গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শহিদুল্লাহ ও তার স্ত্রী (পরিচালক) নিপা সুলতানার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডল মামলার এজাহার গ্রহণ করে এ দিন ধার্য করেন।
বুধবার (৮ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত সূত্র এ তথ্য জানায়।
আদালতের সূত্র মতে, মঙ্গলবার (৭ জুলাই) তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় করা প্রতারণার মামলার এজাহার আসে আদালতে। বিচারক মামলার এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
এর আগে সোমবার (৬ জুলাই) দুপুরে লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিবির রমনা বিভাগ। এরপর পল্টন থানায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়।
ডিবির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এইচ এম আজিমুল হক বলেন, ‘শত শত গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ লিমিটেডের মালিক মো. শহিদুউল্লাহ সস্ত্রীক আত্মগোপনে যান। প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
গত ২৩ জুন বিনিয়োগকারীদের টাকা আত্মসাৎ করে গাঢাকা দেয় শেয়ার ও ইউনিট বেচাকেনার মধ্যস্থতাকারী ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকরা। ওইদিন থেকে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রয়েছে। শহিদুল্লাহকে খুঁজে না পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই হাউসের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা।
এ ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। তারা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) দুই প্রতিনিধিসহ তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটি বিনিয়োগকারীদের অর্থ লোপাটের পরিমাণসহ বিস্তারিত তুলে ধরবে। একই সঙ্গে, বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি করলেও তারা কেন মুঠোফোনে মেসেজ পাননি, এজন্য সিডিবিএলের কোনো ঘাটতি আছে কি-না, তা অনুসন্ধান করবে। এছাড়া হাউসটির মালিকরা যেন বিদেশে যেতে না পারেন, সেজন্য ডিএসই থেকে পল্টন থানায় অভিযোগ করা হয়। পাশাপাশি মালিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ করা হয়। এখন তাদের ১০টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।
শহিদুল্লাহ আত্মগোপনে চলে গেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর এমডি বলেন, ব্রোকারেজ হাউসটিতে ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর ৮২ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট ফ্রিজ করা হয়েছে। তবে হাউসটির দেনা-পাওনার বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।
এদিকে বন্ধ করার আগে ব্রোকারেজ হাউসটি থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকার শেয়ার কেনা হয়। তবে এর বিনিময়ে ডিএসইকে দেয়া চেক বাউন্স করে। ফলে হাউসটির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ডিএসই। তাদের কাউকে না পেয়ে কেনা শেয়ারগুলো সাময়িকভাবে ফ্রিজ করে রাখে। পরে ওই শেয়ারগুলো বিক্রি করে পাওনা পরিশোধ করে ডিএসই।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন