দেশের ২১ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের পদায়ন শুরু হবে। তবে আদালতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ৪০ জেলার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, আদালতে মামলা দায়ের করায় দেশের ৩৮ জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে পড়ে। ঠাকুরগাঁও এবং লক্ষ্মীপুর জেলার নিয়োগে কোটা অনুসরণ না করায় নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ কারণে মোট ৪০ জেলায় এ নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার সহকারী সচিব এস এম রকিবুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, নিয়োগে কোটা অনুসরণ হয়নি অভিযোগে ৪০ জেলায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে এসব জেলায় নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি দেশের একটি জেলায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ কারণে হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ নেয়া হলেও সেখানে একাধিক মামলা থাকায় নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। তবে গতকাল (১৭ ফেব্রুয়ারি) কয়েকটি জেলায় ছয়টি মামলা স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে দেশের ২১ জেলায় যোগদান সম্পন্ন ও পদায়ন কার্যক্রম শুরু হওয়ায় অন্য জেলায় চূড়ান্তভাবে পাশ করা প্রার্থীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। নির্ধারিত সময়ে যোগদান করতে না পারায় তারা চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। যোগদান করতে পারবে কি না এমন দুচিন্তায় তাদের সময় কাটছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন জেলার যোগদানের জন্য অপেক্ষমাণ প্রার্থীরা।
তবে চূড়ান্ত ফলাফলে নির্বাচিত সকলে যোগদান করতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আদালতে দায়ের হওয়া সকল মামলার স্থগিতাদেশের জন্য আমরা উচ্চ আদালতে আপিল কার্যক্রম শুরু করেছি।
তিনি বলেন, নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। তাই আমরা আশা করি দ্রুত সকল মামলার স্থগিতাদেশ আসবে। এরপরেই সকলকে যোগদান ও পদায়ন করা হবে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। পরে ওই বছরের ১ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ পাঁচজন প্রার্থী আবেদন করেন। গত বছর সারাদেশে প্রথম ধাপে ২৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মে, তৃতীয় ধাপে ২১ জুন এবং চতুর্থ ধাপে ২৮ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সেপ্টেম্বরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায় ৫৫ হাজার ২৯৫ জন পাস করেন। গত ৬ অক্টোবর থেকে নিয়োগ পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। মাসব্যাপী সারাদেশের সব জেলায় মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। সবশেষে গত ২৪ ডিসেম্বর এ পরীক্ষায় ৬১ জেলায় ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করে ফলাফল প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
১৬ ফেব্রুয়ারি নতুন শিক্ষকদের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করতে বলা হয়েছে। ১৭ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হবে। আর ১৯ ফেব্রুয়ারি নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের পদায়নের আদেশ জারি করা হবে। এরই মধ্যে হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন