আরিফ উর রহমান টগর,টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় পানি বাড়ার সাথে সাথে নৌকা তৈরি আর বেচাকেনার ধুম পড়েছে। এ ছাড়াও চলছে পুরাতন নৌকা মেরামতের কাজ। নৌকা তৈরির কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নৌকা বিক্রি করে কারিগর পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বন্যায় প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এ সময় নৌকাই একমাত্র ভরসা। পানিবন্দি মানুষের মাঝে বেড়েছে নৌকার চাহিদা। চরাঞ্চলের বাসিন্দারা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামসহ হাট-বাজারে যাতায়াত করছে। নৌকা দিয়ে মাছ শিকারে ব্যস্ত হুগড়া, কাকুয়া, কাতুলী ও মাহমুদনগর ইউনিয়নের জেলেরা।
নৌকা তৈরির কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। কেউ করাত দিয়ে কাঠ কাটায় ব্যস্ত। কেউ হাতুড়ি দিয়ে নৌকায় পেরেক বা গজাল লাগাচ্ছে। আবার কেউ ব্যস্ত তৈরি নৌকা বিক্রির কাজে। ওমরপুর এলাকার নৌকার কারিগর আ. সামাদ বলেন, ‘বর্ষাকালে বাড়ে নৌকার চাহিদা। যে কারণে এ সময়ে ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এবার আগাম বন্যা হওয়ায় চাহিদা আরও বেড়ে গেছে।’
ষাটোর্ধ্ব কারিগর মজিদ মিয়া বলেন, ‘এটি বংশগত পেশা। দীর্ঘদিন যাবৎ এ পেশায় লিপ্ত আছি। বর্ষা মৌসুমে নৌকা নির্মাণ করেই চলে সংসার। এ কাজ করে দৈনিক গড়ে হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন হচ্ছে। নৌকা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত।’
নৌকা কিনতে আসা মো. লাল মিয়া বলেন, ‘বাড়ির চারপাশে পানি। বাজার থেকে শুরু করে সব সময় প্রয়োজন হচ্ছে নৌকা। সবার যাতায়াতের জন্য নৌকা কিনতে এসেছি।’ তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে হারেজ আলী বলেন, ‘৪ হাজার টাকায় মাঝারি সাইজের নৌকা কিনলাম। মানুষ পারাপার করে কিছু টাকা উপার্জন করা যাবে।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলায় বেশ কয়েকটি নৌকা তৈরির কারখানা আছে। বর্ষা মৌসুমে বেচাকেনা ভালো হলে তাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হবে। এর নির্মাণ শ্রমিকদের টিকিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা তাদের সহায়তা দিয়েছি। আবারও তাদের সহায়তা দেওয়া হবে।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন