নিজস্ব ডেস্ক: নওগাঁর রাণীনগরে মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। আর সরিষার ফুল থেকে মধু আহরন করছে হাজার হাজার মৌমাছি। শৈত প্রবাহ উপেক্ষা করে চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা আশা করছেন কৃষকরা। অপরদিকে কৃষি বিভাগ বলছে বর্তমান আবহাওয়া সরিষার ফলনে তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রধান ফসল বোরো ধান চাষের পূর্বে রবি শস্য হিসেবে সরিষার চাষ খুবই গুরুত্বপূর্ন। কারণ জমিতে সরিষার চাষের পরই বোরো ধান রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করা শুরু হয়। এছাড়াও সরিষা চাষের পর ওই জমির উর্বরতা শক্তি, উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও ওই জমির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। তাই পরবর্তি ফসল উৎপাদনের সহায়ক হিসেবে কাজ করে এই রবি ফসল সরিষা। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২হাজার ৮শত ৫০হেক্টর জমিতে বারি সরিয়া-১৪, ১৫ এবং এই প্রথম নতুন উদ্ভাবিত উন্নত ফলনশীল জাত বারি সরিষা-১৭ চাষ করা হয়েছে। ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে সদর, মিরাট, গোনা, কালিগ্রাম ও পারইল ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ সরিষা চাষীদের সম্পূরক রবি ফসল হিসেবে সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষে সরিষার এই বীজগুলো সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে। তবে বন্যার পানি জমে থাকার কারণে কিছু কিছু নিচু জমি সময় মতো প্রস্তুত করতে না পারায় গত বছরের চেয়ে চলতি বছর সরিষার আবাদ কিছুটা কম হয়েছে।
উপজেলার খট্টেশ্বর রাণীনগর গ্রামের কৃষক শরিফ উদ্দিন বলেন ইতিমধ্যেই চাষকৃত সরিষার বেশির ভাগেরই দানা ও ফুল এসে গেছে। কিন্তু চলমান শৈত প্রবাহ ও ঘনকুয়াশা দীর্ঘদিন থাকলে সরিষার ফলনে কিছুটা ব্যাঘাত হবে। তবে শেষ পর্যন্ত যদি আবহাওয়া সরিষা চাষের অনুক’লে থাকে ও সরিষার বর্তমান বাজার দর অব্যাহত থাকে তাহলে অবশ্যই কৃষকরা লাভবান হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন চলতি মৌসুমে বিঘা প্রতি সরিষার ফলন ৬ থেকে সাড়ে ৬মণ হারে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও সরিষার বাজার দরও অনেক ভালো। সরিষা চাষ পরবর্তি বোরো ধান চাষের জন্য অনেক উপকারী। সরিষা চাষের পর সরিষার গাছ জ্বালানী হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। তাই সব মিলিয়ে একজন সরিষা চাষী বিঘা প্রতি ১০-১১হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন। বর্তমান আবহাওয়া সরিষার তেমন কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কারণ শতকরা ৭০ভাগ সরিষার গাছে দানা এসে গেছে। সবমিলিয়ে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন