পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে টানতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে দুটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিতকরণ ও স্মার্ট ফোন কিনতে সহজ ঋণের ব্যবস্থা করার এ প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। গত ৩০ জুন ইউজিসি থেকে এ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
করোনাভাইরাসের প্রভাবের ফলে বর্তমানে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনার বাইরে। অনলাইনে ক্লাস শুরু করতে পারেনি অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলো। গত ২৫ জুন ইউজিসির সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় ৪৬ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করতে সম্মতি জানিয়েছেন। তার ভিত্তিতে গত ৩০ জুন ইউজিসিতে থেকে দুটি প্রস্তাব উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাতে শিক্ষার্থীদের ফ্রি ইন্টারনেট প্রদান ও যাদের স্মার্ট ফোন নেই তাদের লোনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
ইউজিসি থেকে জানা গেছে, অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করার প্রস্তাব জানান উপাচার্যরা। সেটি আমলে নেয় ইউজিসি। এছাড়াও অনলাইন ক্লাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সার্বিক পরিস্থিতি ও সক্ষমতাসহ বিভিন্ন বিষয় জানতে একটি জরিপ চালায় ইউজিসি। সেখানে ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ডিভাইস রয়েছে বলে জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে। ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর হাতে স্মার্ট ফোন বা অন্যকোনো ডিভাইস নেই। এ কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি ইন্টারনেট প্যাকেজ ও ১৪ থেকে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে স্মার্ট ফোন কিনতে সহজ শর্তে অর্থ ঋণ দেয়ার প্রস্তাব জানিয়েছে ইউজিসি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা অনিশ্চিত, তাই আমরা একটা অনিশ্চিত সমস্যার মধ্যে রয়েছি। এ পরিস্থিতিতে আমরা হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না। শিক্ষার্থীদের সেসব জটের কবল থেকে রক্ষা করতে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে ততটুকু নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। বর্তমানে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম আমাদের বড় একটি সম্ভাবনার দ্বার তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘শুরুতে আপত্তি জানালেও বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা অনলাইন ক্লাস করাতে সম্মতি জানানোয় আমি আনন্দিত। সামর্থ্য অনুযায়ী সবাই এগিয়ে এলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব হবে। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আনতে উপাচার্যদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ফ্রি ইন্টারনেট প্যাকেজ প্রদান ও যাদের স্মার্ট ফোন নেই তাদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি পজিটিভভাবে গ্রহণ করেছেন। আশাকরি দ্রুত এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে।’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন