নিজস্ব ডেস্ক : বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘নারী প্রকৌশলী সম্মেলন-২০২০’। মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিট-১৯) কারণে অনলাইনে এই সম্মেলন হয়। মঙ্গলবার (২৩ জুন) রাত ৮টায় দ্যা ইঞ্জিনিয়ার্স ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এই সম্মেলন শুরু হয়ে রাত ১১টায় শেষ হয়।
এটি দেশে প্রথম নারী প্রকৌশলী সম্মেলন। প্রধান অতিথি হিসেবে এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। সম্মেলনের সমাপনী করেন আইইবি’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ।
১৯১৯ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের উইমেন্স ইঞ্জিনিয়ারিং সোসাইটি ২৩ জুনকে নারী প্রকৌশলী দিবস হিসেবে পালন করত। পরে ২০১৭ সালে ইউনেস্কো দিনটিকে আর্ন্তজাতিক নারী প্রকৌশলী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এ দিবসের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা। তবে আইইবি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ৭ মে ’ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’ হিসেবে পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী বুলবুল আখতার, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী রওশন মমতাজ, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নীরা মজুমদার, এলজিইডি প্রজেক্ট ডিরেক্টর প্রকৌশলী সালমা শহীদ, রাজউকের ডিরেক্টর সরকারের উপসচিব, আইবির সেন্ট্রাল কাইন্সিল মেম্বার প্রকৌশলী তানজিলা খানম।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী নারী প্রকৌশলীদের মধ্য আরও বক্তব্য দেন প্রকৌশলী মৌসুমী সালমীন, প্রকৌশলী সোনিয়া নওরীন এবং অধ্যাপক প্রকৌশলী সালমা আখতার। অনুষ্ঠানের মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দ্যা ইঞ্জিনিয়ারস ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক এবং আইইবির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের সেক্রেটারি প্রকৌশলী শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেন, ’চাকরি জীবনে নারী প্রকৌশলীরা কর্তব্যনিষ্ঠ ও সৎ হিসেবে পরিচিত। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা নেবার পর থেকেই বিভিন্ন পদে নারীদের পদায়ন করেছেন। প্রথম মহিলা বিচারপতি, প্রথম মহিলা সচিব, প্রথম মহিলা স্পিকার এবং এসবের ধারাবাহিকতায় প্রথম প্রধান প্রকৌশলীও বঙ্গবন্ধু কন্যার শাসন আমলের অবদান। এই সম্মেলনেও একজন প্রধান প্রকৌশলী উপস্থিত আছেন। শেখ হাসিনা মনে করেন, ‘নারীদের উন্নয়নের বাইরে রেখে কখনও প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়’।
তিনি আরও বলেন, নারী প্রকৌশলীরা তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে পরিকল্পনা করবেন কীভাবে আমাদের এ পৃথিবীটা আরও বাসযোগ্য, নিরাপদ, আরও সৃজনশীল ও আনন্দদায়ক করা যায়। আইইবি সবসময় নারী প্রকৌশলীদের সাথে থাকবে- আইইবির প্রেসিডেন্ট হিসেবে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি। সেই সাথে আইইবি থেকে নারী প্রকৌশলীদের কর্মক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরসহ সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে।
এর আগে নারী প্রকৌশলীরা নারীদের প্রকৌশলী পেশার যেসব প্রতিকূল পরিবেশ বিরাজমান সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এ ছাড়া নারী প্রকৌশলীদের কর্মক্ষেত্র বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন নারী প্রকৌশলীরা। নারী প্রকৌশলীরা মনে করেন, নারীদের কর্মক্ষেত্রে আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে পারলে নারীরা প্রকৌশল পেশায় আগ্রহ হবেন। এ ক্ষেত্রে প্রকৌশল পেশায় বাংলাদেশের নারীদের আরও এগিয়ে নিতে আইইবি’র সহযোগিতা কামনা করেন নারী প্রকৌশলীরা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন