মোঃ সাইফুল ইসলাম (বাগমারা) রাজশাহীঃ রাজশাহীর বাগমারায় তাহেরপুর পৌরসভার সুলতানপুর মহল্লার ভিক্ষুক সুবেদা বেওয়া (৬০) ও তার মেয়ে স্বামী পরিত্যাক্তা সোহাগী বেগমকে পিটিয়ে জখম করে বাড়ি দখল করে নিয়েছে স্থানীয় এক প্রভাবশালীরা। এলাকার মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে আলী হোসেন (৪৫), মৃত মফিজ উদ্দীনের ছেলে মামুনুর রশীদ মামুন, তার ছেলে তুফান আলী (২৬) ও একই এলাকার সোগাহী বেগমের পূর্বের স্বামী মৃত মুনতাজ আলী বখাটে ছেলে মাহাবুর রহমান (৪০)।
পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় বেপোয়ারা হয়ে উঠেছে তারা। সংঘবদ্ধ হয়ে ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও ভিক্ষক সুবেদা বেওয়া ও তার মেয়ে সোহাগী বেগমকে তাদের বাড়িতে উঠতে দেয়নি। তাদের ভয়ে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলেও এলাকার লোকজন জানিয়েছেন।
তবে বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, নির্যাতিতারা থানায় এসে তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। এ নিয়ে থানায় এখনো কোন অভিযোগ হয়নি বলে জানান ওসি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত (১৪ আগস্ট) শুক্রবার সকালে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রভাবশালীরা ভিক্ষুকের মেয়ে সোহাগী বেগমকে বেধরক মারপিট করে রক্তাক্ত জখমসহ শ্লীনতাহানি করে। সোহাগী বেগম নিজের জীবন ও ইজ্জত রক্ষা করতে পুকুরের পানিতে ঝাপ দিয়ে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। মেয়েকে মারধরের বিষয়টি জানতে পেরে, ভিক্ষক সুবেদা বেগম বাড়ি থেকে কাপড় নিয়ে মেয়ের খোঁজে বের হন। তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেয়েকে পেয়ে কাপড় দিয়ে দুপুরে নিজ বাড়ি সুলতানপুর মহল্লায় ফিরে আসে।
ভিক্ষক সুবেদা বেগম বাড়িতে আসার সাথে সাথে অভিযুক্ত ব্যক্তিদ্বয় সংঘবদ্ধ হয়ে তার উপর হামলা চালিয়ে মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বাড়িতে ভাংচুর চালিয়ে দখলে নিয়ে নেয়। স্থানীয় লোকজন আহত রক্তাক্ত ভিক্ষক সুবেদা বেওয়াকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। দুই দন চিকিৎসার পর জীবন বাঁচানোর জন্য হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্রে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে ভিক্ষক সুবেদা বেওয়া ও তার মেয়ে সোহাগী বেগমের অবস্থা আশংকাজনক বলে এলাকার লোকজন জানান।
ভিক্ষকের মেয়ে সোহাগী বেগমের অভিযোগ, হামলাকারীরা আমার বর্তমান স্বামীর বড় ভাই, ভাতিজা ও তালাক দেয়া স্বামী মাহাবুর রহমান। তারা আমার ও আমার মায়ের উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ক্ষান্ত হয়নি। বর্তমান স্বামী মুনজুর রহমানকে বেধরক মারপিট করে বাড়িতে আটকে রেখেছে। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হামলাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবী জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ভিক্ষুকের হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত অপরাধী। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা দাঙ্গা হাঙ্গামা ও হামলা চালিয়ে ক্ষতি সাধন করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া একান্ত দরকার বলে এলাকার লোকজন মনে করেন। তারা বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হলে এবং ভিক্ষুককে তার বাড়িতে উঠিয়ে দিলে এলাকায় অপরাধের সংখ্যা হ্রাস পাবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.