সালমান ফার্সী: আগামী মধুমাসে আমের ফলন বাড়াতে এখন থেকেই আমের রাজধানী খ্যাত উত্তরের নওগাঁ জেলার পোরশা ও সাপাহার উপজেলায় বাগানে বাগানে আমচাষীরা এখন বাগান পরিচর্যা নিয়ে ব্যাস্ত সময় পাড় করছেন। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে তারা কীটনাশক দোকান থেকে কীটনাশক সংগ্রহ করে অতিরিক্ত মজুরী দিয়ে হলেও তারা আম গাছে কীটনাশক স্প্রে-করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগের দিনে দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছিল আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত। বর্তমানে পর পর কয়েকবছর ধরে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আম বহি:বিশ্বসহ দেশের রাজধানী এবং প্রাায় পতিটি জেলায় সুনামের সাথে স্থান করে নেয়ায় দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ এক নামে এখন সাপাহার উপজেলাকে চিনে ও জানে।
আমের সিজন আসলেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা সাপাহারে এসে ভিড় জমায়। গতবছর আমের মৌসুমে শুধু সাপাহার উপজেলা সদরে অবস্থিত আড়াই শতাধিক আমের আড়ত থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকার আম বিক্রি হয়েছে বলে আম আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শ্রী কার্তিক সাহা জানিয়েছেন।
উপজেলা সদরের আম বাগান মালিক জানান, পিছল ডাঙ্গা গ্রামের দেলোয়ার হোসেন, জবই গ্রামের শাহজাহান আলীসহ একাধীক আমবাগান মালিকরা বলেন, সাপাহার উপজেলার সব জায়গার মাটি আম চাষের উপযোগী। এজন্য এখানকার কৃষককুল ধানের বদলে আমচাষে ঝুঁকে পড়েছেন। তাছাড়া এখানকার জমি অপেক্ষাকৃত উঁচু ও অসমতল। সেচ সংকট প্রবল। বর্তমানে এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকার ধান বিক্রি করতে পারা যায়। পক্ষান্তরে ওই এক বিঘা জমিতে আম চাষ করে কম পক্ষে ১লাখ টাকার আম বিক্রি করা যায়। তফাৎটি আকাশ পাতাল ব্যবধান হওয়ায় এখানকার কৃষকরা এখন আম চাষে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলায় যে লোকের ১০ শতাংশ জমি রয়েছে, সেও তার ওই টুকু জমিতে কয়েকটি আম গাছ লাগিয়েছেন।
বর্তমানে সাপাহারে কোন অচেনা ব্যক্তি আসলে চারিদিকে চোখে পড়বে শুধু আমের বাগান আর বাগান। গেলবছর উপজেলায় ৬ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদন হয়েছিল। এবছর এর পরিধি আরোও ব্যাপকতা লাভ করে এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ২৫০হেক্টর জমিতে উন্নীত হয়েছে বলে উপজেলা কৃষিদপ্তর থেকে জানা গেছে। পর পর কয়েক বছর ধরে এলাকায় আম চাষে এক বিপর্য ঘটে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি ইতোমধ্যেই এই উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা নির্ধারণসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। উপজেলাসহ আশেপাশের আমচাষীরা অচিরেই এখানে একটি অত্যাধুনিক আম সংরক্ষনাগার ও জুস জেলি তৈরীর কারখানা স্থাপনের জন্য সরকার ও দেশের বিত্তবানদের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন