৭০ বছরের বৃদ্ধা সাবিয়া বেওয়াসহ ৩০জন কর্মহীন ও অসহায় পরিবারকে রাতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিলেন নওগাঁর ডিসি

৭০ বছরের বৃদ্ধা সাবিয়া বেওয়াসহ ৩০জন কর্মহীন ও অসহায় পরিবারকে রাতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিলেন নওগাঁর ডিসি

নওগাঁ প্রতিনিধি: ৭০ বছরের বৃদ্ধা সাবিয়া বেওয়া। থাকেন নওগাঁ শহরের বাঙ্গাবাড়িয়া বিহারি কলোনি মহল্লার ছোট যমুনা নদীর গাইড ওয়াল-সংলগ্ন সরকারি খাস জমিতে। সেখানে ঝুপড়ি ঘরে গত কয়েক বছর ধরে বসবাস করছেন তিনি। স্বামী নুরু মিয়া মারা গেছেন ২৫ বছর আগে। মেয়ের বয়স যখন আট মাস তখন স্বামী মারা যান। বিভিন্ন জনের বাড়িতে কাজ করে জীবন চলত তার। মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর এখন একা থাকেন। বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন আর কাজ করতে পারেন না। ভিক্ষা করে দিন চলে তার। দেশে প্রানঘাতি করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ঘরবন্ধী হয়ে পড়েন ৭০বছরের এই বৃদ্ধা। গত কয়েক দিন ঘরের বাহিরে যেতে না পারায় তিনি অসহায় হয়ে পড়েছেন। এতে তার আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যায় এবং মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন।

জানা গেছে, ঘরে খাবার থাকলেও শুক্রবার দুপুরে উত্তপ্ত রোদে বিহারি কলোনি মাঠে একটি টিনের ওপর নষ্ট ভাত শুকাচ্ছেন তিনি। ভাত শুকিয়ে চাল হলে আবার রান্না করে খাব। জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি  নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন অর-রশীদের নজরে আসে। জনগমাগম এড়াতে ওই দিন শুক্রবার (৩ মার্চ) রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুনকে সাথে নিয়ে সেই বৃদ্ধার বাড়ীতে যান জেলা প্রশাসক। তার পরিবারের খোঁজ খবর নেন। এতে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। পরে সরকারের পক্ষ থেকে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিড়া ও অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীর তার হাতে তুলে দেন।

এছাড়াও ডিগ্রী মোড় থেকে শুরু করে বিহারী কলোনিতে বসবাসরত কেউ স্বামীহারা, কারও স্বামী অসুস্থ, কেউ রিকশা বা ভ্যানচালক ও মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে জীবন চালাতো কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে কাজ বন্ধ। ফলে মানববেতর জীবন যাপন করছে এসব পরিবার খুঁজে খুঁজে বের করে গভীর রাত পর্যন্ত তাদের হাতে এসব খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন জেলা প্রশাসক। 

এসময় জেলা প্রশাসক হারুন অর-রশীদ জানান, করোনার কারনে কোন দিনমজুর, কর্মহীন ও অসহায় মানুষের ঘরে ভাত থাকবে না, খাবার পাবে না এরকম হবে না। তাই এর আগেও একদিন জনসমাগম এড়াতে অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করতে রাতের আঁধারে তাদের বাড়ি বাড়ি খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। 

এছাড়া শুক্রবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি এক জন বৃদ্ধা খাবারের অভাবে রোদে ভাত শুকাছে। শুনে আমি মর্মাহত হয়। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম জনগমাগম এড়াতে রাতে ওই বৃদ্ধা বাড়ীেেত যাবো। এবং তার বাড়ীতে এসে তার সাথে কথা বলে খোঁজ খবর নেয়। এবং সরকারের পক্ষ থেকে তার হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেয়। এছাড়া তার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম যে, একদিন আগে একজন কাছ থেকে ২ কেজি চাল সে পাইছে। এছাড়াও একজনের কাছ থেকে কিছু পান্তা ভাত পাইছিলেন কিন্তু সেগুলো ফেলে না দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকাতে দেয় এবং পরবর্তী সে এটা খাবে। এর আগেও যদি কারো কাছ থেকে পান্তা ভাত পাইতো তাহলে ফেলে বা নষ্ট না করে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে পরে খায়। আমার আগে সে আরও দুইটি পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী পান। বর্তমানে তার ঘরে ৩০দিন চলার মত খাবার রয়েছে। আমরা চাই দেশে কেহ খাবারহীন থাকবে না। সরকারের পক্ষ থেকে যথেষ্ট ত্রান বরাদ্দ আছে এবং আরও বরাদ্দ আসতেছে বলেও জানান তিনি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger][facebook]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

আজকের দেশ সংবাদ . Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget