নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: করোনা পরিস্থিতিতে অসহায়দের সাহায্যে নওগাঁ বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী মমতা মাহমুদ মায়া তার প্লাষ্টিকের ব্যাংকে টিফিনের জমানো টাকা জেলা প্রশাসকের ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে দিল। মঙ্গবার দুপুরে সে তার বাবার সাথে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উত্তম কুমার রায়ের হাতে ব্যাংকটি তুলে দেয়।
তার বাবা মাহমুদুন নবী বেলাল জানান, স্কুলের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে জমানো ও প্রিয়জনদের থেকে পাওয়া টাকা কর্মহীন, অসহায়, অসচ্ছল মানুষদের মাঝে উপহার হিসেবে দিচ্ছে সে। মমতা মাহমুদ মায়া নওগাঁ বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী ও জেলার মান্দা উপজেলার বৈলশিং গ্রামের ও বর্তমানে নওগাঁ সদরের সাংবাদিক মাহমুদুন নবী বেলালের মেয়ে।
মমতার বাবা আরও জানান, আমার মেয়ে টিভি দেখার সময় আমাকে জিজ্ঞেস করে, বাবা কত মানুষ না খেয়ে থাকছে। তুমি ওদেরকে কিছু দাও না। আমি তার উত্তরে ঠাট্টা করে বলি, তুমি তো দুই বছর ধরে মাটির ব্যাংকে টাকা জমা করছো। তোমার ওখান থেকে দাও। ও তখনি বলে হ্যাঁ দিবো কিন্তু ওদেরকে কথায় পাবো। তখন আমি মেয়েকে বলি ডিসি সাহেবের ত্রাণ তহবিলে দিলে উনি দিয়ে দিবেন গরীব মানুষদের। এরপর থেকে বায়না ধরেছে, চলো যাবো ব্যাংকটা দিতে। পরে সময় করে জেলা প্রশাসকের নিকট এসে তার হাত দিয়ে প্লাষ্টিকের ব্যাংকটি উপহার হিসেবে দিয়েছি।
স্কুল ছাত্রী মমতা বলেন, আমি টিভিতে দেখেছি গরীব মানুষরা অসহায়ভাবে দিন যাপন করছেন। তারা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। তাই আমি আমার ২ বছরের টিফিনের জমানো টাকা ও বিভিন্ন সময় উপহারের জমানো টাকা গরীব মানুষদের জন্য দিয়েছি। তাতে আমার ভাল লাগছে। কোন মানুষ যেন কষ্ট না থাকে তাই সবাইকে দান করতে হবে। তাহলে গরীব মানুষ আর না খেয়ে থাকবেনা।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক) উত্তম কুমার রায় জানান, মমতা হয়তো তার জমানো টাকা দিয়ে কাপড় কিনতো। হয়তো বা মা বাবার সাথে ঘুরতে যেত। কিন্তু তা না করে করোনা ভাইরাসে অসহায়দের সাহায্যে জন্য ১টি প্লাষ্টিকের ব্যাংকটি আমাদেরকে দিয়েছে। যা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। প্লাষ্টিকের ব্যাংকের টাকা জেলা প্রশাসকের ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে জমা দেওয়া হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন