নিদারুণ কষ্ট সইতে হচ্ছে জীবিকা নির্বাহের জন্য বিকলাঙ্গ যুবকের। একষ্ট যেন চোখে দেখা যায় না, মঙ্গলবার (২১এ জুলাই) দুপুরবেলা। বেশ জোরেসোরেই বৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীতে কারওয়ান বাজারে প্রবেশের রাস্তার ঠিক মাঝখানে দুটি কাঠের টুকরোর ওপর ভর করে বসে বৃষ্টিতে ভিজছিলেন এক যুবক। সুঠাম দেহ তার। লজ্জাস্থান পলিথিন দিয়ে ঢাকা। এক টুকরো কাপড় দিয়ে কোমরের ওপরে জড়ানো।
এ পথ দিয়ে হঠাৎ দু-একটি প্রাইভেটকার, জিপ, মোটরসাইকেল ও রিকশাচালক যুবককে দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। একজনকে গাড়ি থামিয়ে যুবকের সামনে একটি ১০ টাকার নোট দিতে দেখা যায়।
কৌতূহলবশত এ প্রতিবেদক এগিয়ে যেতেই দেখতে পান ওই যুবকের দুই পা হাঁটুর উপরিভাগ পর্যন্ত কাটা। দুটি কাঠের টুকরোর ওপর হাত দিয়ে ভর করে পথ চলেন। কয়েকবার তার নাম কী, কোথায় থাকেন জিজ্ঞাসা করলে যুবক ক্ষোভমিশ্রিত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার কোনো নাম নাই। সবাই ল্যাংড়া কইয়া ডাকে। রাস্তাঘাটে যেখান জায়গা পাই হেইহানেই ঘুমাই।’
দু-একজন পথচারী যুবককে জিজ্ঞাসা করছিলেন কেন তিনি রাস্তার মাঝখানে বসে আছেন। তবে প্রশ্ন শুনে নির্বিকার যুবক। এ সময় এক পুলিশ সার্জেন্ট প্রশ্নকর্তাকে উদ্দেশ করে বলে ওঠেন, ‘কিছু বলার দরকার নেই। বললে সে ওখান থেকে সরবে না। কিছু না বললে কিছুক্ষণ পরে সরে যাবে।’
‘সকাল থেকে কত টাকা পেয়েছেন?’- জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, ৫০ টাকা সাহায্য পেয়েছেন। নাস্তা খেয়ে ৩০ টাকা খরচ হয়ে গেছে। আর কথা না বাড়িয়ে তিনি বৃষ্টিতে ভেজা অবস্থায় কাঠের টুকরোর ওপর দু হাত ভর করে সামনের দিকে এগিয়ে যান।
পরে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আট বছর আগে ট্রেনের নিচে পড়ে তার হাঁটুর ওপর থেকে কাটা পড়ে। এরপর থেকে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন