নওগাঁর রাণীনগরে পরীক্ষামূলক শীতকালীন বিদেশি সবজি স্কোয়াশ চাষ শুরু হয়েছে। প্রথমবারে ভাল ফলন পেয়ে সফল স্কোয়াশ চাষী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে শিক্ষিত বেকার যুবক সৌরভ খন্দকার।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্কোয়াশ মূলত ইউরোপ দেশের একটি শীতকালীন সবজি। এটি মিষ্টি কুমড়ার মতো সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। বেলে দো’আঁশ মাটিতে স্কোয়াশ চাষ ভাল হয়। প্রতিটি স্কোয়াশ গাছ রোপণের পর থেকে প্রায় আড়াই মাসে ১৪ থেকে ১৫টির মতো ফল ধরে। এটি অনেকটা বাঙ্গির মতো দেখতে ও মিষ্টি কুমড়ার স্বাদে পুষ্টিকর অষ্ট্রেলিয়ান একটি সবজি। স্কোয়াশ উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ শুরু হলেও বাজারে এর চাহিদা ও দাম ভালো হয়েছে। এলাকায় স্কোয়াশ সবজি নতুন হওয়ায় এই চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে ও দেখতে প্রতিদিনই সবজি ক্ষেত পরিদর্শন করার জন্য ভীড় করছেন অনেকেই।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার সিম্বা গ্রামের আবু রায়হান খন্দকারের শিক্ষিত বেকার ছেলে সৌরভ খন্দকার ইউটিউবে স্কোয়াশ চাষের একটি প্রতিবেদন দেখে বগুড়া জেলা শহরের একটি দোকান থেকে ১শত গ্রাম বীজ কিনে বাড়ির খলিয়ানে বোপন করেন। তিনি প্রায় তিন কাঠা জমিতে পরীক্ষা মূলক ভাবে চারা রোপণের প্রায় ৩৫ দিনের মধ্যেই গাছে একাধিক স্কোয়াশ ফল ধরতে শুরু করে। স্কোয়াশের ওজন প্রায় ১ কেজি হতেই স্থানীয় বাজারে বিক্রি শুরু করেন সৌরভ।
বর্তমানে বাজারে স্কোয়াশ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ৩ শতাংশ জমিতে সবজির পরিচর্চা, বীজ ও সার ক্রয়সহ এখন পর্যন্ত সৌরভের প্রায় ৩-৪ চারশত টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে তার স্কোয়াশ ক্ষেতে প্রায় ৬০ থেকে ৭০টি গাছ রয়েছে। নতুন বিদেশী সবজি হিসেবে ফলন ও বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় খুশি সৌরভ।
স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে চাষকৃত স্কোয়াশ সবজিতে রোগ-বালাইয়ের তেমন আক্রমণ না হওয়ায় স্বল্প খরচে ভাল ফলন পাওয়ায় স্থানীয় অন্যান্য চাষীরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন বিদেশী এই সবজি চাষের দিকে। আগামীতে সৌরভ এই সবজি চাষের পরিধি আরো বৃদ্ধি করবেন বলে জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, সৌরভ স্কোয়াশ চাষে একজন সফল ব্যক্তি। অল্প জায়গায় ও কম পরিশ্রমে অধিক লাভজনক একটি সবজি স্কোয়াশ। আমরা এই সবজি চাষে সৌরভকে সার্বক্ষনিক পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে আসছি। আগ্রহী অন্য যে কেউ এই সবজি চাষে আমাদের কাছ থেকে সার্বিক সহযোগিতা পাবেন। এটি যেহেতু শুধুমাত্র শীতকালীন একটি সবজি তাই এর বাজার সব সময় অনেক ভালো থাকবে। আমার আশা এই সবজি চাষে কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন