওয়ায় গ্রামটিতে ততোটা উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। গ্রামের অধিকাংশ লোক নৌকা প্রতীকে ভোট দেন। নির্বাচন এলে রাস্তা নিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি শুনলেও বাস্তবায়ন দেখিনা।
শিক্ষক জহুরুল ইসলাম ও ওয়ার্ড সদস্য ওহিদুর রহমান গ্রামবাসীর তৈরীকৃত রাস্তাটি পাকা করনে উর্ধতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করে জোর দাবি জানান।
প্রধান শিক্ষক খোরসেদ আলম বলেন, গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে নাটোর এবং পূর্ব পাশ দিয়ে সিংড়া রাস্তা পাকা থাকলেও আমাদের চলাচলের গ্রামীন রাস্তাটি অবহেলায় রয়ে গেছে দীর্ঘ সময় ধরে। গ্রামবাসীর নিজ উদ্যোগে তৈরী রাস্তাটি পাকা করনে মাননীয় সাংসদ মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
বিশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মোল্লা বলেন, রাস্তাটি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে চেষ্টা তদবির করে আসছি। গ্রামবাসী উদ্যোগ নিলে আমার সাধ্যমত সহযোগিতা করে কাজের উদ্বোধন করি। গ্রামবাসীকে ধন্যবাদ জানাই নিজ উদ্যোগে রাস্তা তৈরী করার জন্য। এভাবে প্রতিটা গ্রামের মানুষ এগিয়ে এলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত“ প্রতিটি গ্রাম হবে শহর” অতি অল্প সময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন