নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ায় জিয়ার মতো বেগম জিয়াও অপরাধী’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রগতিশীল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ-ভাসানী) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রধান কুশীলব খন্দকার মোশতাক, তার প্রধান সহযোগী হচ্ছে জিয়াউর রহমান। তাই আজকে দাবি উঠেছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে, কুশীলবদের তো বিচার হয়নি। জিয়াউর রহমানসহ যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পটভূমি রচনা করেছেন, তাদের মুখোশ উন্মোচন করা দরকার আর কুশীলবদের মধ্যে যারা এখনও বেঁচে আছেন, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো দরকার। ইতিহাসের স্বার্থেই তা প্রয়োজন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কুশীলব জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার জন্য জিয়াউর রহমান যেমন অপরাধী বেগম খালেদা জিয়াও সেই অপরাধে অপরাধী।’
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাতানো নির্বাচন করার পর বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল রশীদকে বিরোধীদলীয় নেতা বানিয়ে তার গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা লাগিয়ে দিয়েছিলেন, মন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছিলেন। এত বছর পরে বলা নেই কওয়া নেই বেগম খালেদা জিয়া হঠাৎ করে ১৯৯৫ সালে ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করলেন, তারপর থেকে কেক কাটা শুরু করলেন। এগুলো ফৌজদারি অপরাধ। এই অপরাধে বেগম খালেদা জিয়াও অপরাধী। কমিশন করে যেমন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কুশীলব জিয়াউর রহমানের মুখোশ উন্মোচন প্রয়োজন এবং হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া, হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করে ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন করার অপরাধে বেগম খালেদা জিয়ারও বিচার হওয়া প্রয়োজন। এটি সময়ের দাবি।’
ন্যাপ-ভাসানী দলকে শোক দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রগতিশীলদের মধ্যে যখনই অনৈক্য তৈরি হয়, তখনই প্রতিক্রিয়াশীলরা সুযোগ করে নেয়। ১৯৭৫ সালে এভাবেই প্রতিক্রিয়াশীলরা সুযোগ করে নিয়েছিল। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে প্রগতিশীলদের অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়াশীলরা ক্ষমতা দখল করেছে, ছোবল মেরেছে। আজকে আস্ফালনকারী প্রতিক্রিয়াশীলদের দমন করতে সব স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি প্রগতিশীলদের ঐক্য প্রয়োজন।’
প্রগতিশীল ন্যাপ (ভাসানী) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও প্রধান সমন্বয়কারী মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর দৌহিত্র পরশ ভাসানীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ও ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালু। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রগতিশীল ন্যাপের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল আহমেদ, মনিরুল হাসান মনির, মোহাম্মদ আলী, কিশমত, মৌসুমী দেওয়ান প্রমুখ।
বক্তব্যের শুরুতেই তথ্যমন্ত্রী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ জাতির পিতা, তার পরিবারের সদস্যদের এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে গভীর শ্রদ্ধা করতেন উল্লেখ করে মন্ত্রী এ সময় মওলানা ভাসানীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন