সালমান ফার্সী (সজল), নওগাঁ : নওগাঁ উপজেলায় শিশিরের সাথে শুরু হয়েছে হালকা শীতের আমেজ। বাংলার চির ঐতিহ্য ধরে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি চলছে মাঠে মাঠে। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা থেকে খেজুর গুড় তৈরির পালা শুরু হয়ে চলবে বসন্তের শেষ নাগদ পর্যন্ত। রস সংগ্রহের জন্য গাছ ঝোড়ার দৃশ্য উপজেলার। মাঠে মাঠে দেখা মিলতে শুরু করেছে। উপজেলার ডাকাহার গ্রামের ইয়াচিন হোসেন বলেন, আমি ১৫/১৬ বছর যাবৎ খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। এবার মাঠে ২শ থেকে আড়াই শ' খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছি। মাঠে মাঠে খেজুর গাছ ঝোড়া চলছে। আগের মতো এখন আর এ কাজে ভাল লাভ হয় না। আগে এলাকার সবমাঠে ও গ্রামের আনাচে কানাচে খেজুর গাছ ছিল। বর্তমানে খেজুর গাছ ইট ভাটায়। পোড়ানোর ফলে প্রতি বছর গাছ নিধন হচ্ছে। কিন্তু সেই তুলনায় খেজুর গাছ লাগানো হচ্ছে না। তাই এখন খেজুর গাছ কমে যাওয়াই বেশি রস পাওয়া যায় না। বর্তমানে গুড় তৈরি করতে শ্রম ও জ্বালানি খরচ অনেক বেশি হয়।
ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের উৎপাদন কমে যাওয়াই গ্রামীন অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। গৃহবধু আকলীমা বলেন, শীতের সকালে খেজুর রস যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে বোঝানো যাবেনা। সকাল হলেই খেজুর রস, পিঠা ও নলেন গুড়ের ম ম গন্ধে ভরে উঠত। শীতের খেজুর রসের পিঠা পায়েস খুবই মজাদার। শীতের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রস দিয়ে ক্ষীর, পায়েস সহ হরেক রকমের পিঠা তৈরির ধুম পড়ে। শীতের সকালে গ্রামের বাড়ির উঠানোর মিষ্টি রোদে বসে খেজুরের গরম গরম ঝোলা গুড় দিয়ে রুটি খাওয়ার মজাই আলাদা। নতুন পাটালির সঙ্গে নতুন ধানের মুড়ি খুবই মুখরোচক। খেজুরের নলেন গুড় ছাড়া শীতকালিন পিঠা উৎসবের কথা ভাবাই যায় না।
শুধুমাত্র খেজুর গাছ থেকে সুমিষ্ট রস, গুড়, নানা। প্রকার সুস্বাদু খাবার পেতে নয় আমাদের জীবনের প্রয়োজনে পরিবেশ বাচাতে ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে আমাদের উচিৎ নির্বিচারে খেজুর গাছ না কেটে বেশি বেশি করে খেজুর গাছ লাগানো জন্য সবাইকে। অরও উৎসাহিত করতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন