এমদাদুল হক মিলন, দিনাজপুর : দিনাজপুরে লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে পরিবারের লোকজন নিয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করেছেন স্বামী। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বর্তমানে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর আগে নির্যাতনের মুখে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ওই নারীকে বাঁচানোর আকুতি জানান স্বজনরা। ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই হাজিপাড়ার আব্দুল হামিদের মেয়ে লায়লার সঙ্গে দিনাজপুর সদর উপজেলার সুইহারী মাঝাডাঙ্গা এলাকার তাজিমুল ইসলামের ছেলে তারেক রহমানের এক লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মেয়ের বাবা যৌতুক বাবদ নগদ দুই লাখ টাকা এবং প্রায় এক লাখ টাকার ফার্নিচারসহ যাবতীয় মালামাল দেন। বিয়ের পরে তাদের ঘরে এক পুত্রসন্তানের জন্ম হয়।
কিন্তু কিছুদিন ধরে শাশুড়ি ইসমত আরা, শ্বশুর তাজিমুল ইসলাম, ননদ তামান্না বেগম, দেবর সালজার আলী ও মামি শাশুড়ি কুসুমের প্ররোচনায় এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে চাপ দেন স্বামী। এই টাকা না দেয়ায় শুরু হয় নির্যাতন। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিশ হয়। পরে আবারও শুরু হয় নির্যাতন। একপর্যায়ে ১৫ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ মিলে গৃহবধূকে নির্যাতন করেন।
পরে গৃহবধূ ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে নিজেকে বাঁচান। পরদিন সকালে ঘর থেকে বের হলে আবারও নির্যাতন শুরু হয়। এ সময় কিল-ঘুষি ও লাথি মারলে গৃহবধূ অজ্ঞান হয়ে যান। পরে পরিবারের সদস্যরা ভয় পেয়ে মেয়ের পরিবারকে মোবাইলে জানান তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে মেয়ের ভাই ও ভাবি ঘটনাস্থলে গিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করতে চাইলে শ্বশুরের পরিবারের সদস্যরা বাধা দেন। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দেন গৃহবধূর ভাই। এরপর গৃহবধূকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন